শাহাবাজ মালিক’ একজন জিন। একজন তরতাজা যুবক। যার বয়স২৭৫ বছর। ....................................................................................................................... শাহাবাজ মালিকের' সাথে আমার কখনো সরাসরি সাক্ষাৎ কিনবা দেখা না হলেও সে অদৃশ্য থেকে আমার সাথে কথা বলে। আমার বাসার ছাদ থেকে কখনো বা রুমের ডান বা বাম দিকের দেয়াল থেকে ভেসে আসে তার চিকন নাকি সুরের উর্দু ভাষা। হ্যাঁ, শাহাবাজ মালিক একজন জিন। যার বয়স ২৭৫ বছর এবং জিন জাতির গড় আয়ু হিসাবে সে এখন তরতাজা এক যুবক। তার নাকি বিয়ের কথা বার্তা চলছে আর ইতিমধ্যে তার পরিবার বিবাহের পাত্রী খোজ করার জন্য দু' বার কোহেকাফ পর্বত সফর করেছে। কিন্ত মালিক বংশের উপযুক্ত কোনো মেয়ে খুঁজে বের করা এতো সহজ নয়। তাকে হতে হবে খাটি মুসলিম সুন্নি এবং নামাজে কালামে পর্দা আদবে অভ্যস্ত একজন নারী। কিন্ত এমন মেয়ে বর্তমানে খুব বিরল। শাহাবাজ আমাকে আরো বলেছে জিন জাতির জন্ম উত্স আগুনের (smokeless flame of fire) বলে তাদের অধিকাংশই ফায়ার মেজাজের অমুসলিম'- বিজাতীয় চেতনায় বিশ্বাস করে। :আচ্ছা শাহাবাজ ‘ আমরা জানি জিন জাতি' ০৩ (তিন) ধরনের : এক- তাদের এক ধরনের পাখা আছে এবং তারা উড়ে উড়ে থাকে, আকাশ সহ সবখানে। দুই - তারা সর্প এবং কুকুরের বেশে থাকে। তিন - তারা যাত্রা বিরতি করে অল্প সময় এর জন্য তারপর আবার যাত্রা করে।যাত্রা বিরতি করে কবর স্থান' কিনবা বাজারে'। মন্দ জিন বাজার লাইক করে বেশী। আপনারা সঠিক জানেন। ২ : তুমি কি ইরাকের বাগদাদ নগরী চেনো। : জী। : এক হাজার বছর আগে বাগদাদে রচিত হয়েছিল -আরব্য রজনী। : জী ' আমরা শুনেছি ওই বহিতে নাকি ' আমাদের জিন' জাতিকে নিয়ে অনেক কিছু লেখা হয়েছে, যা মোটেও সত্য না। : যেমন ? : আরব্য রজনীর কাহিনীর মতো সবসময় জিন অসাধ্য সাধন করতে পারে না। কেননা ঝড়-বাদলের দিনে জিনরা চলতে পারে না।কারণ, তারা আগুনের তৈরি বিধায় বৃষ্টির সময় আয়োনাজাইশেন ও বজ্রপাতের তীব্র আলোক ছটায় তাদের ক্ষতি হয়ে থাকে এবং কোন ঘরে যদি নির্দিষ্ট কিছু দোয়া-কালাম ও কাঁচা লেবু থাকে, তাহলে ঐ ঘরে জিন প্রবেশ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। :তাহলে আমার শীষ মহলের কি হবে ? : উপায় একটা হবে ইনশাল্লাহ। : কি উপায় ? কখন হবে ? : কিছু সময় অপেক্ষা করুন, সবুর করেন জনাব। : ঠিক আছে শাহাবাজ' তোমাকে সময় দিলাম এক মাস এবং আমি এক মাস পরে আমার খোয়াব ভবনে শিফট করতে চাই। : ইনশাল্লাহ ' হয়ে যাবে। : অনেক ধন্যবাদ। ৩ :আচ্ছা শাহাবাজ ' আমরা তোমাদের দেখতে পাই না কেন ? :শুনিছি আমরা সূক্ষ্ম, তাই স্থূল মানুষ বা পশু-পাখি জিনদের দেখতে পায় না। তবে কুকুর ও উট আমাদের হুবহু দেখতে পায়। : রাতে কোন অপরিচিত বস্তু বা জীব চোখে না দেখা গেলেও কুকুর কি যেন দেখে ছুটাছুটি ও ঘেউ ঘেউ করলে তাতে জ্বিনের আবির্ভাব হয়েছে বলে বুঝতে হবে ? : ঠিক তাই আমরা জিনরা বহুরূপী। আমরা মানুষ, পশু-পাখি, ইত্যাদি যে কোন সুরত ধরতে পারি এবং সেই ক্ষণে উক্ত জীবের বৈশিষ্ট্যের আদলে তার ঘনত্ব কম-বেশি হয়ে থাকে এবং মানুষের দৃষ্টির মধ্যে আসে। :তোমাদের খাওয়া-পিনা সম্পর্কে কিছু বলো। :আমরা মানুষের ন্যায় খাওয়া-দাওয়া করি এবং আমরাও খানা চিবিয়ে এবং গিলে খাই। :মুসলিম জিনদের খাওয়া-পিনা ? : মুসলমানরা তাদের বাড়িতে যে খাবার রাখে' মুসলমান 'জিনরা সেই বাড়ির চালে অপেক্কা করে এবং একসময় নেমে এসে সে খাবার খেয়ে থাকে।অনেক সময় মানুষের সাথে বসেও খায়, অথচ মানুষ স্থূল বিধায় অতসব খেয়াল করতে পারে না। : কিন্ত আমরা তো জানি জিনের প্রধান খাদ্য হাড়, গোবর, কয়লা ইত্যাদি।আমাদের নবী করীম (স.) বলেছেন, “তোমরা দুটি জিনিস অর্থাত্ হাড় ও গোবর দিয়ে ইন্তিজা করো না, কেননা ওগুলো হলো তোমাদের জিন ভাইদের খাদ্য”। : একদম ঠিক। : তোমরা নাকি শখ করে পরম আদরে মিষ্টি খেয়ে থাকো ? : ঠিক। : মুসলিম জিনরা নাকি মানুষদের বালা-মুসিবত ও মন্দ-জিন থেকে রক্ষা করে থাকে? : রক্ষা করার মালিক একমাত্র আল্লাহতালা। ৪ : খারাপ জিনরা কোথায় থাকে ? : তারা সাধারণত নাপাক নোংরা জায়গায় থাকে, যেমন-ময়লার গাদা, আঁস্তাকুড়, নর্দমা, গাছের ঝাড়, গোসলখানা, পায়খানা, ইত্যাদি। : তোমাদের গড় আয়ু ? : এক হাজার বছর। : তুমি কি বাংলার নবাব সিরাজ উদ দৌল্লা কে দেখেছ ? : আলিবর্দী খাঁর আমলে ১৭৪০ খ্রি' ভারতবর্ষে আমার জন্ম।মির্জা মুহাম্মদ ছিলো উনার তার প্রকৃত নাম। আলিবর্দী খাঁ'বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার অত্যন্ত প্রভাব বিস্তার কারী নবাব ছিলেন । তার রাজ্যে জনগণ নির্ভয়ে সুখে শান্তিতে বাস করত। নবাব খার দৌহিত্র ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌল্লা- পলাশীর প্রান্তরে সাজানো যুদ্ধে পরাজিত , পরে ধৃত ও নিহত হন । সেই সাথে নিভে যায় উপমহাদেশে বাংলার স্বাধিনতা ২০০ বছরের জন্য । : তুমি তো দেখছি অনেক খবর রাখো। : খান সাহাব আমি এখন যাবার অনুমতি চাই , যেতে পারি ? : কোথায় যাবে ? : মক্কা শরীফ। : আবার কখন আসবে ? : আল্লাহের অনুগ্রহ হলে আপনি আবার যখন ডাকবেন। : আচ্ছা যাও। : আল্লাহ হাফেজ।
শাহাবাজ মালিককের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো হঠাৎ করে। সেদিন ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন -শুক্রবার। ভোর ৫.৪৫ মিনিট। মাথার পাশে খোলা জানালা। বসন্ত' বাতাস।গানের পাখির সু-মধুর গান ' কিচির মিছির উচ্ছ্বাস -'উতরিয়া আসে ভালবাসার নরোম রোমাঞ্চিত হিয়া।গাছের কচি ডালে সু-শোভিত নতুন পত্র-পল্লব'। মিলন দিয়ে ঢেকে রাখা বাসি পানির গ্লাস টিকটিকির ক্লাসিকেল মল রুমের ফ্লোরে গোটা কয়েক মরা কদাকার তেলেপোকা। মুহুতে' মন খারাপ হবে হবে ' ভোরের বিশুদ্ধতা হরণের ভয়'.... হয়তো এক্কুনি ডাকিবে বদের বদ কালো কাউয়া। কা কা কা '। যেন এক পেত্নীর অতৃপ্ত আত্মা। একা মানুষ আমি। বিছানায় থাকবো নাকি বারান্দাতে বসবো' ? আর তখনই আমার ছোট রুম টা এরাবিয়ান আতরের' গন্ধে ভরে গেলো। তবে কি আমার ঘরে কোনো অতিথি এলো ? শরীরী না অশরীরী? মানুষ নাকি জিন ? ডান পাশে বার্জারের কমলা রঙের দেয়াল। থর থর করে কাপছে। এন্টিক বাতির কভারের পেছনে পোকা খোর টিকটিকি টার পতন হয়েছে। সিলিং ফানে পাগলা নাচন। পাশের কামরা'তে কাচের চুড়ির মন ভাঙ্গা শব্দ ' নিশাচর শায়লা ' কি তবে জেগেছে ? শ্বাস নিতে ভীষণ কষ্ট' অনুভব করছি। এক দিকে ভয়' অন্য দিকে শারীরিক ব্যথা' আমি কি তবে মারা যাচ্ছি ?
আমি আপনার লেখার একজন পাঠক। আপনার লেখা পড়তে ভালো লাগে। আপনি চমৎকার লেখেন। অসাধারন কল্পনাশক্তি আপনার লেখাগুলো মনে হয় জী্বন্ত।
: খান সাহাব আমি জিন শাহাবাজ মালিক।আপনার নিমক খেয়ে আসছি গত প্রায় এক ৪০ দিন। মুসলিম হিসেবে এই ধরণের কাজ তো হারাম। তাই আজ আপনার কাছে ক্ষমা চাইতে এলাম। আমি তো ভয়ে মরি মরি' আর ওদিকে বেটা নাকি সুর' বলে কি। :আমি কিন্ত কিছু বুঝতে পারছি না, তুমি কি চোর নাকি ভিখারী ? : রাতে আপনি যখন লেট করে বাসায় ফিরতেন তখন আমি আপনার কিচেন থেকে চুপি চুপি কিছু খেয়ে নিতাম। কখনো বা আপনার হিমায়ক থেকে মিষ্টি নিয়ে খেয়েছি। আমি অপরাধী ' তাই আপনার কাছে মাফ চাইতে এলাম। : কি খেতে তুমি ? মানে তোমার খাদ্য কি ? : হাড্ডি' মাছের কাটা' শিম সহ সব সবজি। :এত মানুষ' মুসলিম ফ্যামিলি আছে কিন্ত কেন তুমি আমার বাসা বেছে নিলে ? : আপনার বাসা মূর্তি বিহীন ' কোনো মানুষ কিনবা পশুর চিত্র প্রতিকৃতি' ছবি নাই, যা ইসলাম' ধর্মে নিষিদ্ধ করেছে। : কিন্ত আমিতো হারাম আয়ে বাজার করি ' অমুসলিমদের মতো' জীবন যাপন করি ' এমন কি গান বাজনা ও করি.তবে ? :খান সাহাব ' আমি কেন এত গভীরে যাবো ? বিচার করবেন তো আল্লাহপাক। : যাক ' আমি তোমাকে আমার বাসায় খাবারের অনুমতি দিলেম।যখন খুশি তুমি আসা যাওয়া খানা পিনা করো' আমার কোনো অসুবিধা নাই। তবে খুব জানতে ইচ্ছা করছে ' তোমাদের জীবন যাপন' পদ্ধতি কোন ধরনের , মানে ঘর সংসার ইত্যাদি বিষয়। : আপনাকে আমি আগেই বলেছি আমাদের জিন জাতির ধরণ নিয়ে ' একটু চিন্তা করলে আপনি জবাব পেয়ে যাবেন। :মানে যখন যে বেশে যেখানে থাকো ' তখন সে বেশে ' সে প্রাণীর মতো' দিন যাপন খানা পিনা করো। কিন্ত তোমাদের নিজস্ব বলে কিছু থাকবেনা' তা কি করে হয় ? : আমাদের জীবন বৈচিত্র্যের আরো অনেক কথা আছে ' আপনাকে আমি পরে অন্য একদিন বলবো। আমরাও নিজ বেশে' নিজ দেশে পরিবার' পরিজন নিয়ে একত্র হই। : তোমাদের দেশ বা অঞ্চল কোথায় ? : কোহেকাফ নগর। : বিস্তারিত বলো' এ নগর সম্পর্কে যেমন জেলা, এলাকা। : খান সাহাব' এই বিষয়' বলা যাবে না ' কারণ ' গোপনীয় বলে। :শাহাবাজ ' আমার শিসমহল নিয়ে তোমার পরিকল্পনা কি ? আমি বলতে চাই - তোমার নক্সার সম্পর্কে। :এখনো নক্সা করিনি ' তবে কি এখন আমি মিশর যাবো' মনের মতো' একটা মহলের খোজে ' কি বলেন ? : যাও ' তবে তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে কিন্ত। : খোদা হাফেজ। : খোদা হাফেজ।
কারেকশন : বাদ পড়েছে প্রথম পারা- আর ঠিক এমনি সময় আকস্মিক ভাবে চিকন নাকি সুরের একটা কন্ঠ আমাকে বোকা বানিয়ে দিলো। উর্দু ভাষাটা ডান দিকের কমলা রঙের দেয়াল থেকে বের হয়েছে এবং আমি নিশ্চিত কন্ঠ'টার মালিক কোনো মানুষ নন। তাহলে কে ? উর্দু ভাষা' আমি বলতে না পারলেও ভালো আন্দাজ করতে পারি। তবে তার সাথে আমার যে কথা বার্তা ' তা আমি আপনারদের বাংলাতে বলবো। ভুল বললে আপনারা হাসবেন তো; তাছাড়া আমি আবার খুব লাজুক মানুষ। তারপরে.... আমি জিন শাহাবাজ মালিক। ..ঠিক আছে।
কোহেকাফ নগরঃ জিনদের নগর কোহেকাফ নিয়ে'আমার কৌতুহল অনেক অনেক দিন আগে থেকে এবং এখনো আমি প্রকৃত তথ্য' সংবাদের প্রতীক্ষা করি। কিন্ত কে দেবে এই তথ্য ? মানুষ না জিন ? আমি জানিনা। এবং অবশেষে ইন্টারনেট' দিলো কিছু তথ্য' যা একদম মন্দ বলা যাবে না কোনমতেই। বিষয়টির লেখকের নাম ' হাতাশি। সূচনা : অন্তত দশ লক্ষ পুর্বপুরুষ আগের ইতিহাস! যখন জাগতিক মহাবিশ্বগুলিতে হিউম্যান, জাইন এবং রোবট নামে তিনটি আল্ট্রাসুপার সেন্টিয়েন্ট সম্প্রদায় রাজত্ব করে আসছিলো ।আর প্রযুক্তি, সর্ব প্রকার জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং ক্ষমতার শীর্ষে পৌছে গিয়েছিলো তারা। এই ইতিহাস ভিত্তিক সিরিজে তিনটি আল্ট্রাসুপার সেন্টিয়েন্ট ছাড়াও আরো বেশ কিছু সেন্টিয়েন্ট সম্প্রদায় নিয়েও আলোকপাত করা হয়েছে। কিন্তু এই কোহেকাফ নগর মুলত একটি ডিভাইন এলায়েন্স সিরিজ (দ্যা সিরিজ – DA Series) নামে পরিচিত যা মুলত জাইন জাতির বিস্ময়কর ইতিহাস এর গল্প মহাকাব্যিক ধাঁচে বর্ননা করা হয়েছে। কোহেকাফ নগর বা অডাসিটি (AudaCity) হচ্ছে জাইন সম্প্রদায়ের হার্ট- কেন্দ্রবিন্দু – তাদের মাদার ইউনিভার্স। এই কোহেকাফ নগর থেকেই জাইন জাতি সমস্ত মহাবিশ্বগুলিতে বিস্তার লাভ করেছিলো। এই সিরিজটি শুরু হয়েছে মানুষ সম্প্রদায় মহাবিশ্বের একটি এম্পায়ারের কিছু বর্ননা দিয়ে এবং ধীরে ধীরে সিরিজটি কোহেকাফ নগরের মধ্যে যাত্রা করে। মহাবিশ্বের সাহিত্য জগতের ইতিহাসে এ যাবতকাল পর্যন্ত যতগুলি সিরিজ, গল্প, উপন্যাস, মহাকাব্য এবং গবেষনা ইতিহাস লেখা হয়েছে তার মধ্যে এই কোহেকাফ নগর নামের ডিভাইন এলায়েন্স সিরিজটি সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সমস্ত সাহিত্য ধারার মধ্যে ব্যতিক্রম। যাইহোক, দেখা গেল বিজ্ঞান প্রযুক্তি, সর্ব প্রকার জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং ক্ষমতার শীর্ষ বলতে কিছু কিছু নেই। এটা একটা চলমান এবং ক্রমান্নোত উন্নতির একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া আর তাই আমরা এখনো ক্রমাগত ভবিষ্যতের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি এবং দিনদিন উন্নত থেকে উন্নতর হচ্ছি। আমরা জানি না এর শেষ কোথায়, কোথায় আমাদের শেষ যাত্রা, োথায় আমাদের থামতে হবে। (কিছু অংশ )