প্রবঞ্চক-ঠগী পর্ব-১ (প্রথম প্রকাশ চুনতি ডট কম-২০১২ খৃস্টাব্দ) কোড: বাসন মেজে আন- |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||| এক দশক আগে ঠগী' নামের বিষ্ময়কর,বিরল একটা বই আমার হাতে এসেছিল যেখানে ঠগ আমির আলী' নিজেই নিজের অপরাধের কথা অকপটে স্বীকার করেছে- কেবলমাত্র সম্পদ আত্মসাত,লুঠের জন্য নিষ্টুরভাবে মানুষ খুনকে সে তার পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছে,তাও সে একা হলে একটা কথা ছিল কিন্তু এর পিছনে ছিল মানুষরুপী বিশাল একটা হায়নার দল-গোষ্টী-ঠগী। ঠগী শব্দটি সংস্কৃত ঠগ শব্দ থেকে এসেছে।য়ার অর্থ ঠক বা প্রতারক বা প্রবঞ্চক বা ধূর্ত।উওর প্রদেশের মানুষরা যাদের নামকরণ করেছিল-ফাসিঁগর হিসাবে। যদিও ঠগীদের উতপত্তি অস্পষ্ট তবুও ধারণা করা হয়- সতেরো এবং আঠারো শতকে বিশেষ করে কোম্পানী শাসনের প্রতিষ্ঠা লগ্নে ঠগীদের উদ্ভব ঘটে। ঠগীরা নওয়াবী আমলের শেষ ও ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্টার ক্রান্তিলগ্নে ক্রমানয়ে পুরা ভারতে তাদের কার্যপরিধি বিস্তার করেছিলো। গুপ্তচর বাহিনীর মাধ্যমে পর্যাপ্ত তথ্য নিয়ে নিজেদের মাঝে শর্লা পরামর্শ শেষে ঠগীরা শিকারের পিছু নেবার পূর্বে নিজেদের দলকে ক'ভাগে বিভক্ত করে নিতো। তীর্থ যাত্রী বা অন্য যে কোন কাফেলার সাথে হরেক বেশ চাতুরীতে ঠগীরা মিশে যেতো এর পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে কাফেলার প্রতিটি সদস্যকে বিনা রক্তপাতে গলায় কেবল রুমাল কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করতো। হলুদ রঙের সেই রুমালকে তাদের ভাষায় বলা হতো- পেলহু বা সিকা! একজন শিকারকে ৩ জন ঠগী মিলে হত্যা করতো, কোনভাবে শিকার ফসকে গেলেও অদূরে ওতপেতে থাকা আরেকদল ঠগি তাদের খুন করতো! ঠগীরা মুসলিম,হিন্দু,শিখ হলেও তারা সবাই ছিল হিন্দু দেবী কালীর ভক্ত। তাই প্রতি অভিযানের আগে পরে বাতাসে গুড় উড়িয়ে তারা জয় মা ভবানীর জয় বলতো।এমনকি, হত্যাকান্ডের পর ঐ সব কবরের উপর বসেই দেবী বন্দনা শুরু করে দিতো- জয় মা ভবানীর জয়! ----------------------------------- ইন্টারনেটের বদৌলতে পরবর্তীতে এই হিংস্র ঠগীদের কার্যকলাপ আর বিশেষ আরো কিছু কোড সম্পর্কে ধারণা লাভ করেছি, যা তারা শিকারের সুবিধার জন্য দায়িত্ব ও পদে বিন্যাস করে নিয়েছিলো: ১. বাসন মেজে আন- শিকার যাত্রা। ২. ঝিরণী- হত্যার প্রস্তুতি। ৩.তামাকুলাও- হত্যার আদেশ। ৪. সোথারা- সম্ভাব্য শিকার চিহ্নিত করা। ৫.তিলহাই- আইনের লোকের উপর নজর রাখার দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তি। ৬. নিসার- নিরাপদ জায়গা দেখে যারা তাবু গড়তো। ৭. বিয়াল- কবর খননকারী। ৮. চামোচি- শিকারকে যে ধরে রাখতো। ৯. চুমোসিয়া- শিকার যাতে বাঁধা দিতে না পারে সেই দায়িত্ব যার উপর থাকতো। ১০. চুমিয়া- শিকারকে যে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেবে তার ছদ্মনাম। ১১.ভোজারা- মৃত দেহগুলো যারা কবরে নিয়ে যাবে। ১২. কুথাওয়াজারা- তাদের দায়িত্ব ছিল দেহগুলোর হাটুঁ ভেঙে থুতনির সংগে ভাজঁ করে কবর দেওয়া। ১৩. ফুরকদেনা- মৃতদেহের পাহারাদার সর্বশেষ হত্যাকান্ডের জায়গাটা সাফসুতরো করার দায়িত্ব ছিল- ফুরজানাদের উপর! চলবে-
Make sure you enter the(*)required information