Login Sign Up Subscription Forgot Password
Chunati.com
  • Home
  • Chunati Barta
  • Who's Where
  • Books
  • Writer's Column
  • History
Latest Update
  • ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ৫৩তম সীরাতুন্নবী (স.) মাহফিল
  • চুনতী হযরত শাহ ছাহেব ও তাঁর কীর্তি
  • ঢাকা কেন্দ্রীয় উপকমিটির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত
  • ৫৩তম সীরতুন্নবী (সঃ) মাহফিল উপলক্ষে ঢাকা উপকমিটির প্রস্তুতি সভা
  • ৫৩তম সীরতুন্নবী (সঃ) মাহফিল এর অনুষ্ঠান সূচী
  • ৫৩তম সীরতুন্নবী (সঃ) মাহফিল সুষ্ঠু বাস্তবায়নের চট্টগ্রাম শহরে প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন
  • অগ্রগ্রাহীর ১ যুগ পূর্তি উৎসব উদযাপিত
  • চুনতীর ১৯ দিনব্যাপী সীরাত মাহফিল আমার ভালোবাসা ও আমার আবেগ
  • চুনতিতে মোজাদ্দেদীয়া ত্বরীকার গোড়াপত্তন যার হাতে,তিনি ইমামুত ত্বরীকত হযরত শাহ মাওলানা ফজলুল হক ফারুকী রহ স্মরণে
  • Siratunnabi (SM)
  • Blood Bank
  • Illustrious Person
  • Events & Happening
  • Gardens of Remembrance
  • Sher Khani
  • Send Your Profile
  • Photo Album
  • Video Channel

চুনতি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রী সমিতি


ফাতেমা খাইরুন্নেছা
Date: 07 November 2022

স্মরণ

"স্মরণ"
    _________
   আপনতরে প্রাণের স্পর্শে
     বাবা-মায়ের ছায়াতলে
  নিবিড় নিখাদ মমতায় আদরে
ফেলে আসা সেই শৈশব কৈশোরে
   ফিরে যাই বারে বার॥
ছিলেম বাঁধনহারা; মুক্ত বিহঙ্গ সম
 কখনো মাঠে
    দুরন্ত উন্মাদনায়,হার জিতের বাগবিতণ্ডায়!
আবার কখনো
  অনুযোগ,অভিমানে নির্মল বন্ধুর আড্ডায়।
 ছিলেম মোরা সহযাত্রী,
    এক‌ই ছায়াতলে
  কতো অসাধ্য করেছি সাধন
  অপরের সুখে দুঃখে,
সবার সুচারু পরিকল্পনায়।
ছিলো না ভয়ভীতি,পাছে লোকে কিছু বলে -
 ছিলো একটাই মূল লক্ষ্য
   দশের লাঠি একের বোঝা
 করবো সাধন ইনশাআল্লাহ!
বিপদ- আপদ, ঝড় - ঝঞ্জায়
 শত সহস্র দূর্যোগ বিপন্নতায়,
 ছিলেম মোরা দু্ঃখীর পাশে
   স্বজন হয়ে দৈন্যদশায়॥
মনে পড়ে সেই দুরন্ত শৈশব
 খুঁজে ফিরি রারে বারে
সঞ্চিত স্মৃতির পাতায়।
রেখেছি সযতনে,পরম মমতায়
মনের মণিকোঠায়,
স্মরণে অম্লান সেই সোনালী ক্ষণগুলো।


১/১১/২০২২
* ফাতেমা খাইরুন্নেছা*



মারজিয়া খানম সিদ্দিকা
Date: 07 November 2022

বাংলার বুলবুল

বাংলার বুলবুল ওগো বিদ্রোহী নজরুল,
তুমি মোদের জাতীয় কবি চারদিকে
শোরগোল।
নিয়েছো পরাণ হরি অবিনিশি অগ্নিবীণা,
বিষের বাঁশি সঁপেছিনু যেন বাংলা হতাশ তোমায় বিনা।
রেখেছি তোমায় অন্তরে, নয়ন সম্মুখে,
আত্মা তোমার আকাশে ওড়ে দেহ বাংলার বুকে।
অগ্নিঝরা বাণী দিয়েছো করেছো রাজ ব্রিটিশে,
শিকল পারেনি বাঁধতে তোমার প্রগলভতা
নিমিষে।
যুদ্ধক্ষেত্র থেকে  সৈনিকের বেশে,
ফিরে এলে মাথা উঁচু করে নিজ দেশে।
ভালোবেশে তুমি ঘুরেছো সারাদেশ
কখনো গেয়েছো,গান বক্তব্য আকুল আবেশ।
কখনো তুমি স্নেহ ভরা প্রাণ পিতৃপরমেশ্বর
পুত্র শোকে মুহ্যমান ধরা নয় অবিনশ্বর।
অভাবে অনটনে দুঃখে দিনাতিপাত হতো যেন,
হিন্দু মুসলমান ব্রাহ্মণ তোমার পূজারী হেন।
সহসা উঠল ঊর্ধ্ব গগনে ঝড়ের আভাস,
প্রগাঢ় নীলকৃষ্ণ মেঘমালা সংকুচিত আশপাশ।
ঘনগম্ভীর ডমরু ধ্বনিতে উছলিয়া বায়,
বহ্নিশিখা দামিনী ত্বরিত চঞ্চলা ধায়।
সহসা কণ্ঠে তোমার সুরের মূর্ছনা ছড়ায়ে--
"এলরে প্রলয়ঙ্কর সুন্দর বৈশাখী ঝড় মেঘমালা  জড়ায়ে।"
তোমার ওপর অভিযোগ আরোপিত হল,
রাজবিদ্রোহী কেন মুক্ত এখনো  র'ল!
ছিলে সত্য প্রকাশের যন্ত্রশক্তি অনিরুদ্ধ,
বৃটিশ রাজকার্য ম্লান করে হলে বাকরুদ্ধ।
অমৃত পুত্র হয়ে হাসি গান উচ্ছ্বাসের স্বর্গে
বাস করে নির্যাতনের লোহা মনি কাঞ্চনে গড়বে।
দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য আকণ্ঠ বিষপান,
সেতো শুধু তোমাকেই মানায় বাঙালির অকুণ্ঠ প্রাণ।।



মারজিয়া খানম সিদ্দিকা
Date: 25 October 2022

খোলা চিঠি
খোলা চিঠি
মারজিয়া খানম সিদ্দিকা
২৫/১০/২০২২
চট্টগ্রাম
 
প্রিয় হেমন্ত,
কেমন আছো তুমি?এ সময়ে কোন দৈব দুর্বিপাক ছাড়া, প্রকৃতির উজাড় করা ধন- ধান্যের সুর নিয়ে জানি তুমি খুবই ভালো আছো।তাই তো তোমার এ সরস ভোর কিংবা সোনালি দুপুর দেখার জন্য আমি ধান শালিকের বেশে কিংবা কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরের পাখি হয়ে
ঘুরে বেড়াচ্ছি এই বাংলার পথে প্রান্তরে।
"নিরস কার্তিক জেগে উঠে অঘ্রাণেতে গিয়ে,
প্রকৃতি রয়ে যায়, সয়ে যায় হেমন্তে মিইয়ে।।"
আমি স্তব্ধ, আমি অভিভুত তোমার ভুবনমোহিনী সৌন্দর্যে।পাঁচ রঙা ধানে ছক কাটা মাঠ তোমার কার্তিকের, সেই সব সোনা ঝরা ধান অঘ্রাণের সাত সকালে কাটার ধুম,এরপর উঠছে গোলায়।পুরো গ্রাম বাংলা মেতে উঠেছে নবান্ন উৎসবে।এতো সুর অার এতো গান তোমার প্রাঙ্গণে!!
যেখানে ছিন্ন পাতায় শীতের আগমনী সুর বাজে।ধান কাটা সারা হলে মাঝে পায়ে হাঁটা মেঠো পথ সৃষ্টি। সেই শিশির ভেজা পথ মাড়িয়ে গরুর পাল নিয়ে যায় রাখালের দল।সাঁকো পার হলেই নেমে আসা সবুজের ঢল মন ভাসিয়ে দিতে চায়।শাল - সেগুনের বনানী হাতছানি দিয়ে ডাকে।এখানে পৃথিবী অনন্য।সুন্দর ক্যানভাসে মায়াবী সব সুরের ছোঁয়া যেন নয়ন - মন আচ্ছন্ন করে রাখে।
তাই তো উদার কন্ঠে কবির আহ্বান,
"আমার বাড়ি যাইও ভ্রমর বসতে দিব পিঁড়ে,
জল পান যে করতে দেব শালি ধানের চিড়ে।।"
আবার হয়তো কখনো তোমার আলপনা রাঙানো আঙিনায় আমাকে দেখতে পাবে।তোমার প্রাচুর্যের মাঝে আমি হবো ছন্নছাড়া এক যাযাবর,তোমার অতিথি।সেদিন পরিচ্ছন্ন হৃদয়ে আমাকেও তোমার সুরে সুর মিলাবার সুযোগ দিয়ে ধন্য করো।
 
ইতি---
ধান শালিক।

 



হাবিব খান
Date: 23 October 2022

শীতের বরণডালা

শীতের বরণডালা
###########
সাদা কাশফুল
ভরেছে দু'কূল
      বসিয়েছে শুভ্রতার মেলা
রাতের নাদেখা শিশির
ভিজিয়েছে শরীর
       সোনালী রোদে তাই করছেখেলা
দুরন্ত চঞ্চলতা
মনের ব্যাকুলতা
      সমীরণে সুরের ভেলা -
হেরে অপরূপ
মনভরা রূপ
      ভেসেচলা শুভ্র মেঘমালা -
সকাল দুপুর শেষে
রজনীতে অবশেষে
      জোনাকীর ছুটেচলা -
শরতের বিদায়ে
হেমন্ত এলো নিয়ে
       শীতের বরণডালা



মারজিয়া খানম সিদ্দিকা
Date: 23 October 2022

শেখ রাসেল স্মৃতিকথা
শেখ রাসেল এর জন্মদিন উপলক্ষে ছড়াঃ
কবিতার নামঃ
শেখ রাসেল স্মৃতিকথা
 
ছোট্ট শিশু ছোট্ট সোনা
যে ছিলো বাঙলার বুকে,
বুলেটের গুলি ঝাঁঝরা করে দিলো
সে লুটিয়ে পড়লো ঝুঁকে।
আজ যদি সে থাকতো
আমাদের মাঝে,
সুশোভিত হতো চারপাশ, মুখরিত
হতো, সে ব্যথা বুকে বাজে।
শেখ রাসেল আমাদের প্রাণশক্তি
রাসেল আমাদের সাধনা,
আজ যতো আয়োজনের মধ্যমনি
করি তোমার বন্দনা।
অসময়ে খসে পড়া দূর আকাশের
এক উজ্জ্বল নক্ষত্র তুমি,
বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস শুধু বেরিয়ে
যায়,বাজে বিরহ ধ্বনি।
জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে
ভেবেছিলে কিছু!
এক মুহূর্তের ভাবনার তাড়নায়
হটলে না তবুও পিছু।
সূর্যের দ্যুতি ছড়ানো নীল গগনের
উজ্জ্বলতার ভালোবাসা,
ধ্রুবতারা হয়ে আজীবন দিও
বাঙলায় পথের দিশা।।
 
মারজিয়া খানম সিদ্দিকা
২০/১০/২০২৩

 



মারজিয়া খানম সিদ্দিকা
Date: 06 October 2022

নদীর নাম মধুমতি
মধুমতি নদীর পারে চলেছি আমি একা
সেই নদীটি চিকন চাকন গড়ন যেন বাঁকা।।
একটু ধীরে একটু তীরে চলতে গিয়ে দেখি
জেলেদেরই আসল জীবন বাকীটা সব মেকি।।
কেউ চলেছে মাছটি বয়ে কেউ নিয়েছে মোট
কেউ জানে না দিলে তাদের আছে কত চোট।।
নদীর একূল ও কূল দু কূল ভারী,দু কূলেতেই ফুল,
পাখ- পাখালির আনাগোনায় তটেই শোরগোল।।
ঝোপের ভেতর শেয়াল ডাকে সন্ধ্যা যখন ঘনায়,
হাঁসেরা সব পালিয়ে ছুটে অতর্কিত হানায়।।
বাড়ির বৌ-ঝিরা কলসি কাঁখে পানি নিয়ে ফিরে
সাঁঝ বাতিটি দিতে হবে স্বপ্নের সংসারটিকে ঘিরে।।
এই তো নদী মধুমতি, জীবন সুধা মাখা,
ইচ্ছে হয় আরও ঘুরে ধন্য হই,সাথে সখি -সখা।।

 



মারজিয়া খানম সিদ্দিকা
Date: 26 September 2022

কৈশোর স্মৃতি মন্থন

[২০২০সালে চুনতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ষাট বছর পূর্তি উপলক্ষে আমার লেখা ষাট লাইনের কবিতা  যা চেতনা -২ এ ছাপানো হয়েছে। ]
#কৈশোর স্মৃতি মন্থন
#মারজিয়া খানম সিদ্দিকা

২৬/০৯/২০২২


সবুজের সমারোহে
   দিগন্ত জোড়া নীল আকাশের হাতছানি
       দেখে দেখে এই আমার বেড়ে উঠা,
বাবার স্নেহে মায়ের শাসনে লালিত আমি
         গাছের সাথেই যেন ছিল সখ্যতা।।
কতকাল পরে যেন হঠাৎ করে
          খুঁজে পেলাম হারানো সেই শৈশব
দক্ষিণা বাতাসের শোঁ শোঁ আওয়াজের সাথে
           পাল্লা দিয়ে প্রাণপণে সেকি দৌঁড়।।
কখনও টিফিন ছুটিতে
স্কুলে ফিরতে দেরি হয়ে গেলে
    বুকে বাজত হাতুড়ি পেটা,
তার আগে দফতরি 'খোরশেদ জেঠা'
  ক্লাস বসার ঘন্টা বাজিয়ে
       আমার বাজাত বারটা।।
দাদার লিচু বাগানটা যেন
          কিছুতেই  শেষ হয়না
              কতযে প্রাণপণ ছুট,
'সুব্রত স্যার 'বেত হাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে
       শাসিয়ে যেত 'বলবি না কোন কথা ঝুট'!!
কখনো টিফিনে মাদ্রাসার
            অযুর হাউজে যেতাম পানি খেতে,
ফিরতাম মুখে বৌচি খেলার
            ছড়া  বলতে বলতে।।
'সুভাষ স্যারের'  বাঁকানো হাসি,
             'মধুস্যারের 'মধুর হাসি
আজও চোখ বুজলেই দেখতে
              পাই যেন হাসি রাশি রাশি।।
'আলো' স্যারের অঙ্ক মাথায়
             কিছুতেই ঢুকে না,
তবু ও আমি ' সাইন্স'পড়ব
             দিলাম জুড়ে  কান্না।।
দাঁড়িয়াবান্ধা-গোল্লাছুট-হাডুডু
        খেলে আসতাম ছিঁড়ে
জামাটা, লুকিয়ে রাখতাম
        কাপড়ের ভিড়ে,
মা যেন না পায় টের
    সেদিন যেন 'সাধু বাবা' হয়ে যেতাম ঢের।।
'মহিউদ্দিন 'স্যারের 'কুয়াশা 'এবং
            'কুজ্বটিকা'আজও যেন রহস্য,
'মুশতাক' স্যারের চিবিয়ে ইংরেজি
           বলা নিয়ে সেকি সবার হাস্য।।
ক্লাসে ছিলাম সবার ছোট
        অ্যাসেম্বলিতে আগ,
সুযোগ পেলেই খোঁচা দিতাম
          যেন ঝগড়া লাগে।।
কখনো  মা পাঠাতো দোকান থেকে
           কিছু কিনে আনতে,
ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুট লাগাতাম
            যেন ট্র্যাকে প্রথম হবে হতে।।
নতুন ক্লাসে বই পাওয়ার সাথে সাথেই
             শুরু হয়ে যেত প্রতিযোগিতা,
কার আগে কয়টি কবিতা মুখস্থ হয়,
              ভাই -বোনেরা শিখতাম যেন  নামতা।।
জাফর, হামিদ, হানিফ, লোকমান, মনির,
        মুজিব সবাই বন্ধু স্বজন,
প্রিয় চুনতি বেশি দূরে নয়
               তবু দূর যোজন যোজন।।
ছয় বান্ধবী থাকি চট্টগ্রাম
      দেখা হয় কদাচিৎ,
আজ এই মিলন মেলায়
      সবারই  তো আসা উচিত।
বাবার দেওয়া স্কুল ভূমি
        বাড়ি কেন এত দূরে
এটা নিয়ে  আক্ষেপের শেষ ছিল না,
        এখনো, এতকালও পরে।
স্কুলের লাইব্রেরি থেকে 'নকশীকাঁথার মাঠ'
         এনেছিলাম পড়ব বলে ঘরে,
উইপোকা বই খেয়েছে
        বন্ধুদের সামনে  লজ্জায় গেছি মরে।।
আরও অনেক লেখার ছিল
            শেষ করতে হবে তাই,
সবাই  আমরা ভালো থাকি,মিলেমিশে
কাজ করি,এবারের মতো বিদায়।।



মারজিয়া খানম সিদ্দিকা
Date: 20 September 2022

খোলা চিঠি

খোলা  চিঠি
১৯/০৯/২০২২
চট্টগ্রাম ।


           "ভোর হলো দোর খোল খুকুমণি উঠরে
             ঐ ডাকে জুঁই শাখে ফুল খুকি ছুটরে।।"

প্রিয় ছোট বোন আমার,
আজ অনেক দিন পরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসে তোর কথা, মা'র কথা খুব মনে পড়ছে। বাড়িতে তো আপনার কেউ নেই, কিন্তু  আম্মার হাতে লাগানো বাগানের গাছ গুলো ঠিকই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বোনটি আমার, তোর  কি মনে আছে, আমরা সেই ভোরে ভোরে আব্বার পবিত্র কুরআন শরীফ তেলাওয়াতের আওয়াজ শুনে জেগে উঠতাম। প্রিয় কবি নজরুলের 'খুকি' যেন আমরাই ছিলাম। একদৌড়ে
পৌঁছাতাম শিউলি বিছানো গাছের তলায়। আবার কখনো দাদার বকুল তলায়  কিংবা মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত কাঁঠালি  চাঁপার বাগানে। মা আমাদের খুঁজতে আসার আগেই  আমাদের ফুল  কুড়ানো শেষ।  মা বসাতেন আরবি  পড়াতে। এরপর সকালের নাশতা।


তারপর আবার দু'বোন ফুল নিয়ে  বসতাম  মালা গাঁথা প্রতিযোগীতায়। কখনো  সুতোয় আবার কখনো  বিনি সুতোয়।আহা!ভোরের ফোঁটা  ফুল গুলো যেন  আমাদেরই অন্তরাত্মা ছিল।
তোর  কি কখনো মনে পড়ে, প্রচণ্ড গরমের সময় আমাদের স্কুলের কার্যক্রম কিছু দিনের জন্য মর্নিং শিফটে  চলতো।তখন  কাঁঠালি চাঁপা ফুলের ভরা মৌসুম থাকতো।উফফ,  এ সুগন্ধিযুক্ত ফুল আমরা স্কুলে  যাওয়ার সময় তুলে নিয়ে যেতাম আর যার যার ক্লাসে স্যারের টেবিলে  রেখে দিতাম।ফুলের সৌরভে যেন স্যারদেরও মন প্রাণ অন্তর ভালো হয়ে যেত। আহা কোথায় গেল সে সব সোনা ঝরা ভোরগুলো!!
দুই বোন প্রাইমারিতে পড়তাম,খেলাধূলা  করতাম কিন্তু  আমাদের  মন পড়ে থাকত যেন আম্মার ফুল  বাগানে।  হরেক রকমের  ফুলগাছ।কী ছিল না!মস্ত বাগানের কোণায় কোণায় জারুল,বাবলা বকুল আর চাঁপা ফুলের গাছ।একটু সামনে কৃষ্ণচূড়া আর শিমুল। আর  বাগানের ফেন্সের ভেতর মাঝে গোল চত্বরে এক বড় গোলাপ ঝাড় যাতে সারা বছর  লাল সাদা দুই ধরনের গোলাপ  ফুল ফুটে থাকত। বেলি, চামেলি , হাসনা হেনা,টগর, আর সারা বছর  ফুটে থাকা নয়ন তারা।বাগানের বেড়া জড়িয়ে জুঁই র লতা,সিজনাল লিলি, হলুদ অলকানন্দা বাগানের  সৌন্দর্য  বহুলাংশে  বাড়িয়ে দিত।


সব সময় আম্মা  নিজের হাতে বাগানের কাজ করতেন। আবার কখনো কখনো  আমাদের সকলকে  আব্বা সহ কাজে লাগাতেন।আম্মার আবার ফলের গাছ ও ছিল  প্রচুর। পেয়ারা,  আম, কাঁঠালের ভরপুর থাকত বাড়ি
আর সকলের  জন্য  ছিল  অবারিত খোলা  দ্বার  আম্মার।অন্যান্য ফলের মধ্যে ছিল  আমলকি,জলপাই, জাম্বুরা  আরও কত কি।তুই  কোন  ফল খেতে  চাইতিনা।সে জন্য  আম্মা  তোর  ওপর  খুব  বিরক্ত  হতেন।
আচ্ছা, তোদের ওখানে ও তো  প্রচুর ফুল আছে  কত সুন্দর,  কত মনোলোভা। আমাদের গন্ধ রাজ কিংবা শিউলি বেলির মত এমন মিষ্টি সুবাসের ফুল  কি আছে যা তোকে সেই ছোট্ট বেলায় হারিয়ে নিয়ে  যায়!!
একবার মনে আছে,  নানার বাড়িতে আম্মার সাথে বেড়াতে গিয়েছিলাম কিছু দিনের জন্য। ওমা,দেখি অন্দরমহলের পুকুর  ঘাটের কাছে বিশাল এক বেলি ফুলের ঝাড়।এতবড় বেলির ঝাড় আজ পর্যন্ত ও কোথাও দেখলাম না।নীচ থেকে  উপরে সমস্ত গাছটা ই


যেন ফুলে ফুলে সয়লাব। গাছের  নীচে ও যেন ফুল বিছিয়ে রাখা। ভোরে আমরা দু বোন  ছুটতাম পুকুর ঘাটের কাছে ফুল গাছ তলায়,যেন  কেউ  মাড়িয়ে দেবার আগে আমরা ফুল কুড়িয়ে নিতাম।মা আমাদের খুঁজে আসতেন, ততক্ষণে আমাদের কোঁচড় ভরে যেত
সাদা সাদা সুবাসিত বেলি ফুলে।
"যবে ঝরা পাতা ওড়ে
কেন ভুলে যাওয়া  কথা মনে  পড়ে! "
আজ ও মর্নিং ওয়াকে গেলে আাসার সময় দুটো  ঝরা শেফালি,কিংবা কাঠগোলাপ কিংবা গন্ধরাজ হয়তো পাই কিন্তু সেখানে সে শিউলি বিছানো প্রাঙ্গণ, সে নানার বাড়ির বেলি তলা,কিছু ই মিলছে না।চারপাশে শুধু আপনহারা হাহাকার।
"তোমার ভূবনে ফুলের মেলা আমি কাঁদি সাহারায়,,,,, "
হয়তো একটু বেশি  স্মৃতি কাতর হয়ে পড়লাম। প্রবাসী জীবন কেমন লাগছে?

তোর  চিঠি র  অপেক্ষায় ---
বুবু।



হাবিব খান
Date: 18 September 2022

অগোচরে

অগোচরে
######
জোনাকীদের ভেসেচরা
সেদিনো ছিল
দিগ্বিদিক ঘুরাঘুরি
ঝিঁঝিঁদের ডাকাডাকি
এখন যারা আছে
তারাইতো উত্তরসূরি --

ভাবের পরশলাগানো মধুক্ষণ
আবার যদি ফিরে
জোছনা ছড়ানো রাতে
মেঘ আর চাঁদনীর সাথে
ধীরপদে হেঁটেচলা
হাতধরা হাতে --

সেই চাঁদ সেই রাত
জোনাকী এখনো ওড়ে
আবেগের খোঁজে
কখন যে পড়িল চাপা
ভালোলাগা সব
কালের অগোচরে --



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 14 September 2022

প্রবঞ্চক-ঠগী পর্ব-১

প্রবঞ্চক-ঠগী  পর্ব-১    
(প্রথম প্রকাশ চুনতি ডট কম-২০১২ খৃস্টাব্দ)
কোড: বাসন মেজে আন-
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
এক দশক আগে ঠগী' নামের বিষ্ময়কর,বিরল একটা বই আমার হাতে এসেছিল যেখানে ঠগ আমির আলী' নিজেই নিজের অপরাধের কথা অকপটে স্বীকার করেছে- কেবলমাত্র সম্পদ আত্মসাত,লুঠের জন্য নিষ্টুরভাবে মানুষ খুনকে সে তার পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছে,তাও সে একা হলে একটা কথা ছিল কিন্তু এর পিছনে ছিল মানুষরুপী বিশাল একটা হায়নার দল-গোষ্টী-ঠগী।

ঠগী শব্দটি সংস্কৃত ঠগ শব্দ থেকে এসেছে।য়ার অর্থ ঠক বা প্রতারক বা প্রবঞ্চক বা ধূর্ত।উওর প্রদেশের মানুষরা যাদের নামকরণ করেছিল-ফাসিঁগর হিসাবে।

যদিও ঠগীদের উতপত্তি অস্পষ্ট তবুও ধারণা করা হয়- সতেরো এবং আঠারো শতকে বিশেষ করে কোম্পানী শাসনের প্রতিষ্ঠা লগ্নে ঠগীদের উদ্ভব ঘটে।

ঠগীরা নওয়াবী আমলের শেষ ও ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্টার ক্রান্তিলগ্নে ক্রমানয়ে পুরা ভারতে তাদের কার্যপরিধি বিস্তার করেছিলো।

গুপ্তচর বাহিনীর মাধ্যমে পর্যাপ্ত তথ্য নিয়ে নিজেদের মাঝে শর্লা পরামর্শ শেষে ঠগীরা শিকারের পিছু নেবার পূর্বে নিজেদের দলকে ক'ভাগে বিভক্ত করে নিতো।
তীর্থ যাত্রী বা অন্য যে কোন কাফেলার সাথে হরেক বেশ চাতুরীতে ঠগীরা মিশে যেতো এর পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে কাফেলার প্রতিটি সদস্যকে বিনা রক্তপাতে গলায় কেবল রুমাল কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করতো।

হলুদ রঙের সেই রুমালকে তাদের ভাষায় বলা হতো- পেলহু বা সিকা!

একজন শিকারকে ৩ জন ঠগী মিলে হত্যা করতো, কোনভাবে  শিকার ফসকে গেলেও অদূরে ওতপেতে থাকা আরেকদল ঠগি তাদের খুন করতো!

ঠগীরা মুসলিম,হিন্দু,শিখ হলেও তারা সবাই ছিল হিন্দু দেবী কালীর ভক্ত। তাই প্রতি অভিযানের আগে পরে বাতাসে গুড় উড়িয়ে তারা জয় মা ভবানীর জয় বলতো।এমনকি, হত্যাকান্ডের পর ঐ সব কবরের উপর বসেই দেবী বন্দনা শুরু করে দিতো-  জয় মা ভবানীর জয়!

-----------------------------------
ইন্টারনেটের বদৌলতে পরবর্তীতে এই হিংস্র ঠগীদের কার্যকলাপ আর বিশেষ আরো কিছু কোড সম্পর্কে ধারণা লাভ করেছি, যা তারা শিকারের সুবিধার জন্য
দায়িত্ব ও পদে বিন্যাস করে নিয়েছিলো:
১. বাসন মেজে আন- শিকার যাত্রা।
২. ঝিরণী- হত্যার প্রস্তুতি।
৩.তামাকুলাও- হত্যার আদেশ।
৪. সোথারা- সম্ভাব্য শিকার চিহ্নিত করা।
৫.তিলহাই- আইনের লোকের উপর নজর
রাখার দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তি।
৬. নিসার- নিরাপদ জায়গা দেখে যারা
তাবু গড়তো।
৭. বিয়াল- কবর খননকারী।
৮. চামোচি- শিকারকে যে ধরে রাখতো।
৯. চুমোসিয়া- শিকার যাতে বাঁধা দিতে না পারে সেই দায়িত্ব যার উপর থাকতো।
১০. চুমিয়া- শিকারকে যে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেবে তার ছদ্মনাম।
১১.ভোজারা- মৃত দেহগুলো যারা কবরে নিয়ে যাবে।
১২. কুথাওয়াজারা- তাদের দায়িত্ব ছিল
দেহগুলোর হাটুঁ ভেঙে থুতনির সংগে ভাজঁ করে কবর দেওয়া।
১৩. ফুরকদেনা- মৃতদেহের পাহারাদার

সর্বশেষ হত্যাকান্ডের জায়গাটা সাফসুতরো করার দায়িত্ব ছিল- ফুরজানাদের উপর!

চলবে-



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 08 September 2022

এতো সুখ সইবো কেমন করে!
এতো সুখ সইবো কেমন করে!
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আত্নজীবন কথা লেখার মতো সমৃদ্ধ জীবনী কিংবা দুঃসাহস কোনটাই আমার নেই। তবু ওপারের লেখক যাদের বই প্রচ্ছদ মলাট দেখে বড় হয়েছি, তারুণ্যের দুরন্ত প্রাণবন্ত দিনগুলো পার করেছি, কোলকাতার কল্পশ্রী তে মুগ্ধ হয়েছি আরবার,আজ অকপটে তাদের ঋণের কথা স্বীকার করছি।
শরৎচন্দ্রের ( ১৮৭৬-১৯৩৮) অন্য ধাঁচের লেখায় উদ্দীপ্ত হয়েছি বারবার। স্ব-যত্নে সেই ১৯৮২ তেই গুছিয়ে রেখেছি লেখকের উল্লেখযোগ্য কিছু বই।
-সেগুন কাঠের আলমিরা থেকে এখনো ঐতিহ্য উপচায়
দেবদাস, চন্দ্রনাথ,,চরিত্রহীনরা যেন কিছু বলতে চায়!
.............................................................
ডাঃ নীহার রঞ্জন গুপ্তের (১৯১৯-১৯৮১) গোয়েন্দা উপন্যাস কালোভ্রমর প্রথম আমার হাতে আসে ৮০ সালের দিকে। দূর্ভাগ্য,সিরিয়ালগুলো সংগ্রহ করতে পারিনি, তবে লেখকের অন্যান্য বই- কলংকিনী কঙ্কাবতী,ক্লান্ত বিহংগ এবং বেশ কিছু উপন্যাস পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে।
.........................................................
বিমল মিত্রের ( ১৯১২-১৯৯১) আসামী হাজির,এই মরদেহ,সাহেব বিবি গোলাম, কড়ি দিয়ে কিনলাম, নিঃসন্দেহে আমার পড়া বইয়ের মধ্যে অন্যতম। লেখকের লেখনির সাথে আমার প্রথম পরিচয় সম্ভবত ৭৮ সালে।
....................................................
নিমাই ভট্টাচার্য্যঃ (জন্ম,মৃত্যু সন আমার জানা নেই) লেখকের পত্রোপন্যাস মেমসাহেব' আমার মায়ের খুব প্রিয় ছিলো।
তেমনি সমরেশ মজুমদার থেকে শীর্ষেন্দুর বেশ কিছু বই আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। কিন্ত বাসা বদল, একটু পড়ে দেখে দেবো, জাতীয় উৎপাতে অধিকাংশ বই-ই আমার সংগ্রহ থেকে উধাও হয়েছে।( মন্তব্যের জন্য লজ্জিত)
....................................................
সেবা প্রকাশনীর কর্ণধার, লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন
( ১৯৩৬- ১৯ জানুয়ারী,২০২২)
- যিনি এদেশের মানুষকে নতুন এক গদ্যে অভ্যস্থ করেছেন।
গুণী' এ লেখকের কথা না লিখলে মনে হয় আমার গোটা স্মৃতিচারণ মিথ্যা হয়ে যাবে। তারুণ্যের দুরন্ত সে দিনে যেমন কুয়াশা সিরিজের কুয়াশা,শহীদের চোর-পুলিশ পুলিশ খেলা' কামালের বিশাল বাইকের ভয়ংকর গর্জন আর মহুয়া ভাবীর মমতা আমায় যাদু করেছিলো' ঠিক তেমনি ধ্বংস পাহাড়ের রেবেকা যখন বুলেট বিদ্ধ হয়ে মাসুদ রানার (এম.আর নাইন) কোলে ঢলে পড়লো তখন আমার দু'চোখ স্রেফ জলে ভরে উঠছিলো।
ভারত নাট্যম,স্বর্ণমৃগ, মত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা,দুর্গম দুর্গ কিংবা শত্রু ভয়ংকর- কালপ্রিট ওয়ালী আহম্মদকে ঠাট্টা করে মেজর বলেছিলো - ওয়ালী আহম্মদ আমি তোমার মাসুক নানা বলছি' বাম হাতটা উপরে তুলে ডান হাত দিয়ে তোমার টেকো মাথাটা একটু চুলকাওতো।
নীল ছবিতে' জীবন মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পাকিস্তানী কর্নেল ফারুকের সাথে ঠাট্টা করা কেবলমাত্র বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্ট এর মেজর (সাবেক) মাসুদ রানার পক্ষেই সম্ভব! পালাবে কোথায়ে রাশিয়ান সন্ত্রাসী গুস্তাফ তাতাভস্কি' ব্লেড হাতে রেডি- যে রানা একদিন তাকে পুরুষত্বহীন করেছিলো, আজ সেও রানার একই অবস্থা করবে'-অত:পর শুধু টান টান উত্তেজনা।
বিষনিশ্বাসে একদিকে খল-নায়িকা শিবানীর দূর্দান্ত ফাইট অন্যদিকে ড্রাইভ দিয়েছে রানা....। তারপর আনমনে শিস বাজাতে বাজাতে হাত ধরে বসলো সেই মেজাজী রূপার (কর্ণেলের ভাইঝি)।
রানা একজন স্পাই' দেশ বিদেশে ঘুরে বিভিন্ন মিশনে- অপূর্ব সুন্দর তার হৃদয়, দেশপ্রেম। জেমস ভন্ডের ভক্ত কাজীদা' থ্রীলার সিরিজে সত্যি আজ অবধি অতুলনীয় একজন।
অন্যদিকে, সেবা রহস্য সিরিজের রহস্যময়ীর' কথা উল্লেখ না করলেই নয়।
অপূর্ব সুন্দরী কিন্তু খুনী আসমা সিরাজীর (তপতী).ছদ্মনামে ভয়াল রূপ এবং শেষ পর্যন্ত চকরিয়ার গভীর পাহাড়ের এক পরিত্যক্ত কুঁটিরে হতভাগ্য আবেদকে ফাঁসিয়ে দেয়া পর্যন্ত নিখুঁত ছলনা- আমায় আজীবন কাজীদা'র ভক্ত করে রাখবে।
সেবা / প্রজাপতি প্রকাশনীর অনেক মজার মজার বইয়ের কথা-রাত ফুরালেও শেষ হবার নয়'।
লেখক - কাজী আনোয়ার হোসেন।
পিতা- কাজী মোতাহের হোসেন, বিজ্ঞানী, লেখক।
ভাই- কাজী মাহবুব হোসেন, এদেশে বাংলায় ওয়েষ্টার্ণ কাহিনীর জনক।
বোন- জোবেদা মির্জা, সানজিদা খাতুন, ফাহমিদা খাতুন এবং মাহমুদা খাতুন।
স্ত্রী- ফরিদা ইয়াসমীন (নিলুফার ইয়াসমীন, সাবিনা ইয়াসমীনদের বড় বোন)
পুত্রদ্বয়- কাজী মায়নুর হোসেন, কাজী শাহনুর হোসেন।
কাজীদার শিক্ষাগত যোগ্যতা-বাংলায় এম.এ।
 
সংক্ষেপিত।

 



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 06 September 2022

পালক পালক সময়

পালক পালক সময়
 |||||||||||||||||||||||||||||||||
 আজ সকাল থেকে আমার মনটা খুব খারাপ।
না,রাশেদের সাথে আমার ঝগড়া বা মনোমালিন্য কিছুই হয়নি  বরং এক সময়ের সহপাঠী রাশেদ এখন আমার বাবা -মায়ের ও খুব পছন্দের। রাশেদ ব্যাংকার, বনেদী পরিবারের সন্তান,এমন জামাই ভাগ্য ক'জনের হয়।
সেদিন মা তো সরাসরি প্রশ্ন করলেন -
 -ঃ আচ্ছা লুনা রাশেদ ছেলেটা কেমন?
ঃ  মানে,তুমি কি জানতে চাও?
ঃ এভাবে কথা বলছিস কেন ?
ঃ কিভাবে কথা বলছি?
ঃ  দেখো মেয়ের কান্ড,ভালোবাসা মনে মনে অথচ লাজ মুখে।
ঃ  মা,কে বলেছে তোমায় এসব ?
ঃ  কে বলবে আবার, আমি কি কিছুই বুঝি না?
ঃ .অন্য কথা কিছু থাকলে বলো।
ঃ না, অন্য কথা আর কি বলবো?
ঃ কিন্ত আমার তো মনে হয়,তুমি আরো কিছু বলবে?
ঃ যদি বলি রাশেদকে আমরা জামাই বানাবো, তুই রাজি?
ঃ  জ্বী না মা,সে আশা পূরণ হবে না। কারণ, রাশেদ তোমার মেয়ে কে বিয়ে করবে না।
ঃ  রাশেদ বলেছে ?
ঃ  ইয়েস মাদার।
ঃ  হারামি ছেলে তো।
ঃ দেখো মা, পরের ছেলেকে গালিগালাজ করো না।
ঃ  পরের ছেলে না, আমাদের মেয়ের জামাই।
ঃ  তুমি কনফার্ম ?
ঃ  দুইশত পার্সেন্ট।
ঃ কিভাবে এত কনফার্ম হলে ?
ঃ তুই আমার মেয়ে বলে।
ঃ  মা, তুমি এত ভালো কেন?
___________________________________
রাশেদের এখন উনত্রিশ চলছে। হালকা পাতলা শরীর,অতিরিক্ত উচ্চতার কারণে একটু কুজো হয়ে হাঁটলে ও চেহারাটা তার বেশ মেনলি, ভরাট কণ্ঠস্বর। মজার বিষয় হলো -রাশেদের শ্যামল অবয়বের কোথায় যেন একটা চাপা বন্যতা আছে,যা দেখে যেকোনো মেয়েই তার প্রতি দূর্বল হয়ে পরে।
দুইভাই বোনের মধ্যে রাশেদ বড়। বোন'টা এবার ইন্টারমিডিয়েট দেবে।বাবা সরকারী চাকুরী করতেন,গত এক বছর আগে অবসর নিয়েছেন। মা তার স্বভাব সুলভ মমতা দিয়ে এ সংসারটা আগলে রেখেছেন। এই পরিবারে সামান্য অভাব অনটন থাকলেও পারস্পরিক মায়ার কোনো ঘাটতি হয়নি কখনো।
রাশেদের বাবা মোবারক মিয়া উনার সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে চান্দগাঁও এর এক কিলোমিটার নামে একটা হাফ গ্রাম,হাফ শহরে দু'তলা বাড়ির কাজে হাত দিয়েছেন।
মোবারক মিয়ার ধারণা চলতি বছর ডিসেম্বরের আগে বাড়ির কাজ শেষ হবে কিন্তু  ঘরের কাজ শেষ হবার আগেই তিনি প্রধান ফটকে পিতলের হরফে লিখেছেন - আফসানা ভিলা'।
স্ত্রীর আফসানা নামটা মনে হয় মোবারক মিয়ার খুব পছন্দের। ক' দিন আগে একটা স্টিলের আলমিরা বানিয়েছেন, আলমিরার উপরে লেখা -আফসানা।
___________________________________
.লুবনার সাইলেন্ট মুডে রাখা মোবাইল ফোন ডিসপ্লেতে অচিন নম্বর ০১৫৫৩.......... নিশ্চয় রাশেদ,ওর স্বভাব এমনি- প্রতিবার মোবাইল ফোন হারাবে তারপর সেট, সীম চেঞ্জ!
ঃ হ্যালো' লুনা  আমি রাশেদ। নতুন নম্বরটা নোট করে এখনই রেডি হয়ে বাসার সামনে এসো.আমি দশ মিনিটের মধ্যে আসছি।
রাশেদ মানুষটা বড্ড অস্থির, বিষয়টা লুবনা বেশ উপভোগ করে। লুবনার এমনি প্রেমিক দরকার- মুহুর্তে আমার আমি কে দখল করবে আরবার বারবার।
এক্ষণি রেডি হতে হবে। কি পরবো, শাড়ি পরলে কেমন হয়?
 ....................................................
বেগুনি কালারের মণিপুরী শাড়ি। ম্যাচ করা ব্লাউজ টিপ,পিঙ্ক কালার লিপস্টিক,  মোটা বেগুনি হলুদ চুড়ি। হাই হিলের সাদা সেন্ডেল,গলায় লম্বা পুতির মালা।
লেয়ার কাট চুল সামনে পেছনে উড়ুউড়ু বাতাসে। আরবের উম্মে কুলসুম’ রাশেদের ভীষণ পছন্দের পারফিউম।
শ্যামলা মেয়ে লুবণা- দেখো তোমায় দেখে প্রেমিক আজ কি বলে -আয়না’ তুমি ও দেখছি মায়ের মতো শুরু করছো।
বাহিরে মোটর গাড়ির অস্থির হর্ন।
ঃ এই লুনা' রাশেদ কে ভিতরে ডাক।
ঃ মা,আমি পারব না, ডাকতে হলে তুমি ডাকো।
ল্যান্ড ফোনের কর্কশ রিং। ক্রিং ক্রিং ক্রিং।
ঃহ্যালো' লুনা মোবাইল ফোন রিসিভ করছোনা, কেন ?
ঃ তোমাকে মা ভিতরে আসতে বলছেন।
ঃ সেদিন একেবারে আসবো।
ঃ কোন দিন?
ঃ জানিনা।
ঃ না জানলে কি ভাবে হবে ?
ঃ এখন রাখো ও সব, আমি গাড়িতে বসে আছি।
ঃ অভদ্র হলে যা হয়।
ঃ ঠিক তাই- লুবনা আকতার।আকতার না নাহার?
______________________________________________
করোলা X- ১৫০০ সি, সি,  পিয়াজ কালার। ড্রাইভিং সিটে মজবুত এক জোড়া হাত। যুবকের মুখে বিরক্তির ছাপ থাকলে ও মনে হচ্ছে সে বেশ মুডে আছে।
-রাগিণী খেলিছে আজি তার প্রদীপ্ত হিয়ায় আমি যে ভালবাসি শুধু তোমায়।'
আচ্ছা কি আছে পাশে বসা এই যুবকের মনে,আমি কি চিনি তারে, কিনবা সে আমায়? তবে কেন এখনো ডাকেনা নাম ধরে-লুবনা আকতার।
ঃ এই রাশেদ কিছু বলবে না?
ঃ না।
ঃ না,কেন?
ঃ কারণ তোমার বাছাই করা শব্দের কাছে সব সময় কেবল পরাজিত হয়েছি। আজ আর নুতন করে হারতে চাই না।
ঃ জিততে ও তো পারো?
ঃ বাদ দাও ওসব কথা মালা -শুনামুখী সুই দিয়ে নকশী কাঁথা।
পরের একটা সেকেন্ডে কি যে হলো দুজনার 'এবং একে অপরের বুকে'।মেটাডোর’ লেপ্টে গেছে 'রাশেদের গালে মুখে।
প্লেয়ার বেয়ে নামছে চিত্র সিং' মধু -দু'টি মন আজ নেই দু' জনার। ..
টয়োটা তখন শহর পেছনে রেখে গ্রামের পথে।
শেষ।।



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 06 September 2022

রোমন্থন এবঙ জীবন আমার বোন

রোমন্থন  এবঙ  জীবন আমার বোন'
 - চুনতি ডট কম- ২০১২ খৃষ্টাব্দ
-কেন লিখো, কেনই বা ধ্বংস করো, তুমি কি ?
 ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
-হতাশ হয়ে ভালবাসার তরুণকে উদ্দেশ্য করে তরুণী লিখেছে - তোমাকে তো পেলাম না  তাই তোমার বিছানাটা এলোমেলো করে দিলাম।
 |||||||||||||||||||

সময়কাল ১৯৮৩ ইংরেজি সাল।
আমার মেট্রিকের বছর।
আন্দরকিল্লাহ,চট্রগ্রাম।
পাঠক বন্ধু’ লাইব্রেরী। ধূঁলোভর্তি সেলফের মাঝামাঝিতে মাঝারি শরীর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে’ মেরুদন্ড বেয়ে নেমেছে রকমারি হরফ’ - জীবন আমার বোন'।
লাইব্রেরী বাবু’র খিটখিটে মেজাজ, আপাদমস্তক পরখ করে আমায়। ক্রেতা না পাঠক? যা হোক বর্তমানে বিক্রয়কমীদের আচার আচরণ নমনীয় বিনয়ী হয়েছে। কারণ, ডিজিটাল সভ্যতার যুগ বলে কথা।
লেখক মাহমুদুল হক (ত্রিশ বছর আগের কথা’ পুরো নাম ভূলও হতে পারে) ঝরঝরে গদ্যে লিখেছেন আর একজন তরুণ যুবককে সারাজীবনের জন্য উনার অনুরক্ত করে রেখেছেন।
উঠতি তরুণীর প্রেম জীবনকে আবর্তিত করেছে। কোথাও চিরকুটে এসেছে- কেন লিখো’ কেনই বা ধ্বংস করো’ তুমি কি?
কখনো বা তরুণী হতাশ হয়ে উম্মাদিনীর মতো আচরণ করছে। ভালবাসার তরুণকে উদ্দেশ্য করে লিখেছে - তোমাকে তো পেলাম না’ তাই তোমার বিছানাটা এলোমেলো করে দিলাম। আর জীবন পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে লেখক জীবন ঘনিষ্ট হয়েছেন, উঠে এসেছে একান্ততা’ কঠিন জীবনের খুঁটিনাটি।
অন্যদিকে ৭৫ পরবর্তীতে দস্যু বনহুরের স্ত্রী প্রেম’ সমাজ কাতরতা’ লেখিকা রোমেনা আফাজের প্রতি কৌতুহল সৃষ্টি করেছিলো। তেমনি ৮২তে হেলাল হাফিজের ফেরিঅলা আমাকে কষ্টের রকম ফের শিখিয়েছে। অবশ্যই আমি বিশ্বাস করি-
এবঙ দূঃখের শেষ আছে,
শেষ নেই শুধু কষ্টের...
- মিজান বাবু।

|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
হিজ মাষ্টার্স ভয়েজ
     এবঙ
মিষ্টি সূরের হাঁড়ি-

[][][][][][][][][][][][][][][][][]

কৈশোরের মিষ্টি সূরেলা দিনগুলোর কথা মনে পড়লে আজো আমি পূলকিত হই। সময়কাল সম্ভবত ১৯৭৪ - ৭৬ ইংরেজী। আমার দাদী জাহেদা খাতুন তখন উনার নিজ বাড়িতে থাকতেন। এখানে একটা কথা না বললে আমার এ স্মৃতি চারণ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে, তা হচ্ছে- জনাবা জাহেদা খাতুন অর্পূব সুন্দরী ছিলেন। শুধু রূপ নয় উন্নত পরিমিত রুচি আর গুনে পরিপূর্ণ ছিলেন তিনি। ১৪ সন্তানের মা হয়েও উনার চমৎকার ছিপছিপে শরীর ছিলো। ঠিক যেন কল্পনার পরী।

সংস্কৃতিবান দাদী প্রায় প্রতি সন্ধ্যা বিকালে উনার কলের গান* খুলে বসতেন। বাতাসে শিস কেটে যেতো কানন দেবীর* পরাণী কন্ঠ- ছন্দে ছন্দে দুলি আনন্দে আমি বন ফুল গো...। বা, আঙ্গুর বালার* গাওয়া বিখ্যাত সব নজরুল গীতি* এতো জল ও কাজল চোখে পাষাণী... ।
মুগ্ধ হয়ে দেখতাম পিনের ছোঁয়ায় বড় রুটির মতো রেকর্ডটি কিভাবে কেঁপে কেঁপে নিঁখুত মধুর সুর ছড়ায়। তখনো পর্যন্ত রেকর্ড কভারে কুমারী জ্যোতিকা রায়* দের ছবিতে সন্তুষ্ট ছিলাম আমি। রেকর্ডের ধরণ অর্থাৎ আর পি এম সম্পর্কে কিছুই জানতাম না।
তখন আমার পছন্দের র্শীষে ছিলেন - কমলা ঝরিয়া (আসল নাম- কমলা সিন্হা) উনার গাওয়া বিখ্যাত বাংলা ক্লাসিক্যাল গান - দেখা হলে এই অবেলায়, সখি তাকে বলবো কি বল?
-কে এল সায়গল (কুন্দলাল সায়গল) :
[][][][][][][]
উনার বিখ্যাত বাংলা ক্লাসিক্যাল গান - এই পেয়েছি অনল জ্বালা .
-সুধীরলাল চক্রবর্তী :
 [][][][][][][]
উনার বিখ্যাত ১০টি গানের মধ্যে ৬টি গান আমার কাছে অতি প্রিয় :
মধুর আমার মায়ের হাসি
খেলাঘর মোর ভেঙ্গে গেছে হায়
কেন ডাকো প্রিয়া প্রিয়া
আঁখি যদি ভোলে তারে মন কেন ভোলে না
এই দুটি নয়ন পলকে হারায় যারে
প্রথম দিনের প্রথম পরিচয়
-আঙ্গুর বালা দেবী

১৯৩০ সালে তিনিই প্রথম নজরুল গীতির প্রশিক্ষক নিযুক্ত হয়েছিলেন। এই শিল্পীর
 গাওয়া বিখ্যাত কিছু নজরুল গীতির মধ্যে নিচের ০৭ টি অন্যতম প্রধান বলে বিবেচনা করা হয় :

১) আমার যাবার সময় হলো
২) আসিলে এ ভাঙ্গা ঘরে
৩) বিদায় সন্ধ্যা আসিলে
৪) গানগুলি মোর
৫) নহে নহে প্রিয়
৬) নিশি ভোর হলো
৭) এতো জল ও কাজল চোখে
||||||||||||||||||||
শিল্পী বেগম আকতার - গজল, দাদরা, ঠুমরি
[][][][][][][]

শিল্পীর ০৩টি ক্লাসিক্যাল গানের কথা উল্লেখ না করে পারছি না।
১) চুপি চুপি চলে না গিয়ে
২) এ মৌসুমে পরদেশে যেতে তোমায় দেবো না
৩) জোছনা করেছে আড়ি, আসে না আমার বাড়ি
 তেমনি *রবীণ মজুমদার* (আমার আধার ঘরের প্রদীপ)
*অখিল বন্ধু ঘোষ* (জাগো জাগো প্রিয় রজনী পোহায়)
*সুবীর সেন* (এতো সুর আর এতো গান)
*শচীন দেব বর্মন* (বিরহ বড় ভালো লাগে, তুমি এসেছিলে পরশু)
*শ্যামল মিত্র* (আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে)
*লতা* (কেন গেলে পরবাসে বল বধূযা?)
* জগন্ময় মিত্র* (স্বপ্ন সুরভী মাখা দূলর্ভ রাত্রি,
-তুমি আজ কত দূরে,
-ভালোবাসা মোরে ভিখারী করেছে,
-আমি দূরন্ত বৈশাখী ঝড়,
-তুমি কি এখন দেখিছো স্বপন,
-আমি ভোরের হাওয়ায় দেখেছি তোমারে...

দাদীর সংগ্রহে প্রচুর রেকর্ড ছিলো (৪৫ আরপিএম, ৭৮ আরপিএম এলপি ইপি) নাটকের মধ্যে নবাব সিরাজ-উদ-দৌল্লা এবং দেবী সুলতানা নাটকের কথা মনে পড়ে আজো।
পরবর্তীতে, ফুফাতো ভাই মিয়া মোহাম্মদ হেলাল ভাই এর সরাসরি সহযোগিতায় বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর দূলর্ভ রেকর্ড সংগ্রহ করেছি, সাথে একটি  কলের গানও। আজ হেলাল ভাই বেঁচে থাকলে আরো অনেক রসালো তথ্য দিতে পারতাম।.
\/\/\/\/



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 06 September 2022

নর্তকী যখন জলপরী ! রং মহলের রঙ ঢং’-

নর্তকী  যখন  জলপরী !                                                
রং মহলের রঙ ঢং’-  
|||||||||||||||||||||||||||||

চুনতি শাহ সাহেব গেইটে টানা এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে যখন চট্রগ্রাম অভিমুখী বাসটা পেলাম তখন নিজেকে বেশ সৌভাগ্যবান বলে মনে হচ্ছিল।

বিকালের পড়ন্ত রোদ গাড়ির সামনের বিশাল গ্লাসে এসে অন্য এক মায়ার সৃষ্টি করেছে।নাকি দীর্ঘ অপেক্ষার পর পাওয়া বলে এমনটা মনে হচ্ছে ঠিক বুঝতে পারছিনা।
কোচের নাম দেখছি- নিশানে খাজা!
চট্রগ্রাম - কক্সবাজার -চট্রগ্রাম।
বিরতিহীন -  ক্লোজ ডোর।

চালকের ঠিক দুই সিট পরে জানালার নোংরা পর্দার পাশে ভীষণ চাপা টেডি সিট ই--১, পাশের যাত্রী দেখছি ঘুমিয়ে কাত হয়ে আছেন,তার চেয়ে দুঃখজনক হলো তিনি কঠিনভাবে নাক ডাকছেন।

মনে হচ্ছে দুপুরে তিনি প্রচুর টেনেছেন ভুঁড়িভোজ' যাকে বলে। কিন্তু তারচেয়ে ও বড় সমস্যা হচ্ছে- কিছুক্ষন পর পর আমায় গায়ে এসে পরছেন আর যেই আমি উনাকে সোজা করে দিচ্ছি তখনি তিনি পাশ ফিরে আমার দিকে একটু আলগা হয়ে অতি কৌশলে পেটের দূষিত বাতাস ছেড়ে দিচ্ছেন- উফ কি পচা দু:র্গন্ধ।
নিশ্চয়ই ব্যাটার পেট পচে গেছে। আচ্ছা তার খাদ্য তালিকায় বাসি মাইট্যা,সুরমা’ জাতীয়  মাছ ছিল না তো ?  
কি করি, আমি কি করি ?
:ঃ বদ্দ্যা ভাড়া দন-
ঃ আচ্ছা পিছনে একটা সিট দেয়া যাবে ?
ঃ  সাতকানিয়ায় জি- ২,জি-৩ দু' টা সিট কালি হবে।
ঃ  আচ্ছা ঠিক আছে।
বাসের  ময়লা দাঁতের অশিক্ষিত কন্ট্রাক্টটার বলে কথা নয়  এমন আরো অনেক শিক্ষিতজন আছেন যাদের ও ক' খ' তে সমস্যা আছে।
 কিন্তু সাতকানিয়া তো  এখনো অনেকদূর। মাত্র আমিরাবাদ পার করছি।
ঘুমন্ত খবিস টাকে হালকাভাবে সরিয়ে পিছনে আসার সময়  মনে হলো  ইবলিসের মুখে চাপা হাসি।
আরে বাসের জানালার উপরের অংশে দেখছি যাবতীয় ভুল বানানের আবর্জনার স্তুপ। না, উল্লেখ করে আপনাদের আর অরুচিতে ফেলতে চাইনা এম্নিতেই হারামীটার ত্যাগ করা বিশ্রী সেই বাতাসে এখনো কেমন যেন বমি বমি ভাব ঠেকছে। ওয়াক থু! কিন্তু থু থু ফেলার জায়গা পাই কই ?
তখনি, কোচের গতি কমে এলো। কেউ একজন নামছেন। হায়রে, ক্লোজ ডোর। আরে বন্ধ দরজাই যদি হবে তবে তো আমি নিজেও এই গাড়ির যাত্রী হবার কথা নয়।
ভদ্রলোক মধ্যবয়সী। গায়ে সাফারি, চেকপেন্ট, বিবর্ণ জুতো আর হাতে পুরানো আমলের ঘড়ি বহু ব্যবহারে ঘোলা গ্লাস, শিকলের ফাঁকে ফাঁকে ময়লার মতো কালের দাগ, তৈলাক্ত চেহারা দেখে সহজেই বুঝা যাচ্ছে তিনি একজন মাঝারি সরকারি কর্মকর্তা।  
ইতিমধ্যে আস্তে আস্তে বাস দাঁড়িয়ে গেছে। যাত্রী ও নেমে যাচ্ছেন।
মহাশয়ের হাতে মধ্যম সাইজের একটা ফ্যামিলী ব্যাগ। হঠাৎ কি যেন একটা মনে আসতেই তিনি পিছনের সিটের এক যাত্রীর দিকে ফিরলেন -
ঃভাই তা হলে আসি কেমন ?
আমার পেছনের যাত্রী তখন বিদায় শুভেচ্ছা জানালেন ঠিক এভাবে –
ঃ  ভাই মুরুব্বীদের সালাম, ভাবীকে ম্যারেজ ডে' শুভেচ্ছা আর বাচ্চাদের আদর দিবেন। আর অবশ্যই চিটাগাং পৌঁছে  আমাকে মোবাইল করবেন।
( মোবাইল করা মানে কি ?)

খোদা হাফেজ।
...........................................................

অবশেষে কাঙ্খিত সেই সাতকানিয়া।

 সিটে বসতেই মনে হলো ভিজে কিছু একটার  উপর বসে আছি।কি হতে পারে, পানি নাকি বাচ্চার প্রস্রাব? হায়রে,আল্লাহ এবার সর্বনাশের চুড়ান্ত হলো। এখন কি করি?
'নোংরা দাঁত'কে ডেকে ধমক দেবো নাকি চুপচাপ হজম করে যাবো '?
কিন্তু বাস থেকে নেমে যাওয়া দম্পতির সাথে তো কোনো বাচ্চা’দেখলাম বলে মনে হচ্ছে না। তবে কি?
আল্লাহ তুমি রক্ষা করো।
আরে পাছার নিচে ও নরম নরম কিছু লাগছে বলে মনে  হচ্ছে। খোলস সহ আস্ত তিন চার আলুর সাথে লম্বা লম্বা গোটা কয়েক ভাত। মসল্লার কারনে হলুদ দেখাচ্ছে।
তার মানে বমি ? ইচ্ছে হচ্ছে ডান হাতের আঙ্গুল চারটেই কেটে ফেলি। ছি। ছি।
হায়রে,কেন যে বসার আগে ভাল করে দেখে বসলাম না। আফসোস। বড়ই আফসোস। তার চেয়ে বেশি ঘেন্না আর অশুচি লাগছে। কি করি , আমি করি ?
আচ্ছা, পথে কোথায় নেমে গেলেই তো এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। সাথে তো লুবনার গুছিয়ে দেয়া ব্যাগে' কাপড়  টাওয়েল জাস্ট কল মি ম্যাক্সি, কাউবয় পাউডার সবি আছে।
আচ্ছা, রাস্তার পাশে কোথায় যেন বিশাল একটা দীঘির মতো পুকুর দেখেছিলাম ?
না থাক, বাস থেকে নেমে ই বা আর কি হবে , আবার তো আরেকটা বাসেই চড়তে হবে তার উপর আবার আগামীকাল কাকডাকা ভোরে অফিস- ইপিজেডের চাকুরী বলে কথা।
ঠিক তখনি খেয়াল করে দেখলাম আমার সামনের সিটের ভদ্রলোককে কেমন যেন অস্থির লাগছে,ভীষণ অস্থির। একবার বসা থেকে উঠছেন তারপর অল্প দাঁড়িয়ে থেকে আবার বসে যাচ্ছেন। কি হতে পারে ?
ঃ আচ্ছা, উনাকে  নিম্নচাপে ধরেনিতো ?    
আমার অনুমান দেখছি একদমই সঠিক।     
ভদ্রলোকের মাথার পিছনের চুল খাড়া হয়ে যাচ্ছে ,ডাঙ্গায় তোলা মাছের মতো তিনি মোচড় খাচ্ছেন।
ভদ্রলোকের এবার ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে গেল।
ঃ এই কন্ট্রাক্টর এদিকে এসো।
ঃ বলেন ?
ঃ এক্ষুনি গাড়ি থামাতে বলো,টয়লেট সারতে হবে।
ঃ কিন্তু পেট্রোল পাম্প তো পিছনে ফেলে এসেছি।
ঃ কিছু করার নেই, আগে গাড়ি থামিয়ে আমার নামার ব্যবস্থা নাও।
ঃ উঠে আসেন , এক্ষুনি বাস থামাচ্ছি।      
বাস থেমেছে। সম্ভবত দোহাজারী।
আচ্ছা, এই সুযোগে বাস থেকে নেমে পরিষ্কার হয়ে নিলে কেমন হয় ? নামবো কি নামবো  না সিদ্ধান্তে যাবার আগেই আনকোরা একজোড়া দম্পতি যাত্রী উঠে এলেন।
ব্যস,অন্ততঃ দশ মিনিটের জন্য বাস থেকে নামার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলো। পুরা আইলটাই দখল করে দম্পতি অতি ধীরে ধীরে আমার দিকে এগিয়ে আসছেন সাথে বিশাল সব ব্যাগ পুটুলি' আরো কতো কি।
কি আর করি, প্রচন্ড ঘেন্না নিয়ে আবারো সেই বিষাক্ত সিটটাতে ফিরে এসে  নিজের এই নাজুক অবস্থার জন্য অনুতাপ করা ছাড়া আর কিইবা করার আছেন বলেন?
                                                                    .
এই দুঃখের মাঝেও লুবনার একটা কথা মনে আসতেই আবারো হাসি পাচ্ছে।
ও'  বলে টেরাফিক জাম আর যেই আমি ওকে  টেরাফিক লুব' বলে ডাকি সাথে সাথে সে আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে কিল ঘুষি শুরু করে অতঃপর চলে অবিরাম।
হায়রে প্রাণের লুব,তুমি যদি জানতে আমি এখন কি অবস্থায় আছি।
তখনি মনে হলো কেউ একজন আমাকে লক্ষ্য করছেন।চট করে পাশ ফিরতেই দেখি ডায়রিয়া রোগীর মতো খোঁচা খোঁচা দাঁড়ির বর্ণহীন এক বুড়ো গভীর আগ্রহ নিয়ে আমায় দেখছেন।  
আরে হারামি আমি কি চিড়িয়াখানার মাল নাকি, এমন করে কি দেখছিস ?
সিটের ডানপাশের আইলে ছোট বড় কয়েকটা ব্যাগ আর খুচরা পুটুলি। বড় পেটুক একটা পলিথিন প্যাকেট একদিকে হেলে ঝুকে আছে। হাবড়ার পায়ে নিচে দেখছি দুই দুইটা জ্যান্ত মোরগ- মুরগী প্রাণভয়ে কেমন যেন নীরব হয়ে গেছে।
এতক্ষন যা আশংকা করেছিলাম এবার মনে হয় ঠিক তাই হতে চলেছে।
চোখাচোখি হতেই বুড়া মিঞা আলাপ জুড়ে দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।
 কিন্তু সমস্যা হচ্ছে- ঐ বয়সীরা প্রায় সবাই মনে প্রাণে পাকিস্তান লালন করেন, সুযোগ পেলেই তুলনামূলক আলোচনা করতে ছাড়েন না। ঐ আমলে হেন হতো, তেন হতো, যতো সব  আজগুবি মসল্লা দিয়ে সালুন রান্না।
ঃ ভাই বুঝছেন এই সব গাড়িগুলো হচ্ছে এক একটা বদের হাড্ডি। চেয়ারকোচ না ছাই স্রেফ কিছু বল্লি।জোহরের নামাজের পর পর চকরিয়া থেকে উঠেছি, টাউনে পৌঁছতে পৌঁছতে মনে হয় এশারের সময় ও পেরিয়ে যাবে।
 আমি কেবল নীরব শ্রোতার মতো শুনে যাচ্ছি আর মনে মনে আল্লাহর কাছে বিপদ মুক্তির জন্য আপদকালীন দোয়া জপছি।
ঃ ভাই বুঝছেন' মেয়ের বাড়িতে যাচ্ছি- মদুনাঘাট ছিদ্দিক বাড়ি। আপনার ভাবি কন্যার জন্য ভাতের মোচা, কিছু বিন্নী চাল, এক বোতল চুনতির মধু,পুকুরের রুই, ঘড়ায় তোলা মহিষের দই আর গলদা চিংড়ি ফ্রাই দিয়েছেন। বুঝেন তো মায়ের মন।
হঠাৎ  বিশ্রী শব্দ করে ক্যাসেট প্লেয়ারে ফকিরনি মমতাজের গান চালু হলো-
'এবার না আসিলে বাড়িতে আগুন লাগাইয়া দিমু আমার শাড়িতে।
মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
এবার বুড়া ভামটা চিল্লাতে শুরু করেছে।
ঃ এই কন্ট্রাক্টর গান বন্ধ করো, এখন মাগরিবের টাইম।
এরপর জানিনা কেন, হঠাৎ করে আমার ভীষণ ঘুম পাচ্ছে। হতে পারে খোলা জানালায় সদ্য সন্ধ্যার ঠান্ডা বাতাস,  সারাদিনের ক্লান্তি চমক অথবা অবশেষে রণেভঙ্গ -পরাজিত সৈনিকের মতো অবসাদ ঘিরেছে আমায়।
আর যখন জেগে উঠেছি তখন প্রচুর লোকের চেঁচামেচি আর গাড়ির সেই নোংরা ময়লা দাঁতের কন্ট্রাক্টারের সদর্প ঘোষণা -
যাত্ৰী সকল আমরা  বহর্দ্দার হাট এসে গেছি আপনারা এবার নামেন।
শরীরের সাথে  কঠিন ভাবে লেগে থাকা জঘন্য বমি আর রাজ্যের ধূলো সব নিয়ে আস্তে আস্তে গাড়ির দরজার দিকে  হাঁটা দিচ্ছি ঠিক তখনি সেই কর্কশ কণ্ঠটা কানে এলো- জনাব কিছু ফেলে গেলেন কি ? ধন্যবাদ আবার আসবেন।
বলতে ইচ্ছে হলো- এ নিশানে খাজা' নয় , নিশানে বদ।
এই জন্মে আর কখনো এই বাসে চড়বো না। অনেক শিক্ষা হয়েছে আজ,যদি পারি একটা জনসভা করে সবাইকে সতর্ক করে দেবার চেষ্টা করবো।

খোদা হাফেজ।



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 06 September 2022

ওয়ান্টেড ->WANTED (DEAD or, ALIVE)৷>>>>৭ম/শেষ পর্ব

ওয়ান্টেড ->WANTED (DEAD or, ALIVE)৷>>>>৭ম/শেষ পর্ব।
একে ধরিয়ে দিন।  ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌( জীবিত কিনবা মৃত)
 |||||||||||||||||||||||

(পশ্চিমা কাহিনীর ধরনে)
 |||||||||||||||||||||||

কোর্ট বসতে বসতে সকাল সাড়ে ১০টা বাজলো।
ম্যানেজমেন্টঃ
|||||||||||||||||||||

 জজ- ০১ জন। জুরি-০৪ জন।
 সরকারী উকিল- ০১জন।
 বেসরকারি উকিল- ০২জন।
রেকর্ডার ম্যানুয়েল - ০১জন।
শেরিফ আর  ডেপুটি-০২ জন
সর্বমোট -১১জনের একটা টিম।

ধৃতব্যক্তি : ১ জন।
অভিযোগ : রাসলিং এবং খুন।
অপরাধ স্পট : পদুয়ার তেয়ারী হাট।

জেরা শুরু হওয়ার অল্পক্ষনের মধ্যেই অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যের কারণে আদালতে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। জজ হাতুরি ঢুকায়ে পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করেন।

অত:পর জজ তাঁর জুরি বোর্ডের সাথে পরামর্শক্রমে মামলার রায় ঘোষণা করেনঃ
'যেহেতু অভিযুক্ত ব্যক্তি শ্রেফ একজন ভাড়াটিয়া এবং সার্কেল ওয়াই অপরাধের মূল হোতা’ সেহেতু সার্কেল ওয়াই’এর মালিকের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হইলো।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে লঘুদন্ড হিসাবে ৩৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হইলো।
এই কোর্ট আদেশ কার্যকর করার জন্য এখানকার শেরিফের নেতৃত্বে একটি দল চুনতির শেরিফের সাথে যোগাযোগ করিবে এবং তার পরবর্তী পদক্ষেপ দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী গ্রহণ করা হইবে'।

শেরিফকে ধন্যবাদ জানিয়ে যখন ক্যাম্পে ফিরে আসলাম তখন বেলা ৩টার মতো।
প্রথমেই লাঞ্চ তারপর অন্য ভাবা ভাবা যাবে।

কিন্তু লাঞ্চ শেষ হবার আগেই আঙ্কেল জনি এসে সংবাদ দিলো রাত ১১ টায় দোহাজারীতে চট্টগ্রামগামী মালগাড়ীটা আসছে। তার মানে এক্ষুনি পুরা পালটা ড্রাইভ না করলে রাত ৮টার আগে কিছুতেই দোহাজারী পৌছানো যাবে না।

অবশেষে অনেক কসরত করে গরুর পালটা মালগাড়ির বগিতে তোলা হলো।
রাত ১ টায়  ট্রেনটা ষোলশহর আসতেই রেলের ইঞ্জিনিয়ার এসে জানালেন- ইঞ্জিন ত্রুটির কারণে ট্রেন আর সামনে যাবেনা।
কি আর করা! মালগাড়ি থেকে গরু নামানোর জন্য কাউহ্যান্ডদের তাগাদা দিতেই অতি উৎসাহী কাউবয়রা তখুনি সিঁড়ি পেতে দিয়ে গরু নামানোর কাজ শুরু করে দিলো।
গরুর পাল নিয়ে সবে রাস্তায় এসেছি ঠিক তখুনি দু’জন অশ্বারোহী আমাদের পথ আটকালো।
ঃকোথা থেকে আসা হচ্ছে শুনি?
ঃ তার আগে বলো তোমরা কারা?
ঃ আমি ডেপুটি মার্শাল পল আর ও আমার সহকারী।
ঃ আমরা চুনতী ডাবল ডায়মন্ড র‍্যাঞ্চ থেকে এসেছি,সাথে পাঁচ হাজার গরুর একটা পাল আছে। আশা করছি ভাল দাম পাবো। তুমি কি বলো মার্শাল?
ঃ  তোমাদের সাথে নিশ্চয়ই র‍্যাঞ্চ মালিকের বিক্রয় অনুমতি পত্র আছে?
ঃ -অবশ্যই।
ঃ দেখি দেখাওতো।
অনুমতিপত্রের নিচে লূনার স্বাক্ষর দেখে আনন্দে লাফিয়ে উঠলেন ডেপুটি।
ঃ আরে এতো দেখছি আমার কাজিনের মেয়ে!

এরপর আরো অনেক কথাই হলো। তারপর ডেপুটির মধ্যস্থতায় পুরো গরুর পালটা  বিক্রী করে রেঞ্জের নামে দাগকাটা চেকটা বুঝে নিলাম।
পরের দিন ফিরতি ট্রেন ধরে দোহাজারী হয়ে যখন চুনতী এসে পৌছলাম তখন সবে  সন্ধ্যা নেমেছে।
পাঞ্চাররা সবাই ক্লান্ত,প্রত্যেকের মুখে লম্বা লম্বা দাঁড়ি, ময়লা কাপড়। ব্লু জিনস্ ধূলোতে বিবর্ণ দেখাচ্ছে,রোদে জ্বলা  হ্যাট, পায়ের বুটের সামনের অংশ নেই বললেই চলে। এই অবস্থায় কেউই ভদ্র মহিলার সামনে যাবার জন্য রাজি হলো না। তাই তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্তে  র‍্যাঞ্চে না গিয়ে সদলবলে কাউবয়তে ঢুকে পড়লাম।

পরিকল্পনা হচ্ছে- পেট পুঁজোর পরে ক্যাটস্ এ গিয়ে সবাই ক্ষুরকার্য শেষে স্নান করে গেট স্মার্টে  জিন্স আর বুট, ক্যাপ বদলাবো। অবশ্য ড্রেসের সিদ্ধান্তটা র‍্যাঞ্চের পক্ষ থেকে আঙ্কেল জনিই ঘোষণা করেছেন।
রেঞ্জে  ফিরতে রাত দশটা বেজে গেলো। কাউবয়রা সবাই সরাসরি ব্যাঙ্ক হাউজে চলে গেলো, শুধু আঙ্কেল জনি আর আমি গেলাম বসের কাছে। রিপোর্ট করে চেকটা বুঝিয়ে দিতে হবে।
ঃ ম্যাম ভিতরে আসতে পারি?
ঃ শিওর। আমি আসলে তোমাদের অপেক্ষাতেই বসে আছি। এতো দেরী করলে কেন?
চোখে মুখে খুশী উপচিয়ে পড়ছে। তারপরেও যে, বহু কষ্টে আবেগ দমিয়ে রাখছে তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে।
ঃ  ম্যাম পাঞ্চারদের একটু আনন্দ করার সুযোগ দিলাম।
ঃ ওকে। আমারই বরং তোমাদেরকে রিসিভ করার জন্য বনপুকুর পর্যন্ত যাওয়ার দরকার ছিলো। কিন্তু কি করবো বলো, বিকাল থেকে শরীরটা ভীষণ খারাপ লাগছে।
ঃ থ্যাক ইউ ম্যাম। এ নাও তোমার র‍্যাঞ্চের নামে টাকার চেক আর ডেপুটি মার্শাল পলের চিরকুট। সে নাকি সম্পর্কে তোমার মামা।
ঃসত্যি মিষ্টার হেনরি তোমাদের কাছে আজীবনের জন্য কৃতজ্ঞ হয়ে রইলাম। যদি এই ড্রাইভটা সফল না হতো তবে আমি শেষ হয়ে যেতাম। কিন্তু কষ্টা আর রাষ্টির মৃত্যুর জন্য আমার নিজেকেই দায়ী মনে হচ্ছে।
ঃ শোন মিস, জন্ম মৃত্যু বিধাতার হাতে। আমি রাষ্টির মুখে তার মায়ের গল্প শুনেছি, তিনি নাকি আজিজ নগরে থাকেন। আর কষ্টা তো একজন এতিম।
ঃ দেখো যদি রাষ্টির মার সন্ধান পাও তবে উনাকে আমি এক লক্ষ টাকা দেবো।
ঃ ওকে ম্যাম। আমি অবশ্যই খোঁজ নেবো।
পরদিন লুনাকে নিয়ে রাইড করতে বেরিয়েছি তখন পথে কেইনের সাথে দেখা হলো। তার মুখে শুনলাম কিছুক্ষন আগে কাউবয়তে এলি খুন হয়েছে। খুনী নাকি এখনো কাউবয়তেই আছে অথচ কেউ তাকে আটকাতে সাহস করছে না।
ঃ শেরিফ কি করছে?
ঃ  তিনি তো গত পরশু সাবরাং (টেকনাফ) গেছেন।
ঃ ডেপুটি রয়?
ঃ মুরগীর বাচ্চার মতো সে গর্তে লুকিয়েছে।

এলির মায়াময়ী চেহারাটা মনে আসতেই কখন যে কালো ঘোড়াটার পেটে জোরে স্পারের খোঁচা দিয়েছি তা আমি নিজেও জানি না।
দশ মিনিটের মধ্যে কাউবয়ের দরজায় এসে যখন দাঁড়ালাম তখন বলতে গেলে রাস্তায় অনেক লোক। কিন্তু সবাই নির্বিকার!
এর মধ্যে কোমরে ডাবল গান নিয়ে কুৎসিত চেহারার একজন লোক এসে বারান্দায় দাঁড়িয়ে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে গলা উচিয়ে বলতে লাগলো-
ঃ তোমরা হয়তো জানোনা সার্কেল ওয়াইয়ের বস মিষ্টার অষ্টিন একজন বিশিষ্ট ভদ্রলোক। তিনি তোমাদের এলাকাতে অনেক উন্নয়ন করেছেন। উনার পরিকল্পনাতে আছে- এই এলাকাটাকে উনি মডেল প্যালেস বানাবেন। অথচ এই বিশিষ্ট ভদ্রলোক আজ শুধুমাত্র ডাবল ডায়মন্ডের কারণে ফেরারি রয়েছেন। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কোর্টে আত্মসর্মপন না করলে তিনি আউট-ল হয়ে যাবেন। তোমরা কি তা চাও?

নিশ্চুপ জনতা। কিন্তু আমি নিশ্চুপ থাকি কিভাবে ?
ঃ এই ব্যাটা ভাড়াটে খুনী, মিথ্যুক আজ আমি তোকে পরপারে পাঠাবো। এলির মতো একজন সম্ভ্রান্ত মহিলাকে তুই খুন করেছিস, ডাবল ডায়মন্ডের ফোরম্যান উইলিয়াম উইলসন,রাস্টি,কষ্টা সহ আরো কয়েকজন খুন হয়েছে যে অষ্টিন এর হাতে তুই এসেছিস তার পক্ষে গলাবাজি করার জন্য? তোর সাহস দেখে আমি প্রশংসা না করে পারছি না।
ঃ তুমি কে?
ঃ তুই কে?
ঃ আমি ফারাঙ্গার ওরাঙ্গা। আমার পিস্তল তোমার মতন বেয়াড়া ২১ জনের চিহ্ন বহন করছে বলেই আচমকা গুলি করে বসলো পিস্তলবাজ।

এদিকে আমি রিফ্লেক্স বশত: বাম দিকে ড্রাইভ দিয়ে মাটিতে পড়ার আগেই কোমরের কাছ থেকে পর পর দুটি বুলেট পাঠিয়ে দিয়েছি। একটি গানম্যানের পায়ের পাশে মাটিতে এসে গাঁথলেও অপরটি তাকে রেহাই দিলো না। কপালে তৃতীয় নয়ন নিয়ে সে যখন ধরাশায়ী হলো তখন সবাইকে শুনিয়ে একটি কথা মাত্র উচ্চারণ করলো- ‘এ অসম্ভব! আমাকে কেউ হারাতে পারে না’।

ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে স্বয়ং জজ এবং ডেপুটি শেরিফ রয় এসে উপস্থিত হয়েছেন।
 আমিও চিন্তা করে দেখলাম যেহেতু এখানে আমার দায়িত্ব শেষ তাই আনুষ্ঠানিকভাবে আমার পরিচয়টা সবার কাছে প্রকাশ করতে পারি। তাতে একদিকে গর্ভণরের সুনাম যেমন বাড়বে অন্যদিকে তেমনি এই এলাকার কেউ আর অপকর্ম করতে সাহস পাবেনা।
ঃ শোন সবাই- আমি গর্ভণর ব্ল্যাকের  আদেশপ্রাপ্ত হয়ে এই এলাকাতে এসেছিলাম। আশা করছি, আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি৷ আর এক্ষুনি আমি এই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে চাই, তোমার কি কিছু জিজ্ঞাসা করার আছে?
ঃ তারমানে তুমি বলতে চাইছো তুমি একজন রেঞ্জার।
ঃ অস্থায়ী রেঞ্জার।
রেঞ্জার হও আর যেই হও আমি কিছুতেই তোমাকে যেতে দেবো না।
 আমাকে জড়িয়ে ফুঁফিয়ে কেঁদে উঠলো লুনা।ঠিক তখুনি জনতার মধ্য থেকে গভর্ণরের বজ্র কন্ঠ ভেসে এলো-
ঃ আমি আদেশ করছি হেনরি তুমি ডায়মন্ড কর্ত্রীকে জীবনসঙ্গী করে নাও- নইলে   মন ভাঙ্গার দায়ে এক্ষুনি তোমাকে অ্যারেস্ট করবো।
সমবেত জনতার মুহুমুহু তালির মধ্যে হঠাৎ আবিষ্কার করলাম লুনাকে বুকে নিয়ে আমি খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি।

- শেষ -



আরকেএম সাইফুল ইসলাম
Date: 06 September 2022

গোধূলীর রক্তরাগে
গোধূলীর রক্তরাগে
#আরকেএম _সাইফুল_ইসলাম
(অক্ষরবৃত্ত,৮+৬)
#ব্যাচ ৭৭
গোধূলীর রক্তরাগে বিরহের রেশ
অপেক্ষার শেষ চেষ্টা বৃথা নাহি যেতে
কবে জানি জোনাকীরা সাজাবে বাসর
বেসামাল কথাকলি ছড়াবে সুবাস।

 



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 06 September 2022

ওয়ান্টেড - >>>>>WANTED (DEAD or, ALIVE)৷ ষষ্ঠ পর্ব

ওয়ান্টেড -   >>>>>WANTED (DEAD or, ALIVE)৷ ষষ্ঠ পর্ব।
একে ধরিয়ে দিন।  ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌( জীবিত কিনবা মৃত)
 ||||||||||||||||||||||||||

(পশ্চিমা কাহিনীর ধরনে)
 |||||||||||||||||||||||||

পরদিন দুপুর পর্যন্ত ক্যাটেল ড্রাইভ করার পর ঠাকুর দিঘী এসে পৌছলাম। সিদ্ধান্ত হলো এখানকার শেরিফের হাতে রাসলারটাকে তুলে দেবো।
কিন্তু আমাদের জানা ছিলো না ঠাকুর দিঘীতে কোন শেরিফ অফিস নেই। লোহাগাড়া সাতকানিয়ার শেরিফ অফিসটা রূপকানিয়ায়। তবে লোক মুখে শুনলাম শেরিফ রুশ অত্যন্ত নোংরা এবং নীচু লোক।

টেকনাফ সাবরাং এ তার পিতৃনিবাস হলেও সে নাকি বেড়ে উঠেছে  বার্মার আকিয়াবে, এরপর সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে ২১ বছর বয়সে সাতকানিয়ায় এসে ভলেন্টিয়ার হিসাবে কাজে যোগ দেয়। তখন জনকল্যাণ সমিতির প্রধান ছিলেন বর্তমান মেয়র রডি। তিনিই পরবর্তীতে রুশকে এই এলাকায় শেরিফ নির্বাচনে দাঁড়াতে সহায়তা করেন।
কি আর করা, আবার ক্যাটল ড্রাইভ শুরু করলাম।

একটানা চলার পর রাত আটটা নাগাদ সাতকানিয়া এসে পৌছলাম। চুনতি থেকে পদুয়া পর্যন্ত পৌছার জন্য আমাদের ২ দিন সময় লাগলেও পদুয়া থেকে সাতকানিয়া মাত্র ৪ ঘন্টায় পেরিয়ে আসলাম। অবশ্য পদুয়ার পর থেকে সাতকানিয় পর্যন্ত তেমন কোন দূর্গম পাহাড় পর্বত নাই তাও একটা বড় কারণ।

যাক, ক্যাম্পে ক্লান্ত কাউবয়রা সবাই শুয়ে পড়লো কিন্তু একঘন্টা পর আঙ্কেল জনির ডাকাডাকিতে সবাই আবার উঠে পড়লো। ক্যাম্পের বাতাসে তখন গরুর মাংস পোড়ানোর খুশবু। মুহুর্তে কাবাবের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়লো ক্ষুর্ধাতের দল।

পরদিন ভোরে বন্দী রাসলারটাকে নিয়ে আঙ্কেল জনিসহ রূপকানিয়া এসে পৌছলাম। সবে শেরিফ অফিসের সামনে এসে দাঁড়িয়েছি তখনি শটগান বেরিয়ে এলেন একজন খর্বকায় ব্যক্তি। ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে ব্যাটা স্বয়ং ইউ,এস, মার্শাল- আমেরিকা থেকে এসেছে।

ঃ  হ্যালো বয়েজ, তোমরা কিন্তু এখানে থামছো না; ক্লিয়ার?
ঃ আমি হেনরী টমাস। চুনতীর সজারুমারার ডাবল ডায়মন্ডের প্রতিনিধিত্ব করছি আর আমার সাথের জন আঙ্কেল জনি। আমাদের অভিভাবক বলতে পারো। আমরা এসেছি রাসলারটাকে সোপর্দ করতে।
ঃ শেরিফঅফিসে নেই, কখন আসবেন তারও ঠিক নেই। আমি কোন উটকো ঝামেলায় পড়তে চাই না। তোমরা অন্য পথ দেখো।
ঃ  তুমি কি ডেপুটি? তবে শোন, আমরা শেরিফের সাথে দেখা না করে যাচ্ছি না। এখন আমাদের ভিতরে নিয়ে চলো।
ঠিক তক্ষুনি ডাকাত দর্শন কালো কুঁচকুঁচে মোটা জুলফির একজন বার্মিজ চেহারার আর্বিভাব হলো। তার হোলস্টারে ডবল গান শোভা পাচ্ছে।  
ঃ হ্যালো আমিই শেরিফ রুশ। বলো তোমাদের জন্য কি করতে পারি?
রুশের অফিসটা বেশ গোছানো তবে খুব ছোট। লাগোয়া জেলটা তিনরুমের, পাশেই টয়লেট। বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলতে রুশের চেহারায় ভীতি ফুটে উঠলো। সন্দেহের দৃষ্টিতে আমাদের জরিপ করতে লাগলো।
ঃ অসম্ভব সার্কেল ওয়াইয়ের বিরুদ্ধে আমি কিছু করতে পারবো না। প্রথমত: র‌্যাঞ্চটা আমার এলাকায় নয়। দ্বিতীয়ত: যাকে রাসলার বলে আহত করে ধরে এনেছো সে যদি সব অস্বীকার করে, তোমরা কিভাবে তার অপরাধটা প্রমাণ করবে?

এবার আমি আমার শেষ অস্ত্র প্রয়োগ করলাম।
ঃ আমি এলাকার জনগণকে একত্রিত করে গণ আদালত করবো। তখন দেখবে ক্ষ্যাপা জনতা ব্যাটাকে ফাঁসিতে ঝুলাবে। তখন তুমি কি করবে, মব* ঠেকাবে নাকি সুষ্ঠ বিচারের আশ্বাস দেবে? তবে এক্ষুনি তা করছো না কেন?
ঃ  ঠিক আছে,তোমাদের কথামতো অভিযুক্তকে গরাদে ঢুকাচ্ছি।
বন্দী সর্মপন করে রশিদ বুঝে নিলাম। নিচে মুক্তার মতো অক্ষরে শেরিফের সহি- রুশ মামশাই।
ঃ আচ্ছা শেরিফ,তুমি কি বন্দিকে আজই কোর্টে তুলবে,নাকি আমরা ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবে?
ঃ তুমি হলে কি করতে ?
ঃ আমি ঝামেলায় যেতাম না, আজই বন্দিকে জর্জের সামনে হাজির করতাম।
ঃ ঠিক কথাটাই বলেছো। তাছাড়া বিনা বিচারে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাউকে আটকিয়ে রাখার ক্ষমতা বা মানসিকতা কোনটাই আমার নেই। তাই আজ সকাল ন’টার মধ্যেই তাকে কোর্টে তুলছি। তোমাদের স্বাক্ষী সাবুদও রেখো কিন্তু।
ঃ ওকে। তাহলে আমরা ব্রেক ফাষ্টটা সেরে আসি?
ঃ শিওর। পাশেই কামএগেইন,তবে সাবধান- আঙ্গুল কেটে ফেলো না যেন। মিনা প্রু মারমা শুধু দেখতেই সুন্দরী নন, বারটেন্ডার কিন্তু যাদুও জানেন।
-ঃ থ্যাঙ্ক ইউ শেরিফ।
কামএগেইনে ঢুকতেই হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের ছ্যাকা খেলাম।
মানুষ এতো সুন্দর হয় কি করে? অষ্টাদর্শীর রূপ যেন চাঁদকেও হার মানাবে এবং এর চেয়ে সরস কোন উপমা,  এই মুহুর্তে অন্তত আমার মাথায় আসছে না।
ঃ  গুড মর্নিং ম্যাম, আমরা কিন্তু খুব ক্ষুধার্ত।
ঃ মনিং। ঝটপট বসে পড়ো, এক্ষুনি গরুর ভুনা মাংস,বেকন, সীম এনে দিচ্ছি। চলবে তো?
ঃ -ম্যাম, শুধু চলবে না রীতিমত কৃতজ্ঞবোধ করছি।

চলবে -



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 06 September 2022

ওয়ান্টেড - >>>>>WANTED (DEAD or, ALIVE)৷ ৫ম পর্ব

ওয়ান্টেড -   >>>>>WANTED (DEAD or, ALIVE)৷ ৫ম পর্ব।
একে ধরিয়ে দিন।  ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌( জীবিত কিনবা মৃত)
 |||||||||||||||||||||||||

(পশ্চিমা কাহিনীর ধরনে)
 |||||||||||||||||||||||

পড়ন্ত বিকেলে জেড র‍্যাঞ্চে এসে পৌঁছলাম।
এতো ভয়াবহ অগ্নিকান্ড চিন্তাও করা যায় না, কেবিন, র‍্যাঞ্চ হাউস, কিচেন হাউস এখন শুধু পোড়া কাঠ কয়লার স্তুপ।
লুনা এগিয়ে আসছে,  হাতে মেয়ারের লাগাম। মনে হয় ডাবল ডায়মন্ডে ফিরে যাচ্ছে।
ঃ হ্যালো হেনরী, তোমার কথাই ভাবছিলাম।  আমি দুঃখিত কথা দিয়ে রাখতে পারিনি।
ঃ না, না, কি যে বলো!  মানুষের বিপদ আপদ আছে না, তুমি  একজন বিপদগ্রস্তের পাশে এসে দাঁড়িয়েছো তাও কম কিসে!
ঃ;এসো তোমাকে এলিচার সাথে পরিচয় করিয়ে দিই। বেচারী খুব মন খারাপ করে আছে।
ঃ সে এখন কোথায়?
ঃ এলিনা এখন সদ্য পোড়া র‌্যাঞ্চহাউসের পিছনে প্রহরী চৌকিতে।
ঃ তাকে সাথে করে নিয়ে যাচ্ছো না কেন?
ঃ অনেক বলেছি। কিন্তু কিছুতেই সে তার কাউহ্যান্ডদের ছেড়ে যেতে রাজি হচ্ছে না। তাছাড়া, আগামীকালের মধ্যে সে আপাতত থাকার মতো একটা  কেবিন দাঁড়  করাতে চায়। মনে হয় এলিচা এখন র‌্যাঞ্জ হাউসটার  ড্রয়িং করছে। চলো গিয়ে দেখি-
আরে এ যে দেখছি নিতান্ত একজন বালিকা! অথচ সৌন্দর্য্য তার উপচে উপচে পড়ছে। কি প্রাণবন্ত উচ্ছ্বল।
ঃ তুমি নিশ্চয়ই লুনার সেই?
ঃ মানে ?
ঃ তুমি তো পুরুষ মানুষ, বোকা। তুমি কি বুঝবে!
ঃ আমি তো অবাক। লুনা নিশ্চয়ই আমার সম্পর্কে এলিনাকে কিছু বলেছে।
ঃ  আচ্ছা ম্যাম, তোমার ফোরম্যান কি বেঁচে আছে?
মুহুর্তে তাঁর সুন্দর মুখটা বেদনায় ছেয়ে গেলো।
ঃ না, আক্কেল পল বেঁচে থাকলে তো কথা ছিলো না,আমি নিশ্চিন্তে থাকতাম।
দীর্ঘক্ষণ আলাপের পর ঠিক হলো আপাতত তিনদিন মেরামতের কাজ চলবে। কেবিন,বি.হাউস এবং কিচেন তৈরির পরে একটা বড় গরুর চালান দোহাজারী রেললাইন পর্যন্ত ড্রাইভ করা হবে। যার নেতৃত্ত্বে থাকছি স্বয়ং আমি।
ঃ সত্যি মি: হেনরি, তোমার কাছে আমি কৃতজ্ঞ হয়ে গেলাম।
ঃ কৃতজ্ঞতার প্রশ্নই আসে না। এ আমার দায়িত্ব।
তৃতীয় দিনের দিন কাউবয়দের সহযোগীতায় একটা কেবিন, বি. হাউস এবং কিচেন দাঁড় করিয়ে ফেললাম।

অবশ্য এই হাউসগুলির আকৃতি এতো ছোট যে, মনে হয় অন্যান্য র‌্যাঞ্জারদের কাছে তা কৌতুকের বিষয় হবে যা হোক চর্তুথ দিন ভোর হতে না হতেই কয়েকজন কাউবয়কে নিয়ে নলবনিয়ার খামারে গেলাম।

তারপর দিনভর তিন হাজার গরু একত্র করে শুয়োরমারায় নিয়ে এলাম। এখানে ইতিমধ্যে কস্টা কয়েকজনের সহায়তায় দুই হাজারের মতো গরু চালানের জন্য একত্র করেছে।

পঞ্চম দিনের দিন ভোর রাত্রে শুয়োরমারা থেকে ক্যাটেল ড্রাইভ শুরু করলাম।
 পাঁচ হাজার গরু, নয়জন কাউবয় এবং নেতৃত্বে আমি – ট্রেইল বস।
এরপর কোন ঝামেলা ছাড়াই ষষ্ঠ দিনের দিন বিকেলে পদুয়া তেয়ারি হাট এসে ক্যাম্প করলাম।
 প্রাণ খুলে কাউবয় সঙ্গীত গেয়ে সবার হৃদয় জয় করে নিলো কস্টা আর অন্যান্য কাউবয়রা আসন্ন সাফল্যের আনন্দে কয়েকবার ব্লাঙ্ক ফায়ার দিলো। কয়েকজন
আকন্ঠ মদ গিলে অশ্রাব্য খিস্তি আওড়ালো।
ক্যাম্পের আলোতে উঠে এলো কাল্পনিক সব কিংবদন্তী কথা।
এবং সেদিন মধ্য রাতেই আমরা আক্রান্ত হলাম।
মধ্যরাতে গোলাগুলির শব্দে যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখন ক্যাম্পের আলো নিভে গেছে। প্রচুর চেঁচামেচি’ আহতদের চিৎকার খিস্তিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। মুহুর্তের মধ্যে পায়ে বুট লাগিয়ে গানবেল্ট পড়ে হাতে বাফেলো গানটি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।
 
সামান্য এগুতেই একটা মৃত ঘোড়ার গায়ে পা লেগে হোঁচট খেয়ে পড়লাম। তাতেই প্রাণে বেঁচে গেলাম।একটু আগে আমি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম সেখান দিয়ে একটি বুলেট অতিক্রম করে গেল। তবে আলোর ঝিলিক লক্ষ্য করে ইতিমধ্যে আমিও একটি বুলেট পাঠিয়ে দিয়েছি। আর সাথে সাথেই অনেকগুলি বুলেট আমার ডানে বামে এসে বৃষ্টির মত পড়তে লাগলো।

অন্ধকারে অনেক কষ্টে অনেকটা আন্দাজের উপরে ভর করে ক্রল করে এগুলাম। রাইফেলের নলে নিচু ডালের ছোঁয়া লাগাতেই বুঝতে পারলাম আমি কাঁটা বনের কাছে এসে গেছি। এবঙ ঐখানে কস্টার দেখা পেলাম। তবে মৃত।

প্রাণবন্ত সজীব এই কাউবয়ের মৃত্যু কোনমতেই মেনে নেয়া যাবে না। আমিই বেচারাকে নিশি প্রহরী নিয়োগ করেছিলাম।পিছনের দিকে মৃদু শব্দ হতেই রাইফেল নিয়ে তৈরি হয়ে গেলাম। পরক্ষনেই বিষ্ময়ের সাথে দেখলাম ওরা সবাই ডাবল ডায়মন্ডের ক্রু।তাদের কাছে জানতে পারলাম আসল ঘটনা।

রাসলাররা প্রথমে চুরির চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ায় ষ্ট্যাপিড করার চেষ্টা করে কিন্তু গরুগুলো নিচের জমিতে থাকাতে তাদের সে চেষ্টাও বিফলে যায়। এদিকে কস্টার ছোড়াগুলিতে তাদের একজনের পেট এফোড়-ওফোড় হয়ে যায়। অপরজন পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে অ্যাপাচী সংকেত দিলে বাকি রাসলাররা আমাদের ঘুমন্ত ক্রুদের উপর অর্তকিতে আক্রমণ করে বসে। তবে তারা অস্ত্রে দক্ষ না হওয়াতে ডাবল ডায়মন্ড কাউহ্যান্ডের সাথে কুলিয়ে উঠতে না পেরে রণভঙ্গ দেয়।

কস্টা আর রাস্টি প্রাণ দিয়ে আমাদের সবাইকে রক্ষা করলো।এক অদ্ভুদ বেদনায় ছেঁয়ে গেছে সবার মন। এদিকে আবার পেটে গুলি খাওয়া রাসলার বাঁচার আকুল বাসনায় মুখে খই তুলছে।
ঃ  বয়েস, আমি কথা দিচ্ছি বাঁচার বিনিময়ে তোমাদেরকে গোপন তথ্য দেবো। তোমরা আমার জন্য এক্ষুনি চিকিৎসার ব্যবস্থা করো।
ঃ একজন ঘৃণিত চোরকে বাঁচিয়ে আমাদের কি লাভ? তবুও মুভারকে ডেকে তার চিকিৎসার ভার দিলাম,রাসলার বাঁভার আশায় অর্নগল কথা বলে যাচ্ছে-
ঃ -সার্কেল ওয়াই, আমাদেরকে নিয়োগ করেছিলো ষ্ট্যাম্পিড করার জন্য। আমাদের উপর নির্দেশ ছিলো কোন মতেই যাতে তোমরা গরুর পাল নিয়ে দোহাজারী রেললাইন পর্যন্ত যেতে না পারো।
ঃ  তারপর ?

হঠাৎ করে তস্কর জ্ঞান হারিয়ে ঢলে পড়লো। এদিকে টনি পায়ে গুলি খাওয়া রাসলারটাকেও ধরে নিয়ে এসেছে। সেও আমাদেরকে একই তথ্য দিলো।পরমুহুর্তে হঠাৎ করে কাউবয়রা পেটেগুলি খাওয়া রাসলারের কপালে লাল টিপ পড়িয়ে দিলো।
 
আর অপর রাসলারকে ল্যাসের দড়ি দিয়ে পিছমোড়া করে গাছের সাথে বেঁধে সমানে লাথিঘুষি মারা শুরু করলো। আমি শত চেষ্টা করেও উত্তেজিত কাউবয়দের থামাতে পারলাম না। তবে তাদেরকে অনুরোধ করলাম, দয়া করে তোমরা তাকে বাঁচিয়ে রেখো। কস্টা রাস্টির মৃত্যুর জন্য সার্কেল ওয়াই’এর বিরুদ্ধে আমরা এর স্বাক্ষী উপস্থাপন করবো।

অবশেষে রাসলারকে আধমরা করে তবে কাউবয়রা শান্ত হলো।

চলবে-



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 31 August 2022

ওয়ান্টেড - >>>>>WANTED (DEAD or, ALIVE)৷ ৪র্থ পর্ব

ওয়ান্টেড -   >>>>>WANTED (DEAD or, ALIVE)৷ ৪র্থ পর্ব।
একে ধরিয়ে দিন।  ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌( জীবিত কিনবা মৃত)
||||||||||||||||||||||||||
(পশ্চিমা কাহিনীর ধরনে)
||||||||||||||||||||||||||||||

তেষ্টায় বুকটা ফেটে যাচ্ছে, পুরো শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা,নড়াচড়ার সামর্থ্য পর্যন্ত নেই। কি যে করি?

এই মিষ্টার অন্ধকারে শুয়ে আছো কেন,তুমি কি আহত?

প্রশ্নকারীর কন্ঠ শুনে বুঝতে পারলাম তিনি একজন বয়ষ্ক ভদ্রলোক। তারপর তিনি ঘোড়া থেকে নেমে এসে অবলীলায় আমাকে তার ঘোড়াটায় কোনাকুনি করে তুলে নিলেন। অল্প কিছুদূর যাবার পর বুঝতে পারলাম কাছেই পরোপকারী লোকটা তাঁর  ক্যাম্প করেছেন।

ঃ দেখি একটু কষ্ট করে উঠে বসার চেষ্টা করো। কচি মুরগীর মাংসের স্যুপ করেছি।
ঃ থ্যাক ইউ জেন্টেলম্যান। আগে আমি একটু পানি পান করবো।
ঃ না, খালি পেটে পানি খেলে তোমার বমি হবে। তাছাড়া আমি এখনো তোমার জখম চেক করিনি।
এতো সুস্বাদু স্যুপ আমি জীবনেও খাইনি। আচ্ছা মুখের ভিতর লবনাক্ত ভাব এতো প্রবল হচ্ছে কেন?
পরদিন ভোরে ঘুম ভাঙ্গতেই দেখলাম এক চমৎকার প্রকৃতির কোলে শুয়ে আছি। ছোট ছোট সব পাহাড়, গর্বিত মায়ের মতো সন্তান বুকে দাঁড়িয়ে আছে ফলবতী সববৃক্ষ,সোনালী ধানি জমি ! আহা! আমি যদি কবি হতাম।

এবার দিনের আলোতে উপকারী লোকটাকে দেখলাম। একজন মধ্যবয়সী বেটে খাটো স্বাস্থ্যবান সুবেশী ভদ্রলোক। মুখের ডানদিকে একটা কালো কাটা দাগে তাকে আরো বেশি পরিনত লাগছে।
ঃ এই মিষ্টার ঘুম তাহলে ভেঙ্গেছে, রাইড করতে পারবে? ওহ সরি, তুমি তো আবার ঘোড়া হারিয়েছো। আচ্ছা বলোতো গত রাতের ঘটনাটা কি? ওরা কারা ছিলো?
সন্ধ্যা রাতের পুরো ঘটনাটা খুলে বললাম।
ঃ ঠিক আছে চলো, ঐ জায়গায় গিয়ে দেখি কোন ক্লু পাই কিনা।
ঃ তুমি ?
ঃ আমি পার্কার। পুটিবিলার টমি জেনারেল ষ্টোরের মালিক।
ঃ তুমি?
ঃ আমি শ্রেফ একজন ভবঘূরে।

যা ভেবেছিলাম রাসলাররা কোন ক্লুই রাখেনি। এমনকি তারা ঘোড়ার খুরের চিহৃ মুছে ফেলার জন্য গানি ব্যাগ পর্যন্ত ব্যবহার করেছে। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার রাসলাররা স্থানীয় এবং এ কাজে কাউহ্যান্ডের মতো দক্ষ। তার মানে তারা কোন আউটফিটের পাঞ্চার।

পার্কার চলে যেতে আমিও যাত্রা প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রথমে কয়লার আগুন নিভিয়ে পরে চুলাটা ভেঙ্গে দিলাম। গন্তব্য হাটখোলা মূড়া- নেলসনের আস্তাবল।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে- হাটখোলা মূড়া যেতে হলে রাতার খাল ধরে যেতে হবে যেখানে বর্তমানে একবুক সমান পানি।
বাধ্য হয়ে কুমুদিয়াডুরি থেকে সাঁতরিয়ে করইল্লাকাটার মুখ পর্যন্ত এলাম। এবার দূগর্ম পাহাড়ী পথ পায়ে হেঁটে পেরুতে হবে।
সবে রাতার খাল থেকে করইল্লা কাটার মুখে এসে দাঁড়িয়েছি তখনি মনে হলো করবস্থানের ওপার থেকে রাইফেলের নলের ঝিলিক দেখলাম।
তারপরের মুহুর্তে রাইফেলের গর্জন শুনতেই বামদিকে ড্রাইভ দিয়ে পড়েছি। বুলেটটা একটু আগে যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম সেখানে এসে কদম গাছটার বুক বিদীর্ণ করে দিলো।
ক্রল করে সামনের দিকে এগুতে থাকলাম। খাঁড়া পাহাড়,ছোট ছোট সব চৌকা পাথর তার উপরে চোখের পাতায় একটা বদ মশা আটকা পড়েছে।
অবশেষে, বহু কষ্টে কবরস্থানের পিছনে চলে এলাম। এখন আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি,খুনী ব্যাটা কবরস্থানের পাশে পশ্চিমমুখী হয়ে শুয়ে রাইফেল সাইটে চোখ রেখে আমাকে খুঁজছে। হারামীর বাচ্চাটা এখনো বুঝতে পারেনি আমি তার ঠিক পিছনে চলে এসেছি।
ঃ এই মিষ্টার এক্ষুনি অস্ত্র ফেলে উঠে দাঁড়াও, আমার পিস্তল তোমায় কাভার করে আছে।

মুহুর্তের মধ্যে আততায়ী ঐ অবস্থা থেকে ডানদিকে ফিরেই ট্রিগার টেনে দিলো। তারমানে ব্যাটা নিশ্চিন্ত ছিলো আমি সম্পূর্ণ নিরস্ত্র। তাই আমার থ্রোয়িং নাইফটা যখন তার গলায় এসে বিঁধলো তখনো সে অপার বিষ্ময় নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো আর ঐ অবস্থাতেই নীচু লোকটা মারা গেল।
নেলসনের আস্তাবলে সব উন্নতজাতের ঘোড়া। বিশেষ করে মাসট্যাং ঘোড়া দেখে বিষ্মিত হলাম। আমেরিকার বন্য এ ঘোড়া এদেশে কিভাবে আসে? নিশ্চয়ই চোরা পথে  কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব!

মাসট্যাং সম্পর্কে বহু গল্প শুনেছি, উত্তর আমেরিকাতেই নাকি মাসট্যাং এর সংখ্যা ০২ (দুই) মিলিয়নের উপরে। Wyoming, Oregon এবং Montana তে এই ঘোড়ার কদর ও ব্যবহার বেশি। বন্য শক্তিশালী ও দ্রুত  গতির হওয়ার কারণে পশ্চিম আমেরিকাতে প্রায় সব আউটল’ই এই ঘোড়া ব্যবহার করে।
যাক, অবশেষে অনেক দরাদরি করে ১৬ হাজার টাকায় কালো একটা মাসট্যাং কিনলাম। নেলসন লোকটা বড্ড হিসাবী এবং অবস্থা বুঝে দাম হাকাতে পটু লোক।
আমার গন্তব্য সজারু মারার ডাবল ডায়মন্ড র‍্যাঞ্চ যেখানে আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে স্বয়ং মিস লুনা। আমরা একত্রে লাঞ্চ করবো।
অথচ ভাবলাম একটা,হলো তার বিপরীত!

ঃ  ম্যাডাম তো গতরাতে তিনগরইগ্গা পাড়াতে গেছে, এখনো ফেরেননি।
ঃ কেন গেছে তুমি কি কিছু জানো?
এবার আকাশ থেকে পড়লো গেটরক্ষী।
ঃ কি ব্যাপার ম্যান গতরাতে কোথায় ছিলে, তুমি কি জানো না জেড র‍্যঞ্চে
 আগুন লেগে মারা গেছে ছয়জন কাউবয় সাথে তাদের ফোরম্যান।
ঃ সরি গতকাল রাতে আমি এই এলাকার বাহিরে ছিলেম।

কাউবয়তে ক’দিন আগে জেড র‍্যাঞ্চের এলিচার কথা শুনেছি। তার বাবা নাকি দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র ইতিহাসবিদ ছিলেন এবং একজন সফল বাথান মালিক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

তিনিই একমাত্র র‍্যাঞ্চার যিনি তিনগরইগ্গা পাড়া থেকে ক্যাটেল ড্রাইভ করে দোহাজারী রেললাইন পর্যন্ত নিয়েছিলেন, এরপর রেলে করে চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়তলী গরু বাজারে। ঐ বছর ঐগুলিই ছিলো বাজারের সেরা পশু।

চলবে



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 31 August 2022

ওয়ান্টেড - >>>>>WANTED (DEAD or, ALIVE)৷ ৩য় পর্ব।

ওয়ান্টেড -   >>>>>WANTED (DEAD or, ALIVE)৷ ৩য় পর্ব।
একে ধরিয়ে দিন।  ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌( জীবিত কিনবা মৃত)
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
(পশ্চিমা কাহিনীর ধরনে)
 |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মধ্য দুপুর।
খিদেয় পেট জ্বলছে। ঠিক করেছি -আজ স্নান  না করে লাঞ্চ করবো না। তার আগে বারবার শপে যেতে হবে,কতদিন আয়না দেখি না। না জানি,ভালুকের মতো লাগছে কিনা?
নটিবয়ে  ওয়েটিং এ আছি। বামচোখে দেখতে পাচ্ছি টেডি নাপিত একজন গানম্যানের খুর কাজ করছে আর অন্যদিকে,গানহ্যান্ডের ডান  হাতটা ধীরে ধীরে কোমরের দিকে নেমে যাচ্ছে। কি ব্যাপার,ব্যাটার মতলব কি?

এবার গুলি খেলাম ডান কাঁধে। শক্তিশালী বুলেটের ধাক্কায় রাস্তার বালুতে গিয়ে পড়লাম। তখুনি আমাকে কলার ধরে দাঁড় করানো হলো। তারপর লোহার মতো শক্ত হাতে পর পর দুটি চড় মারা হলো।

ঃআগন্তুক, তুমি এখুনি এ-এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছো। ক্লিয়ার?
ঃ কারণ?
ঃ আমি টিকটিকি পছন্দ করিনা।
ঃ তোমায় কে বলেছে যে, আমি স্পাই?
ইতিমধ্যে আমার বামহাতে লাফিয়ে উঠে এসেছে .৪৫ ক্যালিবার।
ঃ গানম্যান’ এবার তুমি কানে ধরে ৯৯ বার উঠবস করবে। কারণ  তুমি আমার গায়ে হাত দিয়েছো, তাও আবার বিনা নোটিশে।
ঃ কাজটা ঠিক করলে না কিন্তু।

এ দেশটা পুরুষের দেশ। এখানে কোন কা-পুরুষের স্থান নেই। গানম্যানকে দর্শকদের জিম্মায় রেখে উপশমে ঢুকে পড়লাম। কাঁধের মধ্যে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে সবে ফাস্ট এইড সেন্টার থেকে বেরিয়েছি তখনি আমাকে গ্রেফতার করা হলো।

ডেপুটি শেরিফ রয় সাথে ছয়জনের একটা বাহিনী। দেখেই বুঝা যাচ্ছে দৃঢ় প্রত্যয়ী সবাই।

ঃ কি ব্যাপার ডেপুটি’ আমি কি করেছি?
ঃ ডায়মন্ডের ফোরম্যান উইলিয়াম গতরাতে খুন হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে গতরাতের কোন এক সময়ে কু-কর্মটি তুমিই করেছো।
ঃ  সরি মিষ্টার রয়, উইলিয়ামকে আমার পছন্দ না হলেও খুন করার কোন কারণ অন্তত নেই।
ঃ সে তুমি কোর্টকে বলবে। এখন চলো, চুনতিতে শেরিফ তোমার জন্য অপেক্ষা করছেন।
ঃ  যদি না যাই  জোর খাটাবে?
ঃ কেন যাবে না? অপরাধী না হলে তো তোমার ভয়ের কোন কারণ নেই।
ঃ ওকে। তোমার যুক্তিতে আমি সন্তুষ্ট। চলো যাওয়া যাক।

শেরিফ অফিসের সামনে প্রচুর লোক সমাগম দেখলাম। কি ব্যাপার জনতা আমাকে ফাঁসিতে ঝুলাতে চায় নাকি? ঘোড়া থেকে সবে নেমে দাঁড়িয়েছি তখনি শেরিফ এসে আমায় হাত ধরে ভিতরে নিয়ে গেলো।

ঃ তা মিস্টার হেনরী,গতকাল রাত ৪টা থেকে ৪.৩০ টা পর্যন্ত তুমি কোথায় ছিলে?
গতরাতে পুরো ঘটনাটাই শেরিফকে খুলে বললাম। শেরিফ মনে হয়  বিশ্বাসও করলো কিন্তু তার প্রমাণ চাই।
ঃ ওকে জেন্টেলম্যান,তোমার কাছে কি কোন প্রমাণ আছে?
ঃ শেরিফ,তুমি তো ভালো করেই জানো,সব কিছুর প্রমাণ থাকে না।

কে বলেছে প্রমাণ নাই? মেয়েলী কন্ঠের প্রশ্নের সাথে সাথে পুরো রুমটা আলো আর ফুলের সুরভীতে ভরে উঠলো। স্বয়ং ডাবল ডায়মন্ড কত্রী- লুনা! সদ্য ফোটা একটা নিষ্পাপ গোলাপ।

নীল জিন্স, গোলাপী ফ্রক,পায়ে কাউবয় বুট। কোমরে গানবেল্টে ডাবল পিস্তল ঝুলছে। বুকের বামদিকের একটু নিচেও মনে হয় একটা ওয়ান সুট্যার আছে। এমন রূপ ইংলিশ ছবির পোষ্টারে দেখা গেলেও বাস্তবে মনে হয় এই প্রথম দেখলাম।

ঃ মিষ্টার শেরিফ,উইলিয়ামকে কে বা কারা খুন করেছে তার কিছু আলামত আমরা কিছুক্ষণ আগে পেয়েছি। ওরা সংখ্যায় চারজন ছিলো। ওদের একজনের ঘোড়ায় নাল ছিলো না। অপরজনের ঘোড়াটা আবার অতিরিক্ত ওজনের ছিলো। তস্কররা র‌্যাঞ্জ হাউসের পিছন দিকে ঢুকেছিলো।উইলিয়াম তখন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ওদিকটায় গিয়েছিলো। গেটম্যান সান তখন ফোরম্যানকে নিজ চোখে দেখেছে।

 শুধু তাই নয়  সে আরো বলেছে- তখন হেনরি বাঙ্ক হাউসে ছিলো,সার্কের ওয়াই এর গানহ্যান্ড রাস্টির ঘোড়াটা নাকি দৈত্য টাইপের,ঐ সার্কেলের আর একজন কাউবয় মন্টি সম্পর্কেও সান বলেছে সে নাকি পাহাড়ীদের মতো নাল ছাড়া ঘোড়া ব্যবহার করে।

ঃ ওকে মিস। তবে তোমার গেটম্যানকে ঐসব কথা কোর্টে দাঁড়িয়ে বলতে হবে,কিন্তু  আমাদের আরো বেশি প্রমাণ চাই।
ঃপ্রমাণ জোগাড় করার কাজ তোমার। কিন্তু তার আগে,এখুনি তুমি মি: হেনরীকে ছেড়ে দিচ্ছো।
ঃতুমি নিশ্চয়ই জামিন নিচ্ছো?
ঃআর কেউ আছে নাকি?
ঃ না তবে মনে হয় জামিনটা তুমি না নিলে, এলি অবশ্যই উকিল পাঠাতো।

শেরিফের কথাতে লুনার চেহারাটা মুহুর্তে বিমর্ষ দেখালো। কি ব্যাপার, মেয়েটা কি আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে নাকি?
উৎসুক দর্শকের সামনে দিয়ে লুনাকে নিয়ে গটগট করে বেরিয়ে এলাম। তারপর সরাসরি কাউবয়তে ঢুকে পড়লাম। আর তখুনি এলির কাছ থেকে সংবাদটা পেলাম- কেউ একজন আমার খোঁজে এসেছিলো। হতে পারে আমার হাতে মারা পড়া কোন ব্যক্তির বন্ধুবান্ধব বা আত্নীয় স্বজন প্রতিশোধ নিতে এসেছে।
লুনার চেহারায় রীতিমত ভয়ের ছায়া নেমেছে। ডানহাত দিয়ে তার পেলব হাতটা চেপে ধরে সান্তনা দিলাম।
এলি টেবিলে গরম গরম কাবাব পরিবেশন করেছে সাথে কাঁচা পেয়াঁজ মরিচ আর ঘরে বানানো আটার রুটি। অথচ লুনা কিছু্ই খাচ্ছে না কিন্তু আমি প্রচন্ড ক্ষুর্ধাত গ্রোগাসে গিলে চললাম।

পেট পুরে খেয়ে এলিকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাত্র কাউবয় থেকে বেরিয়েছি তখনি তাকে দেখতে পেলাম। বেটে খাটো কুৎসিত চেহারার একজন বার্মিজ। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। কোমর থেকে নীচু করে পিস্তল ঝুলিয়েছে। আমি নিশ্চিত তার পিস্তলগুলোর গায়ে খুনের আঁচড় আছে অর্থাৎ, এ যাবত সে ক’টা খুন করেছে। পিস্তলের হাতলটা মুক্তোর তৈরীও হতে পারে। আর কোল্টগুলি নিশ্চয়ই জার্মানের তৈরী।

ঃ তাকে অবাক করে দেবার জন্য দ্রুত সামনাসামনি গিয়ে দাঁড়ালাম।
ঃ আমাকে খুঁজছো?
......................................................................
সরি, প্রথমেই বলা দরকার ছিলো আমার,আমি সার্কেল ওয়াইয়ের বিগ লাকির মামা। যাকে তুমি অন্যায়ভাবে খুন করেছো।
ঃকে বলেছে, আমি তাকে সুযোগ না দিয়ে খুন করেছি। বরং ফাইটটা এক তরফা ছিলো আর প্রাণ বাঁচাতে আমি তাকে গুলি করেছিলাম।
ঃ ডাবল ডায়মন্ডের উইলিয়াম তো আমাকে টেলিগ্রাম করে উল্টো কথা বলেছে।
ঃ উইলিয়াম গতরাতে অপঘাতে নিহত হয়েছে’ শোননি নিশ্চয়ই?
ঃ কাউকে সন্দেহ করছো?
ঃ শুনলাম,কিছুক্ষণের মধ্যে শেরিফ তার পসি নিয়ে সার্কেল ওয়াইতে যাচ্ছেন। সন্তোষজনক জবাব না পেলে ওয়াইয়ের মালিক অস্টিনকে গ্রেফতারও করা হতে পারে।
সবকিছু নির্ভর করছে কমিটির উপরে যেখানে কমিটি মোটামুটি একটা সিদ্ধান্তে পৌছেছে –সার্কেল ওয়াই কাউর‍্যাঞ্জের আডালে যাবতীয় অপকর্ম সব করে চলেছে - রাসলিং,খুন খারাবী সকল কুকর্মের পিছনে তারাই সরাসরি জড়িত এবং আজ একটা বিহিত করতেই হবে।
ঃওকে জেন্টেলম্যান। আমি তোমার কথা বিশ্বাস করে রামু, কক্সবাজারে চলে যাচ্ছি এবং আমার আচরণের জন্যেও দু:খ প্রকাশ করছি, ভবিষ্যতে কখনো আমাকে প্রয়োজন পড়লে সংবাদ দিও। আমি রামুর বুচাং প্রু।

বিষ্মিত লুনা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।

ঃ গড তোমাকে শত্রুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে,তুমি অক্ষত আছো এ যে আমার বিশ্বাস করতেও কষ্ট হচ্ছে। কারণ তুমি হয়তো জানো না, বুচাং প্রু এ যাবত কোন ডুয়েলে হারেনি,তার হাতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৯ জন লোক মারা পড়েছে। যাদের অধিকাংশ ছিলো দূদার্ন্ত গান ফাইটার।
ঃ থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাম। তোমার সহানূভূতি আমায় মুগ্ধ করেছে।
ঃ থাক, আর সৌজন্যতা দেখাতে হবে না। চলো র‌্যাঞ্জে ফিরে যাই।
ঃ সরি ম্যাম, আজ এদিকটায় আমার একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে যার উপর নির্ভর করছে অনেককিছু...
ঃ তুমি কি আইনের লোক?
ঃ না আমি সরাসরি আইনের লোক নই তবে গর্ভণরের অনুরোধে একটা রহস্য উদঘাটন করার জন্য এখানে এসেছি।
ঃ তোমার কাছে কোন প্রমাণ আছে নিশ্চয়ই?
ডেনিম শার্টের বুক পকেট থেকে গর্ভণরের সই করা বিশেষ কাগজটা বের করে এনে দেখালাম সাথে  গানবেল্টের নীচে স্বযত্নে রাখা গোলচাকতি - অস্থায়ী রেঞ্জার।
আড়চোখে দেখলাম লুনার চেহারাটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে।
ঃ ম্যাম কোন সমস্যা?
ঃ না না, সব ঠিক আছে । আচ্ছা তুমি কি পারবে এ এলাকায় অবৈধ র‌্যাঞ্জিং ব্রান্ডিং রাসলিং এসব ঠেকাতে? যেখানে র‌্যাঞ্জাররা প্রায় সবাই ভাড়াটে গানম্যান পর্যন্ত পুষছে।
ঃ ম্যাম আমি গর্ভণরের অনুরোধে এসেছি, আমাকে তো পারতেই হবে।
ঃ ওকে তবে একটু সাবধানে থেকো আর আগামীকাল অবশ্যই বাথানে এসো। আমি তোমার অপেক্ষায় থাকবো। সাথে সাথেই লজ্জ্বা পেয়ে বললো- কাল আমরা একত্রে লাঞ্চ করছি। পরমুহুর্তেই টেক্সানদের মতো চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে মেয়ারে চড়ে বসলো ডায়মন্ড কত্রী।

লুনা চলে যেতেই হঠাৎ করে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। নি:সঙ্গ জীবন যে কত যন্ত্রণাকর তা মনে হয় একজন ব্যাচেলর ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারবে না। আচ্ছা আমি কি পারবো মিশনটা সাকসেসফুলি শেষ করতে নইলে খোদ গর্ভণর ব্ল্যাকে’র কাছে আমার উচুঁ মাথাটা নিচু হয়ে যাবে।

আমি একজন এতিম। ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারিয়েছি। প্রতিবেশী মলি আন্টিই আমাকে নিজ সন্তানের মতো করে বড় করে তুলেছেন। মিশনারী স্কুলে দশ বছর পড়ার পর আন্টিই আমাকে সামরিক বাহিনীতে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। যেখানে আমি প্রায় পনের বছর চাকুরি করার পর মেজর পদে উন্নীত হয়েছিলাম।

একবার বার্মা থাই সীমান্তে ক্রস ফায়ারে পড়ে মৃত্যুর একদম মুখোমুখিও চলে গিয়েছিলেম।তারপর অবসরের পরে ঘুরে বেড়িয়ে দিন পার করছি তখুনি কর্ণেল ফোর্ড স্বয়ং সামরিক ক্যাম্পে তলব করে আমাকে লেখা গর্ভণরের একটা চিঠি আর চাকতিটা ধরিয়ে দিলেন।

অপূর্ব সাজে সেজেছে প্রকৃতি- ঢেউ খেলানো পাহাড়ী ঢাল, সবুজ গাছে গাছে ছেয়ে আছে সব বাহারী ফুল। শেষ বিকেলের আলো এসে আমায় রোমাঞ্চিত করছিলো। আর ঠিক তখুনি স্বপ্পাভাব ভঙ্গ হলো।

অল্পবয়সী অপরিচিত দু’জন যুবক কুমুদিয়াডুরির এককোনে একেবারে কাটা পাহাড়ের পাদদেশে গরুর ব্রান্ডিং করছে । আমি নিশ্চিত -অ-সময়ের আইরনিং মানেই অবৈধ কিছু।
ঃ হ্যালো বয়েস এখানে কি হচ্ছে?

চোখের পলকে বামদিকের ছোকরাটা আমার দিকে হেনরি তাক করে ফেললো, এমন অবিশ্বাস্য গতি আমি খুব কম দেখেছি। সে কি তবে গানম্যান?

ঃ যাও ভাগো, এখানে কুকুর, ভিখারী আর টিকটিকির প্রবেশ নিষেধ।
ঃ অবৈধ মালের ব্র্যান্ডিং করছো?
ঃ না’ মিষ্টার ভবঘুরে বিষয়টা তুমি এভাবে দেখতে পারো না।
তবে জানতাম না আমার জন্য আরো বিষ্ময় অপেক্ষা করছিলো।
মুহুর্তেই ছয়জনের দলটা চর্তুদিক থেকে আমায় ঘিরে ধরলো। একজন এসে গানবেল্ট খুলে নিলো তারপর পিছনের তস্করটা আচমকা পিস্তলের বাট দিয়ে মাথার পিছনে আঘাত করতেই আমি স্যাডলচ্যুত হয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলাম।
যখন জ্ঞান ফিরলো তখন চারদিকে ঘোর অন্ধকার, শত শত মশার গান শুনতে পেলাম। শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা। তারমানে রাসলার শুয়োরগুলো অজ্ঞান অবস্থায় আমাকে ইচ্ছেমত পিটিয়েছে। বহুকষ্টে জিহবার নীচে ডান হাতের দু’আঙ্গুল চেপে পর পর তিনবার শিস দিলাম।
কিন্তু কই ঘোড়াটা তো আসছে না, গানবেল্টটা পাশেই পড়ে আছে তবে পিস্তল শূণ্য।

(চলবে)



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 25 August 2022

ওয়ান্টেড

ওয়ান্টেড -   >>>>>WANTED (DEAD or, ALIVE)
একে ধরিয়ে দিন।  ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌( জীবিত কিনবা মৃত)
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
(পশ্চিমা কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে)

    [][][][][][][][][][]
বনপুকুর, চুনতি।
সূর্য তখন ঠিক মাথার উপরে।
শেরিফ অফিসের সামনে প্রচুর লোক সমাগম হয়েছে।
বিষয়টা কি? কালো ঘোড়াটার পেটে স্পারের হালকা খোঁচা দিতেই লাফিয়ে সামনে এগোল।
বড় বড় তিন তিনটে রিওয়ার্ড পোষ্টার:
১. রাসলার লাকিকে ধরিয়ে দিন। জীবিত বা মৃত। নগদ পুরষ্কার ১ লক্ষ টাকা। পুরো পোষ্টার জুড়ে এক ভয়ংকর যুবকের ছবি।
২. আউট-ল রাসেলকে জীবিত বা মৃত ধরিয়ে দিলে নগদ পুরষ্কার ২ লক্ষ টাকা। অত:পর যথারীতি পোষ্টার জুড়ে শুকনো লিকলিকে এক যুবকের ছবি। কোমরে সিক্স গান' মুখেতে দুর্বিনীত হাসি।
৩. বাউন্টি হান্টার জেমসকে জীবিত বা  মৃত ধরিয়ে দিলে নগদ পুরষ্কার ৩ লক্ষ  টাকা। কিন্তু পোষ্টারে তার ছবি নেই। বর্ণনায় বলা হয়েছে- সে অত্যন্ত নাদুস নুদুস শরীরের অধিকারী। বয়স আনুমানিক ৩৫। গায়ের রং শ্যামলা। সারা মুখেতে বষন্তের দগদগে দাগ। অপরাধ- সে একজন নিরীহ অস্ত্রহীন লোককে পিছন থেকে গুলি করে হত্যা করেছে।
পিছনে খসখস আওয়াজ হতেই পাঁই করে ঘুরে দাঁড়ালাম। ইতিমধ্যে অভ্যাস বশত: হাতে বেড়িয়ে এসেছে .৪৫ ক্যালিবারের অটোমেটিক পিস্তল।

আমার সামনে স্বয়ং শেরিফ!
ঃকে তুমি অপরিচিত যুবক, কি করছো এখানে, জানতে পারি নিশ্চয়ই?
ঃ আমি একজন ভবঘুরে...
ঃ দেখো মিস্টার ভবঘুরে, আমার এলাকায় আমি কোন গোলমাল চাই না। এক্ষুনি তুমি চুনতী ছাড়ছো, মনে রেখো লোহাগাড়া থেকে হারবাং পর্যন্ত এলাকাটা আমার।
ঃ সরি শেরিফ, আজ আর তা কোন ভাবেই  সম্ভব নয়। আমাদের বিশ্রাম দরকার, নইলে অবলা প্রাণীটা শ্রেফ মারা যাবে, তুমি কি তা চাও?
ঃ অনেক লম্বা পথ পাড়ি  দিয়েছো মনে হচ্ছে?
ঃ হ্যাঁ, মি: ল' পটিয়া চক্রশালা থেকে এসেছি।তবে  তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো পিছনে কোন কালো ইতিহাস নাই, আইন ও আমায় খুঁজছে না।
ঃকাজ খুঁজছো না কেন?
ঃ আপাতত ভ্রমণের মধ্যে আছি।
ঃ ঠিক আছে। তোমাকে আগামীকাল দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিচ্ছি এরমধ্যে তুমি চুনতী ছাড়ছো। তবে সাবধান, আশেপাশের কোন পাহাড়ে আত্নগোপন করার চেষ্টা করবে না। তাহলে কিন্তু তোমাকে সন্দেহজনক ব্যক্তি হিসাবে গ্রেফতার করা হবে।
মনে রেখো, জজ সাহেব এখন বার্মা সফরে আছেন, ফিরতে বেশ কিছুদিন লাগতে পারে।
ঃ শেরিফ’ তুমি আগে কি করতে মানে, আইনকর্তা নির্বাচিত হবার আগে?
ঃ একজন শ্রেফ হোটেল জুয়াড়ী, তবে সৎ।
ঃ কিন্তু জুয়াড়ীরা তো এতো কথা বলে না,নাকি তুমি উকিল ছিলে?
ঃ তোমার ধারণা ভূল, আমি সবসময় ঝেড়ে কাশতে পছন্দ করি।
ঃ ওকে ল-ম্যান’ এখন বলো, এখানকার ভালো সেলুন কোনটা? আমার গরম গরম কাবাব আর সিম দরকার সাথে ডবল ডিমের পোচ আর এক মগ কড়া তেতো কফি।
ঃ তুমি কাউবয়’তে যেতে পারো। অল্প খরচে সব পেয়ে যাবে। বিধবা এলিসা সেলুনটা সুন্দরভাবেই চালাচ্ছে, তাকে তুমি আমার নাম বললে বিনা পয়সায় হোটেলের পিছনে খড়ের গাদায় নিশি যাপন করতে পারবে।
ঃ থ্যাংকউ শেরিফ, তুমি লোকটা সত্যিই ভালো।
ঃ আগন্তুক তোমাকেও ধন্যবাদ।

.....................................................
কাউবয় সেলুনটা পুরোটা গাছের খুঁটি আর বড় বড় তক্তা দিয়ে তৈরি। তবে অন্য আর দশটা ওয়েষ্টার্ণ ধাঁচের সেলুনের সাথে কাউবয়ের পার্থক্য হচ্ছে- এখানকার খাওয়া দাওয়া,পরিবেশনায় এক নিপুণ শৈল্পিকতা কাজ করে। তাছাড়া, সেলুন মালিক এলিসা নিজেই একজন খুব ভালো রাধূঁনী এবং বিনয়ী ভদ্রমহিলা।
 ক’দিন আগে খোদ ইন্ডিয়ান মার্শাল এই সেলুনে অতিথি হয়েছিলেন। যাবার সময় এলিকে জড়িয়ে ধরে বার বার কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
মেহগণি কাঠের টেবিলগুলো ছড়ানো ছিটানো। একটাতে ওরা বেশ ক'জন- ধুমসে পোকার চলছে,পাশে দাঁড়ানো দর্শকদের বেশ উত্তেজিত মনে হচ্ছে। ব্যাপার কি?
কোনার টেবিলে  গোবেচারার মতো গিয়ে বসে কফির অর্ডার দিলাম।একজন কাউবয়কে দেখতে পাচ্ছি,আমার পাশের দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আরেকজন স্বল্প পোষাকের সেলুন গার্ল তাকে দেখে উল্লসিত হয়ে পাশে এসে কাঁধে হাত রাখলো।
ডার্লিং, একটা ড্রিঙ্ক খাওয়াতে হবে কিন্তু।
হঠাৎ করেই ফায়ারিংটা শুরু হলো। নরক ধেয়ে এলো যেন কাউবয় সেলুনে।

....................................................
গানম্যান মোট তিনজন। একজন দরজা কাভার করে দাঁড়িয়েছে। অন্যজনের পিস্তল থেকে নীল ধোঁয়া বেরু্চ্ছে। আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলো যে কাউবয়টি সে এখন মাটিতে পড়ে আছে, বুকে তার লাল গোলাপ ফুঁটেছে।
তৃতীয় গানম্যান বারকিপারকে উদ্দেশ্য করে বলছে- এলি,ডাবল ডায়মন্ডকে বলো- গয়ালমারার ঘাসের জমিগুলো যাতে উম্মুক্ত করে দেয়। নইলে ডায়মন্ডে রক্তের নদী বয়ে যাবে। ক্লিয়ার?
পরমুহুর্তেই বন্দুকবাজের গুলিতে বারের উপর মুখ থুবড়ে পড়ল একটা বড় কুমড়োর মত ঝাড়বাতি।
 পিস্তলবাজ দেখছি এখন সরাসরি আমার টেবিলের দিকে এগিয়ে আসছে।
ঃ এই মিষ্টার উঠে দাঁড়াও। দেখেতো মনে হচ্ছে নতুন চিড়িয়া, তা এদিকে কি করা হচ্ছে শুনি?
ঃ তোমাকে কৈফিয়ত দিতে হবে নাকি?
ঃ যদি বলি ঠিক তাই, কি করবে তুমি?
ঃ দেখতে চাও?

পিস্তলবাজের হাত দেখলাম  মসৃণভাবে কোমরে নেমে যাচ্ছে, আর এক সেকেন্ড দেরি করলেই কপালে খারাবি আছে। একটু এগিয়ে গিয়ে ডান পায়ের সবুট লাথি হাঁকালাম তস্করের তলপেটে। হারামীর বাচ্চাটা পাঁচ হাত দূরে গিয়ে ছিটকে পড়তেই তাকে নিরস্ত্র করলাম।

এতক্ষণ এ্যাকশনের দ্রুততায় দুবৃর্ত্ত দু’জন নীরব ছিলো। প্রথম বুলেটটা এলো দরজার কাছ থেকে। মাথার তালুতে গরম ছ্যাকা দিয়ে পাশের দেয়ালে গিয়ে বিদ্ধ হলো। প্রচন্ড যন্ত্রণা উপেক্ষা করে সবে দাঁড়িয়েছি তক্ষুনি ডানদিকের নড়াচড়াটা ধরা পড়লো। কিন্তু ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বামকাঁধে বুলেটের কামড় অনুভব করলাম।

মাটিতে শোয়াবস্থাতেই পর পর দুটি বুলেট পাঠিয়ে দিলাম। প্রথম বুলেটটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও দ্বিতীয় বুলেটটা খুনির কপালে লাল টিপ একে দিলো। এরমধ্যে বারের পিছন থেকে হঠাৎ করে শটগান হাতে বেরিয়ে এলো স্বয়ং বারকিপার – এলি।
ঃ এই তোমরা অস্ত্র ফেলে দাও।  বুঝতে পারছো নিশ্চয়ই নইলে কি হবে?
এতো কাছ থেকে শটগানের গুলি খেলে দু’টুকরো হওয়ার ইচ্ছে কারো নেই। দু’হাত মাথার উপরে তোলে বেরিয়ে এলো ওরা দু’জন। আর তক্ষুনি ডেপুটি শেরিফ রয় এসে তাদের হাতে হাতকড়া পড়ালো।
এদিকে কখন যে, এলি আমাকে ব্যান্ডেজ করা শুরু করেছে আমি খেয়ালিই করিনি।
:
ঃ মনে হচ্ছে,জীবনের তোয়াক্কা তেমন একটা করো না। তারমানে কাউকে তুমি কথা দাওনি?
ঃ দেখো ম্যাম, আমি একজন ভবঘুরে, কোন মেয়ের মাথা নষ্ট যে আমার গলায় মালা পড়াবে?
ঃ এখানে হচ্ছেটা কি? শুনলাম, আমার কাউহ্যান্ড রেড খুন হয়েছে?
একজন অপূর্ব সুন্দরী স্বর্ণকেশের অষ্টাদশী পুরো সেলুনে আলো ছড়িয়ে দিলো!

 জীবনে আমি বহু সুন্দরী মেয়ে দেখেছি কিন্তু এমনটি কখনো নয়।

চলবে।



মারজিয়া খানম সিদ্দিকা
Date: 25 August 2022

শোক

একটি নাম একটি দেশ একটি পতাকা,
জড়িয়ে আছে ওতোপ্রোতভাবে, হৃদয়ে রক্তে আঁকা।
হায়নার দল পারে নি সইতে, এ আধার ভালবাসার,
রাতের আঁধারে বিলিয়ে দিল প্রাণ পুরো পরিবার।
অকুতোভয় সে বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব নির্ভীক সীমাহীন,
তবুও তাদের কাঁপেনি তো হাত, নিমেষে  করেছে সঙ্গীন।
আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে উঠে সে বজ্র নিনাদ,
শতবছরের সেরা বাঙালি  করল না প্রতিবাদ।
আজ তবে সেদিন এসেছে অজস্র মশাল জ্বালিয়ে
প্রতিবাদী কণ্ঠ জাগ্রত হয়েছে তোপের মুখে দাঁড়িয়ে।
ওরে হায়নার দল! পালাবি কোথায়? রুখে দেব তোদের,
আপামর জনগন নিঃশেষ করে তোদের, জ্বালবে আলো শোকের।।



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 25 August 2022

কণা এবঙ আমি

কণা এবঙ আমি।>>>>>>>>>>>>>>  কবিতা-৩
||||||||||||||||||||||||||
অথচ তার সংকোচ যখন ভাঙ্গে তখন আমি নির্বাক
আরাধ্যা! উর্বশী প্রকৃতি বেয়ে নামে সয়লাব!
তখনই বদলে যায় আমার জীবন।
এবঙ বদলে যেতে থাকে....

ভাঙ্গাচোরা সুখ আমার জং পড়া টিনের টাঙ্ক ভেদ করে
গোলাপী প্যাডে কিশোরীর আঁচড় -
ভালবাসি তোমায়, বড় বেশি ভালবাসি

অত:পর কোন এক নিশিতে এক অপরিচিতা!
বিদিশা নীলাভ আলোতে!কাঠগড়ায় আমি-
শত সহস্র প্রশ্নের সম্মুখীন। (কেন এমনটা হলো?)
 ||||||||||||||||||||||||||||||||



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 25 August 2022

এবঙ শুধু তিনিই একজনা!

কবিতা লিখতে গেলে যে পরিমিত বোধ,নিখুঁত দূরদর্শিতা,অনুপম নৈবাদ্যের সমন্বয় এর ফাঁকে ফাঁকে কারুকাজের জরি গুজে দিতে হয় তা কেবল একজন অরণ্যচারী সন্ন্যাসীই পারেন- তিনি কবি।
বিপরীতে একজন ভাঁড় কেবল মৃদু নাড়া দিতে পারে ভরা মাচানে।
অথচ ত্যাদড় বলেই দুঃসাহসে ভর করি আরবার।

|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
এবঙ শুধু তিনিই একজনা! >>>>>>>>>>>>কবিতা-১
 [][][][][][][][][]
অথচ কি সহজ অনায়াসে চলে গেলেন
ঘোরানো সম্পর্কের তিনি'!
তাঁর কারুকার্যময় ডানা-
স্বপ্নের মতো চোখ!
কুহেকাফের নীলপরী রুপ!
               ২.
          অত:পর-
পেছনে রেখে গেলেন তাঁর অর্থ্য
স্বর্গীয় অপ্সরীয় খুশবো
এবঙ এক অর্ভ অর্চক!
কারণ, কেবল তিনিই একজনা!!
...........................................................................
পুরানো অপরাধ এবঙ পাপের ক্ষমা চাও- কবিতা-২
     [][][][][][][][][][][][][]
অত:পর সব কিছু জেনে ফেলেছি
অপকর্মের আদ্যোপান্ত
বাক্যের কারুকার্য, ফরাসী সৌরভ রহস্য!
শঠের ষোল কলা-সিল্কী রুমাল
আনকোরা মনের ভাঁজ ভেংগেছো
সবুজ দিগন্তে ছড়িযেছো বৈষয়িকতা!
                        ২.
বিমানের জানালায় চোখ রেখে হাজারো
ফিট নীচে তুমি কি দেখতে পাবে
ইরানী কার্পেটের নিপুণ সুক্ষতা!
                       ৩.
অনেক হয়েছে মীরাবাঈ,এবার তোমার
সর্বনাশী নুপুর থামাও!
ওসব ব্ল্যাক আর্ট' সর্প বিদ্যা ছেড়ে
নতজানু হয়ে নি:শর্ত ক্ষমা চাও।
...............................................................



মিজান উদ্দীন খান বাবু
Date: 24 August 2022

অদ্ভূত ভাড়াটিয়া! -৩য়/শেষ পর্ব

অদ্ভূত ভাড়াটিয়া! -৩য়/শেষ পর্ব
||||||||||||||||||||||||||

অন্য একদিন।
কড়া দুপুর, ১২:১৩ মিনিট।
অফিসের কাজে সিইপিজেড থেকে আগ্রাবাদ যাচ্ছি।
কাস্টমস হাউজ পার হতেই মুঠো ফোনের ডিসপ্লেতে অচিন নাম্বার। কে হতে পারেন ? নাকি ডিপি মানে ডিস্টার্ব পার্টি কেউ ? অ-সময়ে অহেতুক কৌতুহলে কাউয়ার মতো করে কা কা । তৃতীয়বারে ও একই নাম্বার ! বিষয়টা কি? পরিচিত কেউও তো হতে পারেন। হতে পারে জরুরী কোনো বিষয়।
ঃ হ্যালো ?
ঃ স্যার, আমি বশির আপনার ভাড়াটিয়া।
ঃ সরি, নাম্বারটা অপরিচিত ঠেকছিলো তাই রিসিভ করতে দেরি হলো।
ঃ আরে স্যার, কি যে বলেন!
ঃ আচ্ছা, এবার বলেন কোনো সমস্যা?
ঃ না স্যার, বরং একটা বিশেষ সংবাদ দেবার জন্য আপনাকে ফোন করেছি।আগামীকাল জুম্মাবার বাদ আছর চকবাজার কলেজ রোডে আরেকটা দোকান উদ্বোধন করতে যাচ্ছি,আপনি কি স্যার কষ্ট করে আসতে পারবেন ?
ঃ আবার কিসের দোকান ? গণক ঠাকুর মুদি হলে লোকে যে বাঁকা হাসবে ভাই।
ঃ  স্যার মরদেহ সৎকার সামগ্রীর ব্যবসা।
ঃ  বাহ্ !চমত্কার আইডিয়া!
ঃ স্যার আসছেন তো ?
ঃ চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।

°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
খুব কাছেই দু'টো সরকারী কলেজ, নামী দামি বেশ ক'টি স্কুল থাকাতে এলাকাটা সব সময় বেশ সরব ব্যস্ত।তার উপর আবার কোচিং সেন্টার, লাইব্রেরী, ষ্টেশনারী, খানাঘর- পেটুক'