ওয়ান্টেড ->WANTED (DEAD or, ALIVE)৷>>>>৭ম/শেষ পর্ব। একে ধরিয়ে দিন। ( জীবিত কিনবা মৃত) ||||||||||||||||||||||| (পশ্চিমা কাহিনীর ধরনে) ||||||||||||||||||||||| কোর্ট বসতে বসতে সকাল সাড়ে ১০টা বাজলো। ম্যানেজমেন্টঃ ||||||||||||||||||||| জজ- ০১ জন। জুরি-০৪ জন। সরকারী উকিল- ০১জন। বেসরকারি উকিল- ০২জন। রেকর্ডার ম্যানুয়েল - ০১জন। শেরিফ আর ডেপুটি-০২ জন সর্বমোট -১১জনের একটা টিম। ধৃতব্যক্তি : ১ জন। অভিযোগ : রাসলিং এবং খুন। অপরাধ স্পট : পদুয়ার তেয়ারী হাট। জেরা শুরু হওয়ার অল্পক্ষনের মধ্যেই অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যের কারণে আদালতে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। জজ হাতুরি ঢুকায়ে পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করেন। অত:পর জজ তাঁর জুরি বোর্ডের সাথে পরামর্শক্রমে মামলার রায় ঘোষণা করেনঃ 'যেহেতু অভিযুক্ত ব্যক্তি শ্রেফ একজন ভাড়াটিয়া এবং সার্কেল ওয়াই অপরাধের মূল হোতা’ সেহেতু সার্কেল ওয়াই’এর মালিকের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হইলো। অন্যদিকে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে লঘুদন্ড হিসাবে ৩৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হইলো। এই কোর্ট আদেশ কার্যকর করার জন্য এখানকার শেরিফের নেতৃত্বে একটি দল চুনতির শেরিফের সাথে যোগাযোগ করিবে এবং তার পরবর্তী পদক্ষেপ দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী গ্রহণ করা হইবে'। শেরিফকে ধন্যবাদ জানিয়ে যখন ক্যাম্পে ফিরে আসলাম তখন বেলা ৩টার মতো। প্রথমেই লাঞ্চ তারপর অন্য ভাবা ভাবা যাবে। কিন্তু লাঞ্চ শেষ হবার আগেই আঙ্কেল জনি এসে সংবাদ দিলো রাত ১১ টায় দোহাজারীতে চট্টগ্রামগামী মালগাড়ীটা আসছে। তার মানে এক্ষুনি পুরা পালটা ড্রাইভ না করলে রাত ৮টার আগে কিছুতেই দোহাজারী পৌছানো যাবে না। অবশেষে অনেক কসরত করে গরুর পালটা মালগাড়ির বগিতে তোলা হলো। রাত ১ টায় ট্রেনটা ষোলশহর আসতেই রেলের ইঞ্জিনিয়ার এসে জানালেন- ইঞ্জিন ত্রুটির কারণে ট্রেন আর সামনে যাবেনা। কি আর করা! মালগাড়ি থেকে গরু নামানোর জন্য কাউহ্যান্ডদের তাগাদা দিতেই অতি উৎসাহী কাউবয়রা তখুনি সিঁড়ি পেতে দিয়ে গরু নামানোর কাজ শুরু করে দিলো। গরুর পাল নিয়ে সবে রাস্তায় এসেছি ঠিক তখুনি দু’জন অশ্বারোহী আমাদের পথ আটকালো। ঃকোথা থেকে আসা হচ্ছে শুনি? ঃ তার আগে বলো তোমরা কারা? ঃ আমি ডেপুটি মার্শাল পল আর ও আমার সহকারী। ঃ আমরা চুনতী ডাবল ডায়মন্ড র্যাঞ্চ থেকে এসেছি,সাথে পাঁচ হাজার গরুর একটা পাল আছে। আশা করছি ভাল দাম পাবো। তুমি কি বলো মার্শাল? ঃ তোমাদের সাথে নিশ্চয়ই র্যাঞ্চ মালিকের বিক্রয় অনুমতি পত্র আছে? ঃ -অবশ্যই। ঃ দেখি দেখাওতো। অনুমতিপত্রের নিচে লূনার স্বাক্ষর দেখে আনন্দে লাফিয়ে উঠলেন ডেপুটি। ঃ আরে এতো দেখছি আমার কাজিনের মেয়ে! এরপর আরো অনেক কথাই হলো। তারপর ডেপুটির মধ্যস্থতায় পুরো গরুর পালটা বিক্রী করে রেঞ্জের নামে দাগকাটা চেকটা বুঝে নিলাম। পরের দিন ফিরতি ট্রেন ধরে দোহাজারী হয়ে যখন চুনতী এসে পৌছলাম তখন সবে সন্ধ্যা নেমেছে। পাঞ্চাররা সবাই ক্লান্ত,প্রত্যেকের মুখে লম্বা লম্বা দাঁড়ি, ময়লা কাপড়। ব্লু জিনস্ ধূলোতে বিবর্ণ দেখাচ্ছে,রোদে জ্বলা হ্যাট, পায়ের বুটের সামনের অংশ নেই বললেই চলে। এই অবস্থায় কেউই ভদ্র মহিলার সামনে যাবার জন্য রাজি হলো না। তাই তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্তে র্যাঞ্চে না গিয়ে সদলবলে কাউবয়তে ঢুকে পড়লাম। পরিকল্পনা হচ্ছে- পেট পুঁজোর পরে ক্যাটস্ এ গিয়ে সবাই ক্ষুরকার্য শেষে স্নান করে গেট স্মার্টে জিন্স আর বুট, ক্যাপ বদলাবো। অবশ্য ড্রেসের সিদ্ধান্তটা র্যাঞ্চের পক্ষ থেকে আঙ্কেল জনিই ঘোষণা করেছেন। রেঞ্জে ফিরতে রাত দশটা বেজে গেলো। কাউবয়রা সবাই সরাসরি ব্যাঙ্ক হাউজে চলে গেলো, শুধু আঙ্কেল জনি আর আমি গেলাম বসের কাছে। রিপোর্ট করে চেকটা বুঝিয়ে দিতে হবে। ঃ ম্যাম ভিতরে আসতে পারি? ঃ শিওর। আমি আসলে তোমাদের অপেক্ষাতেই বসে আছি। এতো দেরী করলে কেন? চোখে মুখে খুশী উপচিয়ে পড়ছে। তারপরেও যে, বহু কষ্টে আবেগ দমিয়ে রাখছে তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। ঃ ম্যাম পাঞ্চারদের একটু আনন্দ করার সুযোগ দিলাম। ঃ ওকে। আমারই বরং তোমাদেরকে রিসিভ করার জন্য বনপুকুর পর্যন্ত যাওয়ার দরকার ছিলো। কিন্তু কি করবো বলো, বিকাল থেকে শরীরটা ভীষণ খারাপ লাগছে। ঃ থ্যাক ইউ ম্যাম। এ নাও তোমার র্যাঞ্চের নামে টাকার চেক আর ডেপুটি মার্শাল পলের চিরকুট। সে নাকি সম্পর্কে তোমার মামা। ঃসত্যি মিষ্টার হেনরি তোমাদের কাছে আজীবনের জন্য কৃতজ্ঞ হয়ে রইলাম। যদি এই ড্রাইভটা সফল না হতো তবে আমি শেষ হয়ে যেতাম। কিন্তু কষ্টা আর রাষ্টির মৃত্যুর জন্য আমার নিজেকেই দায়ী মনে হচ্ছে। ঃ শোন মিস, জন্ম মৃত্যু বিধাতার হাতে। আমি রাষ্টির মুখে তার মায়ের গল্প শুনেছি, তিনি নাকি আজিজ নগরে থাকেন। আর কষ্টা তো একজন এতিম। ঃ দেখো যদি রাষ্টির মার সন্ধান পাও তবে উনাকে আমি এক লক্ষ টাকা দেবো। ঃ ওকে ম্যাম। আমি অবশ্যই খোঁজ নেবো। পরদিন লুনাকে নিয়ে রাইড করতে বেরিয়েছি তখন পথে কেইনের সাথে দেখা হলো। তার মুখে শুনলাম কিছুক্ষন আগে কাউবয়তে এলি খুন হয়েছে। খুনী নাকি এখনো কাউবয়তেই আছে অথচ কেউ তাকে আটকাতে সাহস করছে না। ঃ শেরিফ কি করছে? ঃ তিনি তো গত পরশু সাবরাং (টেকনাফ) গেছেন। ঃ ডেপুটি রয়? ঃ মুরগীর বাচ্চার মতো সে গর্তে লুকিয়েছে। এলির মায়াময়ী চেহারাটা মনে আসতেই কখন যে কালো ঘোড়াটার পেটে জোরে স্পারের খোঁচা দিয়েছি তা আমি নিজেও জানি না। দশ মিনিটের মধ্যে কাউবয়ের দরজায় এসে যখন দাঁড়ালাম তখন বলতে গেলে রাস্তায় অনেক লোক। কিন্তু সবাই নির্বিকার! এর মধ্যে কোমরে ডাবল গান নিয়ে কুৎসিত চেহারার একজন লোক এসে বারান্দায় দাঁড়িয়ে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে গলা উচিয়ে বলতে লাগলো- ঃ তোমরা হয়তো জানোনা সার্কেল ওয়াইয়ের বস মিষ্টার অষ্টিন একজন বিশিষ্ট ভদ্রলোক। তিনি তোমাদের এলাকাতে অনেক উন্নয়ন করেছেন। উনার পরিকল্পনাতে আছে- এই এলাকাটাকে উনি মডেল প্যালেস বানাবেন। অথচ এই বিশিষ্ট ভদ্রলোক আজ শুধুমাত্র ডাবল ডায়মন্ডের কারণে ফেরারি রয়েছেন। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কোর্টে আত্মসর্মপন না করলে তিনি আউট-ল হয়ে যাবেন। তোমরা কি তা চাও? নিশ্চুপ জনতা। কিন্তু আমি নিশ্চুপ থাকি কিভাবে ? ঃ এই ব্যাটা ভাড়াটে খুনী, মিথ্যুক আজ আমি তোকে পরপারে পাঠাবো। এলির মতো একজন সম্ভ্রান্ত মহিলাকে তুই খুন করেছিস, ডাবল ডায়মন্ডের ফোরম্যান উইলিয়াম উইলসন,রাস্টি,কষ্টা সহ আরো কয়েকজন খুন হয়েছে যে অষ্টিন এর হাতে তুই এসেছিস তার পক্ষে গলাবাজি করার জন্য? তোর সাহস দেখে আমি প্রশংসা না করে পারছি না। ঃ তুমি কে? ঃ তুই কে? ঃ আমি ফারাঙ্গার ওরাঙ্গা। আমার পিস্তল তোমার মতন বেয়াড়া ২১ জনের চিহ্ন বহন করছে বলেই আচমকা গুলি করে বসলো পিস্তলবাজ। এদিকে আমি রিফ্লেক্স বশত: বাম দিকে ড্রাইভ দিয়ে মাটিতে পড়ার আগেই কোমরের কাছ থেকে পর পর দুটি বুলেট পাঠিয়ে দিয়েছি। একটি গানম্যানের পায়ের পাশে মাটিতে এসে গাঁথলেও অপরটি তাকে রেহাই দিলো না। কপালে তৃতীয় নয়ন নিয়ে সে যখন ধরাশায়ী হলো তখন সবাইকে শুনিয়ে একটি কথা মাত্র উচ্চারণ করলো- ‘এ অসম্ভব! আমাকে কেউ হারাতে পারে না’। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে স্বয়ং জজ এবং ডেপুটি শেরিফ রয় এসে উপস্থিত হয়েছেন। আমিও চিন্তা করে দেখলাম যেহেতু এখানে আমার দায়িত্ব শেষ তাই আনুষ্ঠানিকভাবে আমার পরিচয়টা সবার কাছে প্রকাশ করতে পারি। তাতে একদিকে গর্ভণরের সুনাম যেমন বাড়বে অন্যদিকে তেমনি এই এলাকার কেউ আর অপকর্ম করতে সাহস পাবেনা। ঃ শোন সবাই- আমি গর্ভণর ব্ল্যাকের আদেশপ্রাপ্ত হয়ে এই এলাকাতে এসেছিলাম। আশা করছি, আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি৷ আর এক্ষুনি আমি এই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে চাই, তোমার কি কিছু জিজ্ঞাসা করার আছে? ঃ তারমানে তুমি বলতে চাইছো তুমি একজন রেঞ্জার। ঃ অস্থায়ী রেঞ্জার। রেঞ্জার হও আর যেই হও আমি কিছুতেই তোমাকে যেতে দেবো না। আমাকে জড়িয়ে ফুঁফিয়ে কেঁদে উঠলো লুনা।ঠিক তখুনি জনতার মধ্য থেকে গভর্ণরের বজ্র কন্ঠ ভেসে এলো- ঃ আমি আদেশ করছি হেনরি তুমি ডায়মন্ড কর্ত্রীকে জীবনসঙ্গী করে নাও- নইলে মন ভাঙ্গার দায়ে এক্ষুনি তোমাকে অ্যারেস্ট করবো। সমবেত জনতার মুহুমুহু তালির মধ্যে হঠাৎ আবিষ্কার করলাম লুনাকে বুকে নিয়ে আমি খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। - শেষ -
Make sure you enter the(*)required information