চুনতী ব্রাক্ষণ পুকুর। শেরিফ অফিসের সামনে প্রচুর লোক সমাগম হয়েছে। বিষয়টা কি? কালো ঘোড়াটার পেটে হালকা স্পারের খোঁচা দিতেই লাফিয়ে সামনে এগোল। বড় বড় তিন তিনটে রিওয়ার্ড পোষ্টার: ১. রাসলার লাকিকে ধরিয়ে দিন। জীবিত বা মৃত। নগদ পুরষ্কার ১ লক্ষ টাকা। পুরো পোষ্টার জুড়ে এক ভয়ংকর যুবকের ছবি। ২. আউট-ল রাসেলকে জীবিত বা মৃত ধরিয়ে দিলে নগদ পুরষ্কার ২ লক্ষ টাকা। অত:পর যথারীতি পোষ্টার জুড়ে শুকনো লিকলিকে এক যুবকের ছবি। কোমরে সিক্স গান' মুখেতে দুর্বিনীত হাসি। ৩. বাউন্টি কিলার জেমস্কে জীবিত বা ধরিয়ে দিলে নগদ পুরষ্কার ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু পোষ্টারে তার ছবি নেই। বর্ণনায় বলা হয়েছে- সে অত্যন্ত নাদুস নুদুস শরীরের অধিকারী। বয়স আনুমানিক ৩৫। গায়ের রং শ্যামলা। সারা মুখেতে বষন্তের দগদগে দাগ। অপরাধ- সে একজন নিরীহ অস্ত্রহীন লোককে পিছন থেকে গুলি করে হত্যা করেছে। পিছনে খস্খসে আওয়াজ হতে পাঁই করে ঘুরে দাঁড়ালাম। ইতিমধ্যে অভ্যাস বশত: হাতে বেড়িয়ে এসেছে' .৪৫ ক্যালিবার। স্বয়ং শেরিফ আমার সামনে দাঁড়িয়ে! : কে তুমি অপরিচিত যুবক? এখানে তোমার কি কাজ' জানতে পারি নিশ্চয়ই? : আমি একজন ভবঘুরে... (চলবে)
দেখো মিস্টার ভবঘুরে’ আমার এলাকায় আমি আর কোন গোলমাল চাই না। এক্ষুনি তুমি চুনতী ছাড়ছো’ আর মনে রেখো লোহাগড়া থেকে হারবাং পর্যন্ত এলাকাটা আমার। : সরি শেরিফ’ আজ কোন মতেই আর জার্ণি করা সম্ভব নয়' আমার বিশ্রাম দরকার। নইলে অবলা প্রাণীটাসহ শ্রেফ মারা পড়বো। তুমি কি তা চাও? : অনেক লম্বা পথ পাঁড়ি দিয়েছো মনে হচ্ছে? : হ্যাঁ, মি: ল’ পটিয়া চক্রশালা থেকে আসছি। তবে তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো পিছনে কোন কালো ইতিহাস নাই। আর আইনও আমাকে খুঁজছে না। : কাজ খুঁজছো না কেন? : আপাতত ভ্রমণের মধ্যে আছি। : ঠিক আছে। তোমাকে আগামীকাল দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিচ্ছি। এরমধ্যে তুমি চুনতী ছাড়ছো। তবে সাবধান আশেপাশের কোন পাহাড়ে আত্নগোপন করার চেষ্টা করবে না। তাহলে কিন্তু সন্দেহজনক ব্যক্তি হিসাবে তোমাকে গ্রেফতার করা হবে। মনে রেখো জর্জ’ ব্রাউন এখন বার্মা শহরে আছেন। উনার ফিরতে বেশ কিছুদিন লাগতে পারে। : শেরিফ’ তুমি আগে কি করতে ? মানে, আইনকর্তা নির্বাচিত হবার আগে ? : একজন শ্রেফ হোটেল জুয়াড়ী’ তবে সৎ। : কিন্তু জুয়াড়ীরা তো এতো কথা বলে না’ নাকি তুমি উকিল ছিলে? : তোমার ধারণা ভূল’ আমি সবসময় ঝেড়ে কাশতে পছন্দ করি। : ওকে ল-ম্যান’ এখন বলো এখানকার ভালো সেলুন কোনটা? আমার গরম গরম কাবাব আর সিম দরকার। সাথে ডবল ডিমের পোচ আর এক মগ কড়া তেতো কফি। : তুমি কাউবয়’তে যেতে পারো। অল্প খরচে সব পেয়ে যাবে। বিধবা এলি’ সেলুনটা চালাচ্ছে ভালো। ভালো কথা’ তাকে তুমি আমার নাম বলো’ তাহলে বিনা পয়সায় হোটেলের পিছনে খড়ের গাদায় নিশি যাপন করতে পারবে। : থ্যাংকউ শেরিফ’। তুমি লোকটা সত্যিই ভালো। : আগন্তুক তোমাকেও ধন্যবাদ। (চলবে)
গুরুকবি, আরেকটা টান টান গল্পের গন্ধ পাচ্ছি... আপনি প্রতিদিন একটু একটু করে সীমানা ছাড়ছেন! ‘‘আউট-ল রাসেলকে জীবিত বা মৃত ধরিয়ে দিলে নগদ পুরষ্কার ২ লক্ষ টাকা। অত:পর যথারীতি পোষ্টার জুড়ে শুকনো লিকলিকে এক যুবকের ছবি। কোমরে সিক্স গান' মুখেতে দুর্বিনীত হাসি।’’ এই রাসেলকে আমি ধরিয়ে দিতে পারব।২ লক্ষ টাকা দিবেনতো? হাহাহাহাহা... অপেক্ষায় আছি। শুভকামনা...ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ কবি ভাই। আবারো অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কষ্ট করে পড়েছেন এবং উপদেশ দিলেন' ধন্য হলাম আমি। পুরষ্কারের টাকা পেতে হলে শোডাউনে যেতে হবে। তাও একজন বেপরোয়া পিস্তলবাজের সাথে। পারবেন তো? যদি পারেন তখন আপনাকে পুরষ্কারের টাকাটা শেরিফ তার ফান্ড থেকে প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন। তৃতীয় কারো সুপারিশ বা হস্তক্ষেপের প্রয়োজন পড়বে না। আমি কবি নই। লেখক হবো সে যোগ্যতাও নেই। তবে আপনি কবি মানুষ' ইচ্ছা করলেই জমকালো কবিতা উপস্থাপন করতে পারেন যখন তখন। শুনেছি মিয়া তানসেন সুর রাগ দিয়ে বৃষ্টি নামাতেন। আমি বিশ্বাস করি- আপনার কবিতা বধির স্থবির বন্ধ্যা সময়তে প্রাণ সঞ্চার করে। অত:পর সমৃদ্ধ হয় বর্তমান...। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সকল পাঠকের তরে...।
কাউবয় সেলুনটা পুরোটা গাছের খুঁটি আর বড় বড় তক্তা দিয়ে তৈরি। তবে অন্য আর দশটা ওয়েষ্টার্ণ ধাঁচের সেলুনের সাথে কাউবয়ের পার্থক্য হচ্ছে- এখানকার খাওয়া দাওয়া এবং পরিবেশনায় এক নিপুণ শৈল্পিকতা কাজ করে। তাছাড়া, সেলুন মালিক এলি নিজেই একজন খুব ভালো রাধূঁনী এবং বিনয়ী ভদ্রমহিলা। ক’দিন আগে ভারত থেকে খোদ ইন্ডিয়ান মার্শাল এসে এই সেলুনের অতিথি হয়েছিলেন। যাবার সময় এলিকে জড়িয়ে ধরে বার বার কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। মেহগনি গাছের টেবিলটাতে ওরা কয়েকজন। দর্শকও রয়েছেন কয়েকজন। আশেপাশের ছড়ানো ছিটানো আরো তিন চারটে টেবিল থেকে আলাদা করা যায় না এদেরকে। সেলুনের অতি পরিচিত দৃশ্য এটা। ধূমসে পোকার চলছে সবকটা টেবিলেই। কোনার টেবিলটার পাশে গোবেচারার মতো গিয়ে বসলাম আমি। কফির অর্ডার দিলাম প্রথমে। একজন কাউবয়কে দেখতে পাচ্ছি- আমার পাশের দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আরেকজন স্বল্প পোষাকের সেলুন গার্ল তাকে দেখে উল্লসিত হয়ে পাশে এসে কাঁধে হাত দিলো। : ডার্লিং, একটা ড্রিঙ্ক খাওয়াতে হবে কিন্তু। হঠাৎ করেই ফায়ারিংটা শুরু হলো। নরক ভেঙ্গে পড়েছে কাউবয় সেলুনে। (চলবে)
কবি ভাই, এই ওয়েষ্টার্ণ ধাঁচের কাহিনীটিতে আমি কিছু পাদটীকা দিলে আপনারা কি কিছু মনে করবেন? যেমন - মার্শাল / শেরিফ / পসি / রাসলার / আউট-ল / বাউন্টি হান্টার / সেলুন / বারটেন্ডার / ঘোড়ার জাত বর্ণনা ওয়্যাগন / অ্যামবুশ / রেকি / রেশন / সাপ্লাই / মাইনার / ফার্মার / হার্ডওয়্যার ষ্টোর ইত্যাদি ইত্যাদির। আপনার মতামতের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।
গুরুকবি, অনেক ধন্যবাদ। শেষ থেকে শুরু করি। যে শব্দগুলোর কথা বললেন, ওসব হলো শক্তি... বিশেষ করে যখন পশ্চিমা গল্প পড়তাম তখন ওই শব্দগুলো খুব টানত। আপনার গল্পের কাহিনীর সাথে এই শব্দগুলো একটা জোরালো-মাত্রার আবহ আনছে। আর এক জায়গায় উপদেশ এর কথা বললেন। আকূল আপত্তি জানাচ্ছি শব্দটাতে। অনুগ্রহপূর্বক শব্দটা তুলে নিবেন। পাঠকের মতামত শব্দটা যুতসই মনে হয়। আর পুরস্কার! এম্ম... এতো দেখছি এম,এল,এম জাতীয় পুরস্কার! আধুনিক নগর সভ্যতার প্লে-জোনের মতো। লেভেল পার করে যেতে যেতে শেষে পুরস্কারের তীব্র বাসনায় সবই হারায়...হাহাহাহ্হ্... যাই হোক আমি প্রস্তুত। বেপরোয়া আমিও কম নই। পুরস্কারের আশায় নয়। কবি শামসুর রাহমানের লেখার মতোঃ ‘‘এখনও দাঁড়িয়ে আছি, এটাই আমার এক ধরনের অহংকার...’’! অন্তত এই কথাটা জানান দিতে। আর শর্ত হলো যদি আমি শোডাউন ডুয়েল এ জিতি তবে আপনার শেরিফ সহকারে ওই বেপরোয়া পিস্তলবাজকে আমার সাথে শব্দের গোলাগুলিতে নামতে হবে। ওরা এতে রাজি আছেন কিনে জেনে নিবেন। হাহাহাহ্হাহ্... পরিশেষেঃ আপনার গল্পের প্লটটা এখনো ধরতে পারিনি,সময়ও আসেনি, অপেক্ষা করছি । তবে সেটিংসটা (স্থান সহ) মারহাবা হয়েছে...!!! আবারো লাল নিশান উড়াইয়া দিলাম... মেনে নিলাম সম্পর্ক... খাতির জেনে নিবেন। মেনে নিবেন অধমকে। সালাম... আদনান সাকিব।
Srishtishil Dujon Mohan Manusher Alapcharita’o Etota Pranomoy Hote Pare !!!!! Subhanallah…. Agie Jan Apnara
কবি ভাই, আপনাকে আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। অপূর্ণ ছন্দময় বাক্য সবের লাগি। আমি মনে করি কাহিনীটির সার সংক্ষেপ পূর্ব জানান দিলে গল্পের স্বাদ নষ্ট হয়। আপনি কবি। আপনি শিল্পী। এবঙ আপনার কারুকার্যময় কিছু পদ' আমাকে মুগ্ধ করেছে পুন:বার। ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ আশিক মামা। আপনার কাছেও আমার অনেক ঋণ। আমি অতি তুচ্ছ একজন মানুষ। তবুও আপনি আমার প্রায় লেখা পড়েন' উৎসাহ দেন এরচেয়ে বড়ো আর কি হতে পারে? ধন্যবাদ।
দয়া করে পড়ূন : অপূর্ব ছন্দময় বাক্য সবের লাগি। অপূর্ণ ছন্দময় বাক্য সবের লাগি - এর স্থলে।
গানম্যান মোট তিনজন। একজন দরজা কাভার করে দাঁড়িয়েছে। আর একজনের পিস্তল থেকে নীল ধোঁয়া বেরু্চ্ছে। আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলো যে কাউবয়টি সে এখন মাটিতে পড়ে আছে। তার বুকেতে লাল গোলাপ ফুঁটেছে। তৃতীয় গানম্যান বারকিপারকে উদ্দেশ্য করে বলছে- এলি’ ডাবল ডায়মন্ডকে বলো- গয়ালমারার ঘাসের জমিগুলো যাতে উম্মুক্ত করে দেয়। নইলে ডায়মন্ডে- রক্তের নদী বয়ে যাবে। ক্লিয়ার? পরমুহুর্তেই বন্দুকবাজের গুলিতে বারের উপর মুখ থুবড়ে পড়ল একটা বড় কুমড়োর মত ঝাড়বাতি। পিস্তলবাজ দেখছি এখন সরাসরি আমার টেবিলের দিকে এগিয়ে আসছে। : এই মিষ্টার উঠে দাঁড়াও। দেখেতো মনে হচ্ছে নতুন চিড়িয়া’ তা এদিকে কি করা হচ্ছে’ শুনি? : তোমাকে কৈফিয়ত দিতে হবে নাকি? : যদি বলি ঠিক তাই, কি করবে তুমি? : দেখতে চাও? পিস্তলবাজের হাত দেখছি মসৃণভাবে কোমরে নেমে যাচ্ছে। আর এক সেকেন্ড দেরি করলেই কপালে খারাবি আছে। একটু এগিয়ে গিয়ে ডান পায়ের সবুট লাথি হাঁকালাম তস্করের তলপেটে। হারামীর বাচ্চাটা পাঁচ হাত দূরে গিয়ে ছিটকে পড়তেই তাকে নিরস্ত্র করলাম। এতক্ষণ এ্যাকশনের দ্রুততায় দুবৃর্ত্ত দু’জন নীরব ছিলো। প্রথম বুলেটটা এলো দরজার কাছ থেকে। মাথার তালুতে গরম ছ্যাকা দিয়ে পাশের দেয়ালে গিয়ে বিদ্ধ হলো। প্রচন্ড যন্ত্রণা উপেক্ষা করে সবে দাঁড়িয়েছি তক্ষুনি ডানদিকের নড়াচড়াটা ধরা পড়লো। কিন্তু ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বামকাঁধে বুলেটের কামড় অনুভব করলাম। মাটিতে শোয়াবস্থাতেই পর পর দুটি বুলেট পাঠিয়ে দিলাম। প্রথম বুলেটটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও দ্বিতীয় বুলেটটা খুনির কপালে লাল টিপ একে দিলো। এরমধ্যে বারের পিছন থেকে হঠাৎ করে শটগান হাতে বেরিয়ে এলো স্বয়ং বারকিপার – এলি। : এই তোমরা অস্ত্র ফেলে দাও। নইলে বুঝতে পারছো নিশ্চয়ই কি হবে? এতো কাছ থেকে শটগানের গুলি খেলে দু’টুকরো হওয়ার স্বাদ কারো নেই। দু’হাত মাথার উপরে তোলে বেরিয়ে এলো ওরা দু’জন। আর তক্ষুনি ডেপুটি শেরিফ রয় এসে তাদের হাতে হাতকড়া পড়ালো। এদিকে কখন যে, এলি আমাকে ব্যান্ডেজ করা শুরু করেছে আমি খেয়ালিই করিনি। : মনে হচ্ছে’ নিজের জীবনের তোয়াক্কা তেমন একটা করো না। তারমানে কাউকে তুমি আজো কথা দাওনি? : দেখ ম্যাম’ আমি একজন ভবঘুরে’ কোন মেয়ে আসবে আমার গলায় মালা পড়াতে? এখানে হচ্ছেটা কি? শুনলাম আমার কাউহ্যান্ড রেড খুন হয়েছে? এক অপূর্ব সুন্দরী স্বর্ণকেশী অষ্টাদশী পুরো সেলুনে আলো ছড়িয়ে দিলো। জীবনে আমি বহু সুন্দরী মেয়ে দেখেছি এমনটি কখনো নয়। (চলবে)
আর রেডের খুনীকে খুন করেছে এই সু-দর্শন যুবক। বলা যায়- তোমার ব্যান্ডের পক্ষে প্রতিশোধ নিয়েছে। : থ্যাংক ইউ ইয়ং ম্যান। আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ হয়ে রইলাম। ভালো কথা আমি লুনা ডাইস। তুমি? : আমি হেনরি টমাস। : হেনরি তোমাকে এক্ষুনি সাবধান হতে হবে। কারণ তুমি ওয়াই সার্কেলের গানহ্যান্ড বিগ-লাকীকে হত্যা করেছো। এর শোধ ওরা নেবেই। : তুমি আমাকে ঠিক কি করতে বলছো? পালিয়ে যাবো? সে আমার দ্বারা সম্ভব নয়। আর পিছনে শত্রু রেখে যাবো তেমন বোকাও আমি নই। : যাই বলো আমি তোমার কোন কথাই শুনছি না। আর তুমি আমার সাথে এক্ষুনি ডাবল ডায়মন্ড’এ যাচ্ছো। : জোছনা রাতে দু’জন চলেছি ডাবল ডায়মন্ড র্যা ঞ্জে। লুনার মেয়ারটা আমার কালো ঘোড়াটার পিছন পিছন আসতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। : আচ্ছা’ মৃত কাউবয় রেডের কি হবে? : তার ভার এলিই নিয়েছে। আন্ডারটেকারের খরচ আমি পরিশোধ করবো। গুলিটা এলো আচমকা। মাদি ঘোড়াটার পিঠ থেুকে থুবড়ে পড়লো’ ডাবল ডায়মন্ডের কত্রী। আলোর ঝিলিক লক্ষ্য করে পর পর দু’টো বুলেট পাঠিয়ে দিলাম। সাথে সাথে অ্যামবুশারের খিস্তি ভেসে এলো। পরমুর্হুতে ঝোঁপের মধ্যে পতনের শব্দ শুনে বুঝা গেলো’ ব্যাটা মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। কিন্তু এখন ওদিকটায় যাওয়ার চেয়ে লুনার অবস্থাটা জানা জরুরী। সে ঘোড়া থেকে পড়ে বাম পায়ে আঘাত পেয়েছে। অথচ সে মেয়ারটার পাশে বসে জিন আর অন্যান্য সরঞ্জাম খোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। : ম্যাম আমার পিছনে উঠে এসো’ জায়গাটা নিরাপদ মনে হচ্ছে না। লুনাকে ধরতে সবে ডানদিকে ঝুঁকেছি’ তখুনি গুলিটা আমার কানের পাশ দিয়ে বোলতার মতন পাগলা গুঞ্জন তুলে চলে গেলো। তার মানে অ্যামবুশার ব্যাটা রীতিমতো আধাজল খেয়ে নেমেছে। কিন্তু সে কি জানে সে কি করতে যাচ্ছে? খুন। তাও আবার অ্যামবুশ করে। তাও আবার একজন ভদ্র মহিলাকে। না ভারত বর্ষের আইনে তার কোন ক্ষমা নেই। তাৎক্ষনিক মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করলাম। কোমড়ের বামদিকের .৪৫ ক্যালিবারটা পর পর দু’বার কাঁশি দিলো। ঝোপ জঙ্গল ভেঙ্গে হুঁড়মুঁড় করে পড়লো মৃতদেহটা। কাছে যেতে দেখি সে আর কেউ নয় কু-খ্যাত আউট-ল রাসেল। যাকে ধরিয়ে দেবার জন্য নগদ ২ লক্ষ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু লাশের বদলে বাউন্টি হান্টারের মতন টাকা জেতার সে মানসিকতার মানুষ আমি নই। তাই লাশটা শুকনে খাবার জন্য ওখানেই ফেলে রেখে আহত লুনাকে নিয়ে ডাবল ডায়মন্ডের দিকে এগুতে থাকলাম। (চলবে)
ওহহহ্হ্!!! আউট-ল রাসেল কে হেনরি মেরে দিলো! আমিই তাকে নিজের হাতে শেষ করতে চেয়েছিলাম। হলোনা... যাক দেখি পরে কি হচ্ছে! নিশপিশ করছি... কোথায় যাচ্ছে ঘটনা...! ধন্যবাদ গুরুকবি... গল্পটা সেরাম এক্কান ঝাঁপ দিতাসে লাফাইয়া লাফাইয়া...
কবি ভাই, আবারো কৃতার্থ হলাম। লেখাটাতে অনেক বানানে ভুল হয়েছে। সরাসরি লেখাতে ছন্দের পতনও হয়েছে। তবুও আপনার মতন একজন পাঠকের দৃষ্টি পেয়েছি এ আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া। আসলে এ লেখাটা আমার জীবনের প্রথম ওয়েষ্টার্ণ ধাঁচের লেখা। তাই সকল পাঠকের কাছে অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তবে কথা দিচ্ছি ভবিষ্যতে আর এমন দু:সাহস করবো না। ধন্যবাদ সবাইকে।
সজারুমারার শেষ মাথায় ডাবল ডায়মন্ড। বিশাল কাঠের ফটকে যেতেই প্রহরী চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলো। : আগন্তুক ওখানেই দাঁড়াও আর গান থেকে হাত দূরে রাখো। বড় একটা কুপি হাতে এগিয়ে এলেন যিনি’ তিনি নিতান্ত একজন বয়স্ক ভদ্রলোক। আমার সাথে স্বয়ং কত্রীকে দেখে ভীষণভাবে চমকে উঠলেন। : সরি ম্যাম’ ফিরতে এতো দেরি হলো যে? : আঙ্কেল জনি’ আগে ভিতরে যেতে দাও। তারপর সব ঘটনা খুলে বলছি। পরমুহুর্তে পুরো উঠোন আলোতে ভরে উঠলো। ২০/২৫ জন বেপরোয়া কাউবয় লুনাকে ঘিরে দাঁড়ালো। এবার লুনা মুখ খুললো। : বয়েজ’ আমাদের রেডকে ওয়াই সার্কেলের বিগ লাকী খুন করেছে। আর এই ভদ্রলোক খুনীটাকে খুন করেছে। তোমরা শুনলে আশ্চর্য্য হবে খুনীরা নাকি আমাদেরকে বড় গলায় সার্কেল ওয়াই’র পক্ষে হুমকিও দিয়েছে। গয়ালমারার ঘাসের জমিনগুলোতে তাদের অশুভ দৃষ্টি পড়েছে। আমি চাই বিষয়টা দ্রুত নিশ্পত্তি করতে’ তোমরা কি বলো? : ম্যাম’ তুমি বললে আমরা জান দিতেও প্রস্তুত আছি। বক্তাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে সে নিশ্চয়ই র্যা ঞ্জের ফোরম্যান। : না’ মি: উইলসন। তোমরা কেউ গানম্যান নও। সবাই কাউবয়। তাছাড়া আমি রক্তপাতে বিশ্বাসী নই। বরং উপকৃত হবো আগামীকাল যদি তুমি লোহাগাড়া গিয়ে মেয়রকে বৈঠকে রাজি করাতে পারো। বলবে, আমি তাকে বিশেষভাবে দুই র্যা ঞ্জের বিদ্যমান বিরোধ মিটাবার জন্য অনুরোধ করেছি। : শিওর ম্যাম। হরিণের মাংস দিয়ে চমৎকার একটা ডিনার সারলাম। আর পাশে চাঁদের মতো সুন্দরী অষ্টাদশী লুনা ডাইস। নিজের প্রতি নিজেরই হিংসা হচ্ছে আমার। এতো সুখ ছিলো কপালে! ডিনার শেষে বাঙ্ক হাউস পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন ডায়মন্ড কত্রী। সবুট ঘুমিয়ে পড়লাম। মধ্যরাতে যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন ডাবল ডায়মন্ডে খোদ ইবলিস শয়তানরা মরণ নৃত্য শুরু করেছে। ঘুমের মধ্যেই মারা পড়লো চারজন পাঞ্চার। অবিরত গুলির শব্দ খিস্তি আর মরণ চিৎকারে নিমিষে ভারী হয়ে উঠছে র্যা ঞ্জ। তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে হেনরি হাতে কিচেনের পিছনে গিয়ে পজিশন নিলাম। কপাল ফেরে দুই তস্করকে দেখা মাত্র ঝেড়ে ফেললাম। অন্য দু’জন দুবৃর্ত্তকে দেখতে পাচ্ছি র্যা ঞ্জ হাউসের ভেতরে ঢুকার মরিয়া চেষ্টা করছে। রাইফেল তুলে একজনের পাচায় একটা বুলেট পাঠিয়ে দিলাম। অপরজন সাথে সাথে বামদিকে ড্রাইভ দিয়েছে। না এভাবে শত্রু নিধন করতে গেলে নিজেই অল্প সময়ের মধ্যে খরচ হয়ে যাবো। দ্রুত পজিশন বদলিয়ে আস্তাবলের পিছনে চলে আসলাম। ওখানেই র্যা ঞ্জের আরো দু’জনের সাথে চোখাচোখি হতে রাইফেল হাতে তিনজনেই সমানে ফায়ারিং শুরু করলাম। মজার ব্যাপার হচ্ছে’ তখুনিই কুয়োর আড়াল থেকেও আমাদের সাপোর্টে দুটি গান মেতে উঠলো। ঘটনাটা যেভাবে শুরু হয়েছিলো’ ঠিক সেভাবেই মুহুর্তের মধ্যে শেষ হয়ে গেলো। অবস্থা বেগতিক দেখে আক্রমণকারীরা সবাই আড়ালে সরে গেছে। তখুনি বোকার মতো শটগান হাতে র্যা ঞ্জ হাউসের সদর দরজায় এসে দাঁড়ালো র্যা ঞ্জ কত্রী লুনা। তিনহাত দূর থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে নিয়ে যখন মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছি তখন পাগলা বুলেটটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে দেয়াল ঘড়িটাকে এফোড়-ওফোড় করে দিলো। : সরি ম্যাম’ তোমাকে এভাবে চমকে দিতে চাইনি। কিন্তু আমি ছিলাম নিরুপায়। : এবারও আমার জীবনটা রক্ষা করলে। আবার এসেছো ভদ্রতা দেখাতে। পরমুহুর্তে আমার বুকের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়লো লুনা। হিংস্র বেড়ালের মতন আমার পিঠে আঁচড় দিয়ে বললো – তুমি এতো বোকা কেন? (চলবে)
দয়া করে পড়ুন - র্যাঞ্জ র্যা ঞ্জ - এর স্থলে
সে রাতে আমরা আর কেউ ঘুমাতে গেলাম না। বার্মিজ বাবুর্চি অংপ্রু কফি পরিবেশন করলো কয়েকবার। তার সঙ্গে লুনার ঘরে বানানো নোনতা বিস্কুট। তবে আমার কেন জানি ফোরম্যান লোকটাকে তেমন সুবিধার মনে হলো না। লম্বা মুখো ফোরম্যান আমাকে বারবার প্রশ্ন করতে ছিলো- : আগামীকাল তুমি কখন যাচ্ছো? : এখনো ঠিক করিনি। যেকোন সময় যেতে পারি। : তবে আমার মনে হয় তুমি দক্ষিণ চট্টগ্রাম ছেড়ে উত্তর চট্টগ্রামের দিকে গেলে ভালো করবে। : কেন? : অনেক জমি, প্রচুর ঘাস আর পর্যাপ্ত পানির কারণে ঐ দিকটায় অনেক র্যাঞ্জ গড়ে উঠেছে। তুমি চাইলেই ঐদিকে একটা কাজ জুটিয়ে নিতে পারবে। : সরি ফ্রেন্ড’ আমি কাজ খুঁজছি না। : তবে তোমাকে দৌঁড়ের মধ্যে থাকতে হবে। কারণ তুমি সার্কেল ওয়াইয়ের একজনকে খুন করেছো। আর তাদের দু’জন গানহ্যান্ড তোমার কারণে এখন জেলে। তুমি কি মনে করো ওরা তোমাকে এমনিতেই ছেড়ে দেবে? : তা পরে দেখা যাবে। সকালের দিকে তাজা বাতাসে সবে চোখ দুটো ঘুমে লেগে এসেছে’ তখুনি অংপ্রু ব্রেকফাষ্টের জন্য ডাকাডাকি শুরু করলো। ওখানেই শুনলাম’ র্যা ঞ্জার আজ ছুটি ঘোষণা করেছে। তারমানে আজ আর কেউ র্যাঞ্জ ছেড়ে কোথাও যাচ্ছে না। এই সুযোগে চুপিসারে সরে পড়তে চাই। কালো ঘোড়াটাকে হাঁটিয়ে র্যাঞ্জের পেছন দিকে কাঁটাতার এড়িয়ে বেরিয়ে এলাম। দুই মাইল আসার পর আজিজ নগরে পৌছলাম। রাস্তায় এখনো লোকজনের আনাগোনা কম। বন্ধ ব্যাংকগুলোর দরজায় অলসভাবে শুয়ে আছে কয়েকটা নেড়ী কুকুর। আর কিং সেলুনের বামনটা পাশের বিল্ডিংএর বার্মিজ বুড়িটার সাথে ফিল্ডিং মারছে। খবিসটা আমাকে দেখেও দেখলোনা। সিলভার জেনারেল ষ্টোর থেকে .৪৫ ক্যালিবারের কিছু গুলি একটা ফ্রেশ বাফেলো গান আর পর্যাপ্ত বুলেট নিলাম। সাথে এক কার্টন কাবভং সিগারেট। আসার সময় বুড়িটা আমায় একটা আপেল দিলো। সবে ফাইতং এ ঢুকছি’ তখুনি মনে হলো আমাকে অনুসরণ করা হচ্ছে। কে হতে পারে? নিশ্চয়ই সার্কেল ওয়াই আমার পিছনে ফেউ লাগিয়েছে’ নাকি খুনি পাঠিয়েছে? তখন মধ্য দুপুর। খিদেয় পেট জ্বলছে’ তবে আমি ঠিক করেছি আজ গোসল না করে লাঞ্চ করবো না। তার আগে বারবার শপে যেতে হবে। কতদিন আয়না দেখি না। না জানি ভালুকের মতো লাগছে কিনা? নটিবয় ওয়েটিংএ আছে। বামচোখে দেখতে পাচ্ছে একজন গানম্যান খুব কাজ করাচ্ছে। তবে তার বাম হাতটা ধীরে ধীরে কোমরের দিকে নেমে যাচ্ছে। কি ব্যাপার ব্যাটার মতলব কি? এবার গুলিটা খেলাম ডান কাঁধে। শক্তিশালী বুলেটের ধাক্কায় রাস্তার বালুতে গিয়ে পড়লাম। তখুনি আমাকে কলার ধরে দাঁড় করানো হলো। তারপর লোহার মতো শক্ত হাতে পর পর দুটি চড় মারা হলো। : আগন্তুক’ তুমি এখুনি এ-এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছো। ক্লিয়ার? : কারণ? : আমি টিকটিকি পছন্দ করিনা। : তোমায় কে বলেছে যে, আমি স্পাই? ইতিমধ্যে আমার বামহাতে লাফিয়ে উঠে এসেছে .৪৫ ক্যালিবার। : গানম্যান’ এবার তুমি কানে ধরে ৯৯ বার উঠবস করবে। কারণ তুমি আমার গায়ে হাত দিয়েছো। তাও আবার বিনা নোটিশে। : কাজটা ঠিক করলে না কিন্তু। (চলবে)
দয়া করে পড়ুন - নটিবয়ে ওয়েটিংএ আছি। বামচোখে দেখতে পাচ্ছি একজন গানম্যান খুর কাজ করাচ্ছে। পরিবর্তে - নটিবয় ওয়েটিংএ আছে। বামচোখে দেখতে পাচ্ছে একজন গানম্যান খুব কাজ করাচ্ছে। অনাকাংখিত ভুলের জন্য দু:খিত এবং লজ্জিত।
এ দেশটা পুরুষের দেশ। এখানে কোন কা-পুরুষের স্থান নেই। গানম্যানকে দর্শকদের জিম্মায় রেখে উপশমে ঢুকে পড়লাম। কাঁধের মধ্যে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে সবে ফাস্ট এইড সেন্টার থেকে বেরিয়েছি তখনি আমাকে গ্রেফতার করা হলো। ডেপুটি শেরিফ রয় সাথে ছয়জনের একটা বাহিনী। দেখেই বুঝা যাচ্ছে দৃঢ় প্রত্যয়ী সবাই। : কি ব্যাপার ডেপুটি’ আমি কি করেছি? : ডায়মন্ডের ফোরম্যান উইলিয়াম গতরাতে খুন হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে গতরাতের কোন এক সময়ে কু-কর্মটি তুমিই করেছো। : সরি মিষ্টার রয়’ উইলিয়ামকে আমার পছন্দ না হলেও খুন করার কোন কারণ অন্তত নেই। : সে তুমি কোর্টকে বলবে। এখন চলো চুনতীতে। তোমার জন্য শেরিফ অপেক্ষা করছেন। : যদি না যাই’ জোর খাটাবে? : কেন যাবে না? অপরাধী না হলে তো তোমার ভয়ের কোন কারণ নেই। : ওকে। তোমার যুক্তিতে আমি সন্তুষ্ট। চলো যাওয়া যাক। শেরিফ অফিসের সামনে এসে যখন দাঁড়ালাম তখন প্রচুর লোক সমাগম দেখলাম। কি ব্যাপার জনতা আমাকে ফাঁসিতে ঝুলাতে চায় নাকি? ঘোড়া থেকে সবে নেমে দাঁড়িয়েছি তখনি শেরিফ এসে আমায় হাত ধরে ভিতরে নিয়ে গেলো। : তা মিস্টার হেনরী’ গতকাল রাত ৪টা থেকে ৪.৩০ টা পর্যন্ত তুমি কোথায় ছিলে? গতরাতে ডায়মন্ডের পুরো ঘটনাটাই শেরিফকে খুলে বললাম। শেরিফ মনে হয় পুরাটা বিশ্বাসও করলো না। কিন্তু তার প্রমাণ চাই। : ওকে জেন্টেলম্যান’ তোমার কাছে কি কোন প্রমাণ আছে? : শেরিফ’ তুমি তো ভালো করেই জানো’ সব কিছুর প্রমাণ থাকে না। কে বলেছে প্রমাণ নাই? মেয়েলী কন্ঠের প্রশ্নের সাথে সাথে পুরো রুমটা আলো আর ফুলের সুরভীতে ভরে উঠলো। স্বয়ং ডাবল ডায়মন্ড কত্রী- লুনা! সদ্য ফোটা একটা নিষ্পাপ গোলাপ। নীল জিন্স’ গোলাপী ফ্রক’ পায়ে কাউবয় বুট। কোমরে গানবেল্টে ডাবল পিস্তল ঝুলছে। বুকের বামদিকের একটু নিচেও মনে হয় একটা ওয়ান সুট্যার আছে। এমন রূপ ছায়াছবির পোষ্টারে দেখা গেলেও বাস্তবে আমি মনে হয় এই প্রথম দেখলাম। : মিষ্টার শেরিফ’ উইলিয়ামকে কে বা কারা খুন করেছে তার কিছু আলামত আমরা কিছুক্ষণ আগে পেয়েছি। ওরা সংখ্যায় চারজন ছিলো। ওদের একজনের ঘোড়ায় নাল ছিলো না। অপরজনের ঘোড়াটা আবার অতিরিক্ত ওজনের ছিলো। তস্কররা র্যাঞ্জ হাউসের পিছন দিকে ঢুকেছিলো। আর উইলিয়াম তখন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ওদিকটায় গিয়েছিলো। গেটম্যান সান তখন ফোরম্যানকে নিজ চোখে দেখেছে। শুধু তাই নয় সে আরো বলেছে তখন হেনরি বাঙ্ক হাউসে ছিলো। আর সার্কের ওয়াই এর গানহ্যান্ড রাস্টির ঘোড়াটা নাকি দৈত্য টাইপের। ঐ সার্কেলের আর একজন কাউবয় মন্টি সম্পর্কেও সান বলেছে সে নাকি পাহাড়ীদের মতো নাল ছাড়া ঘোড়া ব্যবহার করে। : ওকে মিস। তবে সানকে ঐসব কথা জর্জের সামনে কোর্টে দাঁড়িয়ে বলতে হবে। আর আমাদের আরো বেশি প্রমাণ চাই। : প্রমাণ জোগাড় করার কাজ তোমার। তবে তুমি এখুনি মি: হেনরীকে ছেড়ে দিচ্ছো। : তুমি নিশ্চয়ই জামিন নিচ্ছো? : আর কেউ আছে নাকি? : না তবে, মনে হয় জামিনটা তুমি না নিলে এলি অবশ্যই উকিল পাঠাতো। শেরিফের কথাতে লুনার চেহারাটা মুহুর্তে বিমর্ষ দেখালো। কি ব্যাপার, মেয়েটা কি আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে নাকি? উৎসুক দর্শকের সামনে দিয়ে লুনাকে নিয়ে গটগট করে বেরিয়ে এলাম। তারপর সরাসরি কাউবয়তে ঢুকে পড়লাম। আর তখুনি এলির কাছ থেকে সংবাদটা পেলাম- কেউ একজন আমার খোঁজে এসেছিলো। হতে পারে আমার হাতে মারা পড়া কোন ব্যক্তির বন্ধুবান্ধব বা আত্নীয় স্বজন প্রতিশোধ নিতে এসেছে। লুনার চেহারায় রীতিমত ভয়ের ছায়া নেমেছে। ডানহাত দিয়ে তার পেলব হাতটা চেপে ধরে সান্তনা দিলাম। এলি’ টেবিলে গরম গরম কাবাব পরিবেশন করেছে। সাথে কাঁচা পেয়াঁজ মরিচ আর ঘরে বানানো আটার রুটি। অথচ লুনা কিছু্ই খাচ্ছে না’ কিন্তু আমি প্রচন্ড ক্ষুর্ধাত’ গ্রোগাসে গিলে চললাম। (চলবে)
পেট পুরে খেয়ে এলিকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাত্র কাউবয় থেকে বেরিয়েছি তখনি তাকে দেখতে পেলাম। বেটে খাটো কুৎসিত চেহারার একজন বার্মিজ। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। কোমর থেকে নীচু করে পিস্তল ঝুলিয়েছে। আমি নিশ্চিত তার পিস্তলগুলোর গায়ে খুনের আঁচড় আছে অথাৎ এ যাবত সে ক’টা খুন করেছে। পিস্তলের হাতলটা মুক্তোর তৈরীও হতে পারে। আর কোল্টগুলি নিশ্চয়ই জার্মানের তৈরী। তাকে অবাক করে দেবার জন্য দ্রুত সামনাসামনি গিয়ে দাঁড়ালাম। : আমাকে খুঁজছো? : মনে তো হয় তুমিই সে? : কারণ জানতে পারি? : সরি, প্রথমেই বলা দরকার ছিলো আমার। আমি সার্কেলের ওয়াইয়ের বিগ লাকির মামা। যাকে তুমি অন্যায়ভাবে খুন করেছো। : তোমায় কে বলেছে যে, আমি তাকে সুযোগ না দিয়ে খুন করেছি। বরং ফাইটটা এক তরফা ছিলো আর প্রাণ বাঁচাতে আমি তাকে গুলি করেছিলাম। : ডাবল ডায়মন্ডের উইলিয়াম তো আমাকে টেলিগ্রাম করে উল্টো কথা বলেছে। : উইলিয়াম গতরাতে অপঘাতে নিহত হয়েছে’ শোননি নিশ্চয়ই? : কাউকে সন্দেহ করছো? : কিছুক্ষণের মধ্যে শেরিফ তার পসি নিয়ে সার্কেল ওয়াইতে যাচ্ছেন। সন্তোষজনক জবাব না পেলে ওয়াইয়ের মালিক অস্টিনকে গ্রেফতারও করতে পারেন। সবকিছু নির্ভর করছে কমিটির উপরে। যেখানে কমিটি মোটামুটি একটা সিদ্ধান্তে পৌছেছে – এ অঞ্চলের খুন, রাহাজানি, ছিনতাইসহ যাবতীয় কু-কর্ম কাউর্যাঞ্জের আড়ালে সার্কেল ওয়াই’এ করে চলেছে। আজ এর একটা বিহিত হবেই। : ওকে জেন্টেলম্যান। আমি তোমার কথা বিশ্বাস করে রামু, কক্সবাজারে চলে যাচ্ছি এবং আমার আচরণের জন্যেও দু:খ প্রকাশ করছি। তবে ভবিষ্যতে কখনো আমাকে প্রয়োজন পড়লে সংবাদ দিও। আমি রামুর বুচাং প্রু। বিষ্মিত লুনা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। “গড তোমাকে শত্রুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে’ তুমি অক্ষত আছো’ এ যে আমার বিশ্বাস করতেও কষ্ট হচ্ছে। কারণ তুমি হয়তো জানো না’ বুচাং প্রু এ যাবত কোন ডুয়েলে হারে নি। আর তার হাতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৯ জন লোক মারা পড়েছে। যাদের অধিকাংশ ছিলো দূদার্ন্ত গান ফাইটার।” (চলবে)
আসসালামু আলাইকুম । চাচু , সিরিয়াস মজার হয়েছে , মা শা আল্লাহ ! চুনতিকে নতুন ভাবে দেখলাম বটে :) নিয়মিত পড়তে লিখতে পারতাম যদি , হে আল্লাহ ! শখ করে একটা পরীক্ষা জোগাড় করেছি । দিয়ে শেষ করি , ইনশাআল্লাহ আবার কথা হবে নিয়মিত । দোয়া করবেন।
ধন্যবাদ রূপা' এবঙ এবার অনেক দিন পরে এলে। সুজন স্বজন ছাড়া আমরা বাঁচি কিভাবে? আর গত কয়দিন ধরে ভাবছিলেম একটা নিখোঁজ নোটিশ দেবো- রূপাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমার চলমান লেখাটা তোমার কাছে ভালো লাগছে শুনে অত্যন্ত পুলকিত হলাম। ওয়েষ্টার্ণ কাহিনীর ধাঁচে লেখাটা দাঁড় করাবার চেষ্টা করছি। যদিও লেখার শিরোনামে বলেছি- পশ্চিমা কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে। প্লট হিসাবে বেছে নিয়েছি চুনতী ও তার আশে পাশের কিছু মায়াময় ভূমি- ব্রাক্ষণপুকুর, গয়ালমারা, স্বজারুমারা, শুয়োর মারা, খোন্দকার বিল, তিনগরইঙ্গা পাড়া, আজিজ নগর, ফাইতং, ফারাংঙ্গা, নারিশ্ছা, পুষ্টিবিলা ইত্যাদি ...। ইচ্ছে আছে আমি হেনরী টমাস খুব তাড়াতাড়ি দেখতে পাবো কুমুদিয়া ডুরির এককোনে একেবারে কাটা পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধ গরুর ব্রান্ডিং চলছে। আর খুব তাড়াতাড়ি হাটখোলা মূড়ার করল্লাকাটায় অ্যাম্বুশে পড়ছি। তিন গরইঙ্গা পাড়ায় জেড র্যাঞ্জে অগ্নিকান্ডে মারা যাবে ছয় ছয়জন কাউবয়। যারা প্রত্যেকেই ছিলো পুরান এবং কাজে দক্ষ। কি হবে জেড বাতানের কত্রী এলিচার? যে অল্প কদিন আগে হারিয়েছে তার পিতাকে। তিনি ছিলেন পুরা দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র ইতিহাসবিদ এবং একজন সফল র্যাঞ্জার। অতি শীঘ্রই আমাকে দেখা যাবে- আমি ডুয়েল লড়ছি ফারাংঙ্গার অতি নীচ খুনি গানম্যান ওরাঙ্গার সাথে। আমি পারবো তাকে হারাতে নাকি লুনা এলির হাহাকারের কারণ হবো? ধন্যবাদ সবাইকে।
থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাম। তোমার সহানূভূতি আমায় মুগ্ধ করেছে। : থাক, আর সৌজন্যতা দেখাতে হবে না। চলো র্যাঞ্জে ফিরে যাই। : সরি ম্যাম, আজ এদিকটায় আমার একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। যার উপর নির্ভর করছে আমার এ এলাকায় আসাটা। : তুমি কি আইনের লোক? : না আমি সরাসরি আইনের লোক নই। তবে গর্ভণরের অনুরোধে টেক্সাস রেঞ্জারদের মতো একটা রহস্য উম্মোচন করার জন্য এখানে এসেছি। : তোমার কাছে কোন প্রমাণ আছে নিশ্চয়ই? : ডেনিম শার্টের বুক পকেট থেকে গর্ভণরের সই করা বিশেষ কাগজটা বের করে এনে দেখালাম। আর গানবেল্টের নীচে স্বযত্নে রাখা গোলচাকতি’ - অস্থায়ী রেঞ্জার। আড়চোখে দেখলাম লুনার চেহারাটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। : ম্যাম এনি প্রবলেম এন্ড আর ইউ ওকে? : না না, আমি ঠিক আছি। আচ্ছা তুমি কি পারবে এ এলাকায় অবৈধ র্যাঞ্জিং ব্রান্ডিং রাসলিং এসব ঠেকাতে? যেখানে র্যাঞ্জাররা প্রায় সবাই ভাড়াটে গানম্যান পর্যন্ত পুষছে। : ম্যাম আমি গর্ভণরের অনুরোধে এসেছি। আমাকে যে পারতেই হবে। : ওকে। তবে একটু সাবধানে থেকো। আর আগামীকাল অবশ্যই বাথানে এসো। আমি তোমার অপেক্ষায় থাকবো। সাথে সাথেই লজ্জ্বা পেয়ে বললো- কাল আমরা একত্রে লাঞ্চ করছি। পরমুহুর্তেই টেক্সানদের মতো চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে মেয়ারে চড়ে বসলো ডায়মন্ড কত্রী। লুনা চলে যেতেই হঠাৎ করে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। নি:সঙ্গ জীবন যে কত যন্ত্রণাকর তা মনে হয়’ একজন ব্যাচেলর ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারবে না। আচ্ছা আমি কি পারবো মিশনটা সাকসেসফুলি শেষ করতে? নইলে খোদ গর্ভণর ব্ল্যাকে’র কাছে আমার উচুঁ মাথাটা নিচু হয়ে যাবে। আমি একজন এতিম। ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারিয়েছি। প্রতিবেশী মলি আন্টিই আমাকে নিজ সন্তানের মতো করে বড় করে তুলেছেন। মিশনারী স্কুলে দশ বছর পড়ার পর আন্টিই আমাকে সামরিক বাহিনীতে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। যেখানে আমি প্রায় পনের বছর চাকুরি করার পর মেজর পদে উন্নীত হয়েছিলাম। একবার বার্মা থাই সীমান্ত ক্রস ফায়ারে পড়ে জীবনটা আমার মৃত্যুর মুখোমুখিও হয়েছিলো। অবসরের পরে ঘুরে বেড়াছিলাম পুরো দেশটা। তখুনি কর্ণেল ফোর্ড সামরিক ক্যাম্পে তলব করে গর্ভণরের চিঠি আর চাকতিটা ধরিয়ে দিলেন। অপূর্ব সাজে সেজেছে প্রকৃতি। ঢেউ খেলানো পাহাড়ী ঢাল। সবুজ গাছে গাছে ছেয়ে আছে সব বাহারী ফুল। শেষ বিকেলের আলো এসে আমায় রোমাঞ্চিত করছিলো। আর ঠিক তখুনি স্বপ্পাভাব ভঙ্গ হলো। অল্পবয়সী অপরিচিত দু’জন নব্য যুবক। কুমুদিয়াডুরির এককোনে একেবারে কাটা পাহাড়ের পাদদেশে গরুর ব্রান্ডিং চলছে। আমি নিশ্চিত এই অ-সময়ের আইরনিং এর কাউগুলো চুরির মাল। : হ্যালো বয়েস এখানে কি হচ্ছে? চোখের পলকে বামদিকের ছোকরাটা আমার দিকে হেনরি তাক করে ফেললো। এমন অবিশ্বাস্য গতি আমি খুব কম দেখেছি। সে কি তবে গানম্যান? : যাও ভাগো’ এখানে কুকুর, ভিখারী কিংবা টিকটিকির প্রবেশ নিষেধ। : নটিবয়, সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিলে ভালো করতে। তবে যখন পূর্ব নোটিশ করোনি তবে ধরে নিচ্ছি তোমরা অবৈধ মালের ব্র্যান্ডিং করছো। আমার জন্য আরো বিষ্ময় অপেক্ষা করছিলো। : না’ মিষ্টার ভবঘুরে বিষয়টা তুমি এভাবে দেখতে পারো না। ছয়জনের দলটা চর্তুদিক থেকে আমায় ঘিরে ধরলো। একজন এসে আমার গানবেল্ট খুলে নিলো। পিছনের তস্করটা আচমকা পিস্তলের বাট দিয়ে আমার মাথার পিছনে আঘাত করলো। তারপর স্যাডলচ্যুত হয়ে মাটিতে পড়তেই অজ্ঞান হয়ে গেলাম। যখন জ্ঞান ফিরলো তখন চারদিকে ঘোর অন্ধকার। শত শত মশার গান শুনতে পেলাম। শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা। তারমানে রাসলার শুয়োরগুলো অজ্ঞান অবস্থায় আমাকে করে ইচ্ছে মত পিটিয়েছি। বহুকষ্টে জিহবার নীচে ডান হাতের দু’আঙ্গুল চেপে পর পর তিনবার শিস দিলাম। কিন্তু কই ঘোড়াটা তো আসছে না। গানবেল্টটা পাশে পড়ে আছে। তবে পিস্তল শূণ্য। (চলবে)
তেষ্টায় বুকটা ফেটে যাচ্ছে। অথচ পুরো শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা। নড়াচড়ার সামর্থ্য পর্যন্ত নেই। কি করি? এই মিষ্টার অন্ধকারে শুঁয়ে কেন? তুমি কি আহত? প্রশ্নকারীর কন্ঠ শুনে বুঝতে পারলাম’ তিনি একজন বয়ষ্ক ভদ্রলোক। তারপর তিনি ঘোড়া থেকে নেমে এলেন। এরপর অবলীলায় আমাকে তার ঘোড়াটায় কোনাকুনি করে তুলে নিলেন। অল্প কিছুদূর যাবার পর বুঝতে পারলাম এখানেই পরোপকারী লোকটা রাতের ক্যাম্প করেছেন। : দেখি একটু কষ্ট করে উঠে বসার চেষ্টা করো। কচি মুরগীর মাংসের স্যুপ করেছি। : থ্যাক ইউ জেন্টেলম্যান। আগে আমি একটু পানি পান করবো। : না, খালি পেটে পানি খেলে তোমার বমি হবে। তাছাড়া আমি এখনো তোমার জখম চেক করিনি। এতো সুস্বাদু স্যুপ আমি জীবনেও খাইনি। আচ্ছা মুখের ভিতর লবনাক্ত ভাব এতো প্রবল হচ্ছে কেন? পরদিন ভোরে ঘুম ভাঙ্গতেই দেখলাম আমি এক চমৎকার প্রকৃতির কোলে শুয়ে আছি। ছোট ছোট সব পাহাড়, গর্বিত মাতার মতো বুকে সন্তান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফলবতী সববৃক্ষ। সোনালী সব ধানি জমি ! আহা! আমি যদি কবি হতাম। এবার দিনের আলোতে উপকারী লোকটাকে দেখলাম। একজন মধ্যবয়সী বেটে খাটো স্বাস্থ্যবান সুবেশী ভদ্রলোক। মুখের ডানদিকে একটা কালো কাটা দাগে তাকে আরো বেশি পরিনত লাগছে। : এই মিষ্টার ঘুম তাহলে ভেঙ্গেছে? রাইড করতে পারবে? ওহ সরি’ তুমি তো আবার ঘোড়া হারিয়েছো। আচ্ছা বলোতো গত রাতের ঘটনাটা কি? ওরা কার ছিলো? : সন্ধ্যা রাতে পুরো ঘটনাটা খুলে বললাম। : ঠিক আছে চলো ঐ জায়গায় গিয়ে দেখি কোন ক্লু পাই কিনা। : তুমি ? : আমি পার্কার। পুটিবিলার টমি জেনারেল ষ্টোরের মালিক । : তুমি? : আমি শ্রেফ একজনব ভবঘূরে। (চলবে)
যা ভেবেছিলাম রাসলাররা কোন ক্লুই রাখেনি। এমনকি তারা ঘোড়ার খুরের চিহৃ মুছে ফেলার জন্য গানি ব্যাগ পর্যন্ত ব্যবহার করেছে। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার রাসলাররা স্থানীয় এবং এ কাজে কাউহ্যান্ডের মতো দক্ষ। তার মানে তারা কোন আউটফিটের পাঞ্চার। পার্কার চলে যেতে আমিও যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রথমে ক্যাম্পের বাসি কয়লার আগুন নিভিয়ে পরে চুলাটা ভেঙ্গে দিলাম। গন্তব্য হাটখোলা মূড়া। নেলসনের আস্তাবলে। শুনেছি সে বেশ উন্নত মানের অস্বের কারবার করে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে- হাটখোলা মূড়া যেতে হলে রাতার খাল ধরে যেতে হবে। যেখানে বর্তমানে খালে একবুক সমান পানি। অর্থাৎ কুমুদিয়া ডুরি থেকে সাঁতরিয়ে করইল্লাকাটার মুখ পর্যন্ত যেতে হবে। তারপর দূগর্ম পাহাড়ী পথ পায়ে হেঁটে পেরুতে হবে। সবে রাতার খাল থেকে করইল্লা কাটার মুখে এসে দাঁড়িয়েছি’ তখনি মনে হলো করবস্থানের ওপার থেকে রাইফেলের নলের ঝিলিক দেখলাম। তারপরের মুহুর্তে রাইফেলের গর্জন শুনলাম। ইতিমধ্যে আমি বামদিকে ড্রাইভ দিয়ে পড়েছি। বুলেটটা একটু আগে যেখানে আমি দাঁড়িয়েছিলাম সেখানে এসে কদম গাছটার বুক বিদীর্ণ করে দিলো। ক্রল করে সামনের দিকে এগুতে থাকলাম। খাঁড়া পাহাড়’ ছোট ছোট সব চৌকা পাথর’ তার উপরে চোখের পাতায় একটা বদ মশা আটকা পড়েছে। কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা যাকে বলে। অবশেষে বহু কষ্টে কবরস্থানের পিছনে চলে এলাম। এখন আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি খুনী পশ্চিম মুখী হয়ে কবরস্থানের পাশে শুয়ে রাইফেলের সাইটে চোখ রেখে আমাকে খুঁজছে। হারামীর বাচ্চাটা এখনো বুঝতে পারেনি আমি তার ঠিক পিছনে চলে এসেছি। : এই মিষ্টার এক্ষুনি অস্ত্র ফেলে উঠে দাঁড়াও, আমার পিস্তল তোমায় কাভার করে আছে। মুহুর্তের মধ্যে আততায়ী ঐ অবস্থা থেকে ডানদিকে ফিরেই ট্রিগার টেনে দিলো। তারমানে ব্যাটা নিশ্চিন্ত ছিলো আমি সম্পূর্ণ নিরস্ত্র। তাই আমার থ্রোয়িং নাইফটা যখন তার গলায় এসে বিঁধলো’ তখনো সে অপার বিষ্ময় নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। আর ঐ অবস্থাতেই নীচু লোকটা মারা গেল। (চলবে)
নেলসনের আস্তাবলে সব উন্নতজাতের ঘোড়া। বিশেষ করে মাসট্যাং ঘোড়া দেখে আমি বিষ্মিত হলাম। আমেরিকার বন্য এ ঘোড়া এদেশে কিভাবে আসে? নিশ্চয়ই চোরা পথে। কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব! ছোটকালে বাবার মুখে এই মাসট্যাং সম্পর্কে বহু গল্প শুনেছি। উত্তর আমেরিকাতেই নাকি মাসট্যাং এর সংখ্যা ০২ (দুই) মিলিয়নের উপরে। Wyoming, Oregon এবং Montana তে এই ঘোড়ার কদর ও ব্যবহার বেশি। বন্য শক্তিশালী এবং দ্রুত গতির হওয়ার কারণে পশ্চিম আমেরিকাতে প্রায় সব আউটল’ই এই ঘোড়া ব্যবহার করে। যাক, অবশেষে অনেক দরাদরি করে ১৬ হাজার টাকায় কালো কুচঁকুচেঁ একটা মাসট্যাং কিনলাম। নেলসন লোকটা বড্ড হিসাবী এবং অবস্থা বুঝে দাম হাকাতে পটু লোক। আমার গন্তব্য সজারু মারার ডাবল ডায়মন্ড র্যা ঞ্জ, যেখানে আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে স্বয়ং র্যা ঞ্জ কর্ত্রী- লুনা। আমরা একত্রে লাঞ্চ করবো। : ম্যাডাম তো গতরাতে তিনগরইগ্গা পাড়াতে গেছে, এখনো ফেরেননি। : কেন গেছে’ তুমি কি কিছু জানো? এবার আকাশ থেকে পড়লো গেটরক্ষী। : কি ব্যাপার ম্যান’ গতরাতে তুমি কোথায় ছিলে? তুমি কি জানো না’ জেড র্যা ঞ্জে গতকাল রাত্রে আগুন লেগেছে। মারা গেছে ছয় ছয়জন কাউবয়। সাথে তাদের র্যা মরড। : সরি অগ্নিকান্ডের কথাটা আমি শুনিনি। কারণ আমি গতকাল রাতে আমি এ এলাকার বাহিরে ছিলেম। কাউবয়তে ক’দিন আগে জেড র্যা ঞ্জের কর্ত্রী এলিচার কথা শুনেছি। তার বাবা নাকি দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র ইতিহাসবিদ ছিলেন এবং একজন সফল র্যা ঞ্জার হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনিই একমাত্র র্যা ঞ্জার যিনি তিন গরইগ্গা পাড়া থেকে ক্যাটেল ড্রাইভ করে দোহাজারী রেললাইন পর্যন্ত নিয়েছেন। তারপর পশুগুলি রেলে করে চট্টগ্রাম শহরে পাঠিয়েছেন। চট্টগ্রামের পাহাড়তলী গরু বাজারে ঐ বছর নাকি ঐগুলিই সেরা পশু ছিলো। : থ্যাঙ্ক ইউ ম্যান, আমি এক্ষুনি জেড র্যা ঞ্জে যাচ্ছি। কিন্তু পরমুর্হুতে এক ছোকরা কাউবয় এসে আমাকে আটকালো। : হ্যালো ব্রাদার। এখানকার রীতিও কিন্তু পশ্চিমের মতো। খানার সময় অতিথি না খেয়ে যেতে পারে না। চলো হরিণের মাংস দিয়ে লাঞ্চ করি। : থ্যাঙ্ক ইউ বয়। আমি আসলে ক্ষুধার্ত। : আমি কস্টা। আর তুমি নিশ্চয়ই হেনরি? : একদম ঠিক বলেছো। আচ্ছা, সেদিন তুমি কি পাহাড়ের কোন কেবিন ডিউটিতে ছিলে? তোমায় যে দেখলাম না? : হ্যা, আমি শুয়োরমারা কেবিনে থাকি। ইদানিং ওদিকটায় রাসলারদের উৎপাত বেড়েছে। লাঞ্চ শেষে মাসট্যাং’এ চড়ে তিরগইরগ্গা পাড়ার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লাম। আর পড়ন্ত বিকেলে জেড র্যা ঞ্জে এসে পৌছলাম। এতো ভয়াবহ অগ্নিকান্ড চিন্তাও করা যায় না’ কেবিন র্যা ঞ্জ হাউস, ব্যাঙ্ক হাউস, কিচেন হাউস এখন শুধু পোড়া কয়লার ধ্বংসস্তুপ। লুনা এগিয়ে আসছে। তার হাতে মেয়ারের লাগাম। মনে হয় ডাবল ডায়মন্ডে ফিরে যাচ্ছে। : হ্যালো হেনরী। মনে মনে তোমার কথাই ভাবছিলাম। দেখা হয়ে ভালো হলো এন্ড আই এম সরি, ফর মাই কমিটম্যান্ট। : না, না, কি যে বলো, মানুষের বিপদ আপদ আছে না। তুমি যে একজন বিপদগ্রস্তের পাশে এসে দাঁড়িয়েছো তাও কম কিসে। : এসো তোমাকে এলিচার সাথে পরিচয় করিয়ে দিই। বেচারী খুব মন খারাপ করে আছে। : সে এখন কোথায়? (চলবে)
এলিচা এখন সদ্য পোড়া র্যাঞ্জ হাউসের পিছনে প্রহরী চৌকিতে। : তাকে সাথে করে নিয়ে যাচ্ছো না কেন? : অনেক বলেছি। কিন্তু কিছুতেই সে তার কাউহ্যান্ডদের ছেড়ে যেতে রাজি হচ্ছে না। তাছাড়া, আগামীকালের মধ্যে সে একটা আপাতত থাকার মতো কেবিন দাড় করাতে চায়। মনে হয় এলিচা এখন র্যাঞ্জ হাউসটার পেন্সিল ড্রয়িং করছে। চলো গিয়ে দেখি। আরে এ যে দেখছি নিতান্ত একজন বালিকা’ অথচ সৌন্দর্য্য তার উপচে উপচে পড়ছে। কি প্রাণবন্ত উচ্ছ্বল। এলিচা আমাদেরকে দেখে খুব খুশি হলো। : তুমি নিশ্চয়ই লুনার সেই? : মানে ? : তুমি তো পুরুষ মানুষ, বোকা। তুমি কি বুঝবে! আমি তো অবাক। লুনা নিশ্চয়ই আমার সম্পর্কে এলিচাকে কিছু বলেছে। : আচ্ছা ম্যাম, তোমার ফোরম্যান কি বেঁচে আছে? মুহুর্তে সুন্দর মুখটা বেদনায় ছেয়ে গেলো। : না। আক্কেল পল’ বেঁচে থাকলে তো কথা ছিলো না। আমি নিশ্চিন্তে থাকতাম। দীর্ঘক্ষণ আলাপের পর ঠিক হলো আপাতত তিনদিন মেরামতের কাজ চলবে। কেবিন, ব্যাঙ্ক হাউস এবং কিচেন তৈরির পরে একটা বড় গরুর চালান দোহাজারী রেললাইন পর্যন্ত ড্রাইভ করা হবে। যার নেতৃত্ত্বে থাকছি স্বয়ং আমি। : সত্যি মি: হেনরি, তোমার কাছে আমি কৃতজ্ঞ হয়ে গেলাম। : কৃতজ্ঞতার প্রশ্নই আসে না। এ আমার দায়িত্ব। তৃতীয় দিনের দিন কাউবয়দের সহযোগীতায় একটা কেবিন, ব্যাঙ্ক হাউস এবং কিচেন দাঁড় করিয়ে ফেললাম। অবশ্য এই হাউসগুলির আকৃতি এতো ছোট যে, মনে হয় অন্যান্য র্যাঞ্জারদের কাছে তা কৌতুকের বিষয় হতে পারে। যা হোক চর্তুথ দিন ভোর হতে না হতে কয়েকজন কাউবয়কে নিয়ে নলবনিয়ার খামারে গেলাম। তারপর দিনভর তিন হাজার গরু একত্র করে শুয়োরমারায় নিয়ে এলাম। এখানে ইতিমধ্যে কস্টা কয়েকজনের সহায়তায় দুই হাজারের মতো গরু চালানের জন্য একত্র করেছে। পঞ্চম দিনের দিন ভোর রাত্রে শুয়োরমারা থেকে ক্যাটেল ড্রাইভ শুরু করলাম। পাঁচ হাজার গরু, নয়জন কাউবয় এবং নেতৃত্বে আমি – ট্রেইল বস। এরপর কোন ঝামেলা ছাড়াই ষষ্ঠ দিনের দিন বিকেলে পদুয়া তেয়ারি ঘাট এসে ক্যাম্প করলাম। প্রাণ খুলে কাউবয় সঙ্গীত গেয়ে সবার হৃদয় জয় করে নিলো কস্টা। আর অন্যান্য কাউবয়রা আসন্ন সাফল্যের আনন্দে কয়েকবার ব্লাঙ্ক ফায়ার দিলো। কয়েকজন আকন্ঠ মদ গিলে অশ্রাব্য খিস্তি আওড়ালো। ক্যাম্পের আলোতে উঠে এলো কাল্পনিক সব কিংবদন্তী কথা। সেদিন মধ্য রাতেই আমরা আক্রান্ত হলাম। (চলবে)
I seek my earnest apologies to the valued patrons and contributors for the inability to write in Bangla ( in fact I am a layman in using IT) regarding the issue. Of course the concepts being provided are enjoyable. Let the episode should continue. Thanking hon'ble brother Mr. Mizan Khan Babu for tremendous efforts. May i request his honor , the writer , to use the disguised name as " MUGGOL" " RATTU" " GOROTU" instead of western one as the history based on Chunati ! Regards
ধন্যবাদ প্রফেসর সাহেব। আমরা যে আত্নীয়! স্বজন প্রীতির অপরাধে ফেঁসে যাবেন তো। এবঙ আমি অতি নগণ্য।
মধ্যরাতে গোলাগুলির শব্দে যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখন ক্যাম্পের আলো নিভে গেছে। প্রচুর চেঁচামেচি’ আহতদের চিৎকার খিস্তিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। মুহুর্তের মধ্যে পায়ে বুট লাগিয়ে গানবেল্ট পড়ে হাতে বাফেলো গানটি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। সামান্য এগুতেই একটা মৃত ঘোড়ার গায়ে পা লেগে হোঁচট খেয়ে পড়লাম। তাতেই প্রাণে বেঁচে গেলাম। একটু আগে আমি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম’ সেখান দিয়ে একটি বুলেট অতিক্রম করে গেল। তবে আলোর ঝিলিক লক্ষ্য করে ইতিমধ্যে আমিও একটি বুলেট পাঠিয়ে দিয়েছি। আর সাথে সাথেই অনেকগুলি বুলেট আমার ডানে বামে এসে বৃষ্টির মত পড়তে লাগলো। অন্ধকারে অনেক কষ্টে অনেকটা আন্দাজের উপরে ভর করে ক্রল করে এগুলাম। রাইফেলের নলে নিচু ডালের ছোঁয়া লাগাতেই বুঝতে পারলাম আমি কাঁটা বনের কাছে এসে গেছি। এবঙ ঐখানে কস্টার দেখা পেলাম। তবে মৃত। প্রাণবন্ত সজীব এই কাউবয়ের মৃত্যু কোনমতেই মেনে নেয়া যাবে না। আমিই বেচারাকে নিশি প্রহরী নিয়োগ করেছিলাম। পিছনের দিকে মৃদু শব্দ হতেই রাইফেল নিয়ে তৈরি হয়ে গেলাম। পরক্ষনেই বিষ্ময়ের সাথে দেখলাম ওরা সবাই ডাবল ডায়মন্ডের ক্রু। তাদের কাছে জানতে পারলাম আসল ঘটনা। রাসলাররা প্রথমে চুরির চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ায় ষ্ট্যাপিড করার চেষ্টা করে’ কিন্তু গরুগুলো নিচের জমিতে থাকাতে তাদের সে চেষ্টাও বিফলে যায়। এদিকে কস্টার ছোড়াগুলিতে তাদের একজনের পেট এফোড়-ওফোড় হয়ে যায়। অপরজন পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে অ্যাপাচী সংকেত দিলে বাকি রাসলাররা আমাদের ঘুমন্ত ক্রুদের উপর অর্তকিতে আক্রমণ করে বসে। তবে তারা অস্ত্রে দক্ষ না হওয়াতে ডাবল ডায়মন্ড কাউহ্যান্ডের সাথে কুলিয়ে উঠতে না পেরে রণভঙ্গ দেয়। কস্টা আর রাস্টি প্রাণ দিয়ে আমাদের সবাইকে রক্ষা করলো। এক অদ্ভুদ বেদনায় ছেঁয়ে গেছে সবার মন। এদিকে আবার পেটে গুলি খাওয়া রাসলার বাঁচার আকুল বাসনায় মুখে খই তুলছে। : বয়েস, আমি কথা দিচ্ছি বাঁচার বিনিময়ে তোমাদেরকে গোপন তথ্য দেবো। তোমরা আমার জন্য এক্ষুনি চিকিৎসার ব্যবস্থা করো। একজন ঘৃণিত চোরকে বাঁচিয়ে আমাদের কি লাভ? তবুও মুভারকে ডেকে তার চিকিৎসার ভার দিলাম। আর সে বিশ্বাস সৃষ্টির আশায় অর্নগল কথা বলে যাচ্ছে – : সার্কেল ওয়াই, আমাদেরকে নিয়োগ করেছিলো ষ্ট্যাম্পিড করার জন্য। আমাদের উপর নির্দেশ ছিলো কোন মতেই যাতে তোমরা গরুর পাল নিয়ে দোহাজারী রেললাইন পর্যন্ত যেতে না পারো। : তারপর ? হঠাৎ করে তস্কর জ্ঞান হারিয়ে ঢলে পড়লো। এদিকে আবার টনি পায়ে গুলি খাওয়া রাসলারটাকেও ধরে নিয়ে এসেছে। সেও আমাদেরকে একই তথ্য দিলো। পরমুহুর্তে হঠাৎ করে কাউবয়রা পেটেগুলি খাওয়া রাসলারের কপালে লাল টিপ পড়িয়ে দিলো। আর অপর রাসলারকে ল্যাসের দড়ি দিয়ে পিছমোড়া করে গাছের সাথে বেঁধে সমানে লাথিঘুষি মারা শুরু করলো। আমি শত চেষ্টা করেও উত্তেজিত কাউবয়দের থামাতে পারলাম না। তবে তাদেরকে অনুরোধ করলাম, দয়াকরে তোমরা তাকে বাঁচিয়ে রেখো। কস্টা রাস্টির মৃত্যুর জন্য সার্কেল ওয়াই’এর বিরুদ্ধে আমরা এর স্বাক্ষী উপস্থাপন করবো। অবশেষে রাসলারকে আধমরা করে কাউবয়রা শান্ত হলো। ক্যাম্পের আলোতে আবার অবস্থা ফিরে এলো। পরদিন দুপুর পর্যন্ত ক্যাটেল ড্রাইভ করার পর ঠাকুর দিঘী এসে পৌছলাম। সিদ্ধান্ত হলো এখানকার শেরিফের কাছে রাসলারটাকে বুঝিয়ে দিবো। (চলবে)
কিন্তু আমাদের জানা ছিলো না ঠাকুর দিঘীতে কোন শেরিফ অফিস নেই। লোহাগাড়া সাতকানিয়ার শেরিফ অফিসটা রূপকানিয়ায়। তবে লোক মুখে শুনলাম শেরিফ রুশ অত্যন্ত নোংরা এবং নীচু লোক। টেকনাফের সাবরাং এ তার পিতৃনিবাস হলেও সে নাকি বড় হয়েছে বার্মার আকিয়াবে। তারপর ওখান থেকে বিতাড়িত হয়ে ২১ বছর বয়সে সাতকানিয়ায় এসে ভলেন্টিয়ার হিসাবে কাজে যোগ দেয়। তখন জনকল্যাণ সমিতির প্রধান ছিলেন বর্তমান মেয়র অলি। তিনিই পরবর্তীতে রুশকে এই এলাকায় শেরিফ নির্বাচনে দাঁড়াতে সহায়তা করেন। কি আর করা। আবার ক্যাটল ড্রাইভ শুরু করলাম। একটানা চলার পর রাত দশটার দিকে এসে সাতকানিয়া পৌছলাম। চুনতী থেকে পদুয়া পর্যন্ত পৌছার পর আমাদের ২ দিন সময় লাগলেও পদুয়া থেকে সাতকানিয়া আমরা মাত্র ৮ ঘন্টায় পেরিয়ে আসলাম। অবশ্য পদুয়ার পর থেকে সাতকানিয় পর্যন্ত তেমন কোন দূর্গম পাহাড় পর্বত নাই তাও একটা বড় কারণ। যাক, ক্যাম্পে ক্লান্ত কাউবয়রা সবাই শুয়ে পড়লো কিন্তু একঘন্টা পর আঙ্কেল জনির ডাকাডাকিতে সবাই আবার উঠে পড়লো। ক্যাম্পের বাতাসে তখন গরুর মাংস পোড়ানোর খুশবু। মুহুর্তে কাবাবের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়লো ক্ষর্ধাতের দল। (চলবে)
দয়া করে পড়ুন - ১ চুনতী থেকে পদুয়া পর্যন্ত পৌছার জন্য পরিবর্তে - চুনতী থেকে পদুয়া পর্যন্ত পৌছার পর দয়া করে পড়ুন - ২ ক্ষুর্ধাতের পরিবর্তে - ক্ষর্ধাতের
পরদিন ভোরে বন্দী রাসলারটাকে নিয়ে আঙ্কেল জনিসহ রূপকানিয়া এসে পৌছলাম। সবে শেরিফ অফিসের সামনে এসে দাঁড়িয়েছি তখনি শটগান বেরিয়ে এলেন একজন খর্বকায় ব্যক্তি। ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে ব্যাটা স্বয়ং ইউএস মার্শাল- আমেরিকা থেকে এসেছে। : হ্যালো বয়েজ’ তোমরা কিন্তু এখানে নামাচ্ছো না; ক্লিয়ার? : আমি হেনরী টমাস। চুনতীর সজারুমারা ডাবল ডায়মন্ডের প্রতিনিধিত্ব করছি আর আমার সাথের জন আঙ্কেল জনি। আমাদের অভিভাবক বলতে পারো। আমরা এসেছি রাসলারটাকে সোপর্দ করতে। : শেরিফ’ অফিসে নেই। কখন আসবেন তারও ঠিক নেই। আমি কোন উটকো ঝামেলায় পড়তে চাই না। তোমরা অন্য পথ দেখো। : তুমি কি ডেপুটি? তবে শোন আমরা শেরিফের সাথে দেখা না করে যাচ্ছি না। এখন আমাদের ভিতরে নিয়ে চলো। ঠিক তক্ষুনি ডাকাত দর্শন কালো কুঁচকুঁচে মোটা জুলফির একজন বার্মিজ চেহারার আর্বিভাব হলো। তার হোলস্টারে ডবল গান শোভা পাচ্ছে। আর দেখেই বোঝা যাচ্ছে – তিনি এদের ব্যবহার বেশ ভালোভাবেই জানেন। : হ্যালো আমিই শেরিফ রুশ। বলো তোমাদের জন্য কি করতে পারি? রুশের অফিসটা বেশ গোছানো তবে খুব ছোট। লাগোয়া জেলটা তিনরুমের। পাশেই টয়লেট। বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলতে রুশের চেহারায় ভীতি ফুটে উঠলো। সন্দেহের দৃষ্টিতে আমাদের জরিপ করতে লাগলো। : অসম্ভব সার্কেল ওয়াইয়ের বিরুদ্ধে আমি কিছু করতে পারবো না। প্রথমত: র্যাঞ্জটা আমার এলাকায় নয়। দ্বিতীয়ত: যাকে রাসলার বলে আহত করে ধরে এনেছো’ সে যদি সব অস্বীকার করে’ তোমরা কিভাবে তার অপরাধটা প্রমাণ করবে? এবার আমি আমার শেষ অস্ত্র প্রয়োগ করলাম। : আমি এলাকার জনগণকে একত্রিত করে গণ আদালত করবো। তখন দেখবে ক্ষ্রিপ্ত জনতা ব্যাটাকে ফাঁসিতে ঝুলাবে। তখন তুমি কি করবে? মব ঠেকাবে নাকি সুষ্ঠ বিচারের আশ্বাস দেবে? তবে এক্ষুনি তা করছো না কেন? : ঠিক আছে’ তোমাদের কথামতো অভিযুক্তকে গরাদে ঢুকাচ্ছি। তবে সে নিরাপরাধী হলে তোমাদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ আনা হবে, ক্লিয়ার? বন্দী সর্মপন করে রশিদ বুঝে নিলাম। নিচে মুক্তার মতো অক্ষরে শেরিফের সহি- রুশ মামশাই। (চলবে)
: আচ্ছা শেরিফ’ তুমি কি বন্দিকে আজই কোর্টে তুলবে। নাকি আমরা ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবে? : তুমি হলে কি করতে ? : আমি হলে ঝামেলায় যেতাম না। আজই বন্দিকে জর্জের সামনে হাজির করতাম। : ঠিক কথাটাই বলেছো। তাছাড়া বিনা বিচারে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাউকে আটকিয়ে রাখার ক্ষমতা বা মানসিকতা কোনটাই আমার নেই। তাই আজ সকাল ন’টার মধ্যেই তাকে কোর্টে তুলছি। তোমাদের স্বাক্ষী সাবুদও রেখো কিন্তু। : ওকে। তাহলে আমরা ব্রেক ফাষ্টটা সেরে আসি? : শিওর। পাশেই কামএগেইন। তবে সাবধান, আঙ্গুল কেটে ফেলো না যেন। মিনা প্রু মারমা শুধু দেখতেই সুন্দরী নয় বারটেন্ডার কিন্তু যাদুও জানে। : থ্যাঙ্ক ইউ শেরিফ। কামএগেইনে ঢুকতেই হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের ছ্যাকা খেলাম। মানুষ এতো সুন্দর হয় কি করে? অষ্টাদর্শীর রূপ যেন চাঁদকেও হার মানাবে। এর বেশি উপমা এই মুহুর্তে আমার মাথায় আসছে না। : গুড মর্নিং ম্যাম। আমরা কিন্তু খুব ক্ষুধার্ত। : মনিং। ঝটপট বসে পড়ো। এক্ষুনি গরুর ভুনা মাংস বেকন আর সীম এনে দিচ্ছি, চলবে তো? : ম্যাম’ শুধু চলবে না রীতিমত কৃতজ্ঞবোধ করছি। (চলবে)
কোর্ট বসতে বসতে সাড়ে ১০টা বাজলো। ১ জন জাজ, ৪ জন জুরি, ১ জন সরকারী উকিল, ১ জন প্রাইভেট উকিল, শেরিফ এবং তার ডেপুটিসহ মোট ৯ জনের একটা টিম। ধৃতব্যক্তি : ১ জন। অভিযোগ : রাসলিং এবং খুন। অপরাধ স্পট : পদুয়ার তেয়ারী হাট। জেরা শুরু হওয়ার অল্পক্ষনের মধ্যেই অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যের কারণে আদালতে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। জর্জ হাতুরি ঢুকায়ে পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করেন। অত:পর জাজ জুরি বোর্ডের পরামর্শক্রমে মামলার রায় ঘোষণা করেন – “ যেহেতু অভিযুক্ত ব্যক্তি শ্রেফ একজন ভাড়াটিয়া এবং সার্কেল ওয়াই অপরাধের মূল হোতা’ সেহেতু সার্কেল ওয়াই’এর মালিকের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হইলো। অন্যদিকে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে লঘুদন্ড হিসাবে ১৮ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হইলো। এই কোর্ট আদেশ কার্যকর করার জন্য এখানকার শেরিফের নেতৃত্বে একটি পাসি বাহিনী চুনতির শেরিফের সাথে যোগাযোগ করিবে। তার পরবর্তী পদক্ষেপ দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী গ্রহণ করা হইবে।” শেরিফকে ধন্যবাদ জানিয়ে যখন ক্যাম্পে ফিরে আসলাম’ তখন বেলা ৩টার মতো। প্রথমেই লাঞ্চ তারপর অন্য ভাবা ভাবা যাবে। কিন্তু লাঞ্চ শেষ হবার আগেই আঙ্কেল জনি এসে সংবাদ দিলো রাত ১১ টায় দোহাজারীতে চট্টগ্রামগামী মালগাড়ীটা আসছে। তার মানে এক্ষুনি পুরা পালটা ড্রাইভ না করলে রাত ৮টার আগে কিছুতেই দোহাজারী পৌছানো যাবে না। আর গরুর পাল একত্রিত করে সঠিক ১১ টা থেকে লোডিং শুরু না করলে কাজও এগোনো যাবে না। : আচ্ছা আঙ্কেল’ রাতের মধ্যে লোডিং শেষ হবে তো? : দেখো হেনরি’ আমরা প্রত্যকে যদি তৎপর হই তবে অবশ্যই শেষ হবে। : আচ্ছা সকালে ট্রেনটা ছাড়বে কয়টায়? : ঠিক ৯ টা ২০ মিনিটে। (চলবে)
ঠিক বারোটায় ট্রেনটা ষোলশহর এসে দাঁড়ালো। তখনি রেলের ইঞ্জিনিয়ার এসে জানালেন – ইঞ্জিন ওভার হিটের কারণে ট্রেন আর সামনে যাচ্ছে না। কি আর করা! মালগাড়ি থেকে গরু নামানোর জন্য কাউহ্যান্ডদের তাগাদা দিলাম। অতি উৎসাহী কাউবয়রা ৫ টি বগীতে তখুনি সিঁড়ি পেতে দিয়ে গরু নামানোর কাজ শুরু করে দিলো। গরুর পাল নিয়ে সবে রাস্তায় এসেছি। ঠিক তখুনি দু’জন অশ্বারোহী আমাদের পথ আটকালো। : কোথা থেকে আসা হচ্ছে শুনি? : তার আগে বলো তোমরা কারা? : আমি ডেপুটি মার্শাল পল আর ও আমার সহকারী। : আমরা চুনতী ডাবল ডায়মন্ড র্যাঞ্জ থেকে এসেছি। আমাদের সাথে পাঁচ হাজার গরুর একটা পাল আছে। আশাকরছি বেশ ভাল দাম পাবো। তুমি কি বলো মার্শাল? : তোমাদের সাথে নিশ্চয়ই র্যাঞ্জ মালিকের বিক্রয় অনুমতি পত্র আছে? : অবশ্যই। : দেখি দেখাওতো। অনুমতিপত্রের নিচে লূনার স্বাক্ষর দেখে আনন্দে লাফিয়ে উঠলেন ডেপুটি। : আরে এতো দেখছি আমার কাজিনের মেয়ে! এরপর আরো অনেক কথাই হলো। তারপর ডেপুটির মধ্যস্থতায় পুরো গরুর পালটা ৫ কোটি টাকায় বিক্রী করে র্যাঞ্জের নামে দাগকাটা চেকটা বুঝে নিলাম। তারপর তৃতীয় দিন যখন চুনতী এসে পৌছলাম তখন সবে সন্দ্যা নেমেছে। পাঞ্চাররা সবাই ক্লান্ত। প্রত্যেকের মুখে লম্বা লম্বা দাঁড়ি, ময়লা কাপড়। ব্লু জিনস্ ধূলোতে বিবর্ণ দেখাচ্ছে। রোদ্রে জ্বলা হ্যাট, পায়ের বুটের সামনের অংশ নেই বললেই চলে। এই অবস্থায় কেউই ভদ্র মহিলার সামনে যাবার জন্য রাজি হলো না। তাই তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্তে র্যাঞ্জে না গিয়ে প্রথমে সদলবলে কাউবয়তে ঢুকে পড়লাম। পরিকল্পনা হচ্ছে- পেট পুঁজোর পরে ক্যাটস্ এ গিয়ে সবাই ক্ষুরকার্য শেষে বাথটাব নেবো। তারপর গেট স্মার্টে সবাই জিন্স আর বুট, ক্যাপ বদলাবো। অবশ্য ড্রেসের সিদ্ধান্তটা র্যাঞ্জের পক্ষ থেকে আঙ্কেল জনিই ঘোষণা করেছেন। (চলবে)
র্যাঞ্জে ফিরতে রাত দশটা বেজে গেলো। কাউবয়রা সবাই সরাসরি ব্যাঙ্ক হাউজে চলে গেলো, শুধু আঙ্কেল জনি আর আমি গেলাম র্যাজ বসের কাছে। রিপোর্ট করে চেকটা বুঝিয়ে দিতে হবে। : ম্যাম’ ভিতরে আসতে পারি? : শিওর। আমি আসলে তোমাদের অপেক্ষাতেই বসে আছি। এতো দেরী করলে কেন? চোখে মুখে খুশী উপচিয়ে পড়ছে। তারপরেও যে, বহু কষ্টে আবেগ দমিয়ে রাখছে তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। : ম্যাম’ পাঞ্চারদের একটু আনন্দ করার সুযোগ দিলাম। : ওকে। আমারই বরং তোমাদেরকে রিসিভ করার জন্য ব্রাক্ষণ পুকুর পর্যন্ত যাওয়ার দরকার ছিলো। কিন্তু কি করবো বলো, বিকাল থেকে শরীরটা ভীষণ খারাপ লাগছে। : থ্যাক ইউ ম্যাম। এ নাও তোমার র্যাঞ্জের নামে ৫ কোটি টাকার চেক আর ডেপুটি মার্শাল পলের চিরকুট। সে নাকি সম্পর্কে তোমার মামা। : সত্যি মিষ্টার হেনরি তোমাদের কাছে আমি আজীবন কৃতজ্ঞ হয়ে রইলাম। জানো তোমরা যদি এই ড্রাইভটা সফলভাবে না করতে তাহলে আমি শেষ হয়ে যেতাম। কিন্তু কষ্টা আর রাষ্টির মৃত্যুর জন্য আমার নিজেকেই দায়ী মনে হচ্ছে। : শোন মিস, জন্ম মৃত্যু বিধাতার হাতে। তবুও আমি রাষ্টির মুখে তার মায়ের গল্প শুনেছি। তিনি নাকি আজিজ নগরে থাকেন। আর কষ্টা তো একজন এতিম তাতো তুমি নিজেও জানো? : দেখো যদি রাষ্টির মার সন্ধান পাও তবে উনাকে আমি এক লক্ষ টাকা দেবো। : ওকে ম্যাম। আমি অবশ্যই খোজ নেবো। পরদিন লুনাকে নিয়ে রাইড করতে বেরিয়েছি। তখন পথে কেইনের সাথে দেখা হলো। তার মুখে শুনলাম কিছুক্ষন আগে কাউবয়তে এলি খুন হয়েছে। খুনী নাকি এখনো কাউবয়তেই আছে। অথচ কেউ তাকে আটকাতে সাহস করছে না। : শেরিফ কি করছে? : তিনি তো গত পরশু সাবরাং (টেকনাফ) গেছেন। : ডেপুটি রয়? : মুরগীর বাচ্চার মতো সে গর্তে লুকিয়েছে। এলির মায়াময়ী চেহারাটা মনে আসতেই কখন যে, কালো ঘোড়াটার পেটে জোরে স্পারের খোঁচা দিয়েছি তা আমি নিজেও জানি না। আর দশ মিনিটের মধ্যে কাউবয়ের দরজায় এসে যখন দাঁড়িয়েছি’ তখন বলতে গেলে রাস্তায় অনেক লোক। কিন্তু সবাই নির্বিকার। তখনি কোমরে ডাবল গান নিয়ে কুৎসিত চেহারার একজন লোক এসে বারান্দায় দাঁড়ালো। (চলবে)
তারপর সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে গলা উচিয়ে বলতে লাগলো- তোমরা হয়তো জানোনা সার্কেল ওয়াইয়ের বস মিষ্টার অষ্টিন’ একজন বিশিষ্ট ভদ্রলোক। তিনি তোমাদের এলাকাতে অনেক উন্নয়ন করেছেন। উনার পরিকল্পনাতে আছে- এই এলাকাটাকে উনি মডেল প্যালেস বানাবেন। অথচ এই বিশিষ্ট ভদ্রলোক আজ শুধুমাত্র ডাবল ডায়মন্ডের কারণে ফেরারি রয়েছেন। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কোর্টে আত্মসর্মপন না করলে তিনি আউট-ল হয়ে যাবেন। তোমরা কি তা চাও? নিশ্চুপ জনতা। কিন্তু আমি নিশ্চুপ থাকি কিভাবে ? : এই ব্যাটা ভাড়াতে খুনী। মিথ্যুক জোচ্ছর, আজ আমি তোকে পরপারে পাঠাবো। এলির মতো একজন সম্ভ্রান্ত মহিলাকে তুই খুন করেছিস। ডাবল ডায়মন্ডের ফোরম্যান উইলিয়াম উইলসন’ রাস্টি’ কষ্টাসহ আরো কয়েকজনকে খুন করিয়েছে যে অষ্টিন তুই এসেছিস এখন ঐ খুনি’ ঠগের পক্ষে গলাবাজি করার জন্য। তোর সাহস দেখে আমি প্রশংসা না করে পারছি না। : তুমি কে? : তুই কে? : আমি ফারাঙ্গার ওরাঙ্গা। আমার পিস্তল তোমার মতন বেয়াড়া ২১ জনের ছিন্ন বহন করছে বলেই আচমকা গুলি করে বসলো পিস্তলবাজ। এদিকে আমি রিফ্লেক্স বশত: বাম দিকে ড্রাইভ দিয়ে মাটিতে পড়ার আগেই কোমরের কাছ থেকে পর পর দুটি বুলেট পাঠিয়ে দিয়েছি। একটি গানম্যানের পায়ের পাশে মাটিতে এসে গাঁথলেও অপরটি তাকে রেহাই দিলো না। কপালে তৃতীয় নয়ন নিয়ে সে যখন ধরাশায়ী হলো তখন সবাইকে শুনিয়ে একটি কথা মাত্র উচ্চারণ করলো – এ অসম্ভব! আমাকে কেউ হারাতে পারে না। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে স্বয়ং জর্জ এবং ডেপুটি শেরিফ রয় এসে উপস্থিত হয়েছেন। আর আমিও চিন্তা করে দেখলাম যেহেতু এখানে আমার দায়িত্ব শেষ’ সুতরাং আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আমার পরিচয়টা সবার কাছে প্রকাশ করতে পারি। তাতে একদিকে গর্ভণরের সুনাম যেভাবে বাড়বে অন্যদিকে তেমনি এই এলাকার অন্যান্য সবাই অপকর্ম করতে ভয় পাবে। : শোন জর্জ। আমি গর্ভণর ব্ল্যাকের কাছে আদেশপ্রাপ্ত হয়ে এই এলাকাতে এসেছিলাম। আশা করছি আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। আর আমি এক্ষুনি এই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে চাই। তোমার কি কিছু জিজ্ঞাসা করার আছে? : তারমানে তুমি বলতে চাইছো তুমি একজন রেঞ্জার। : অস্থায়ী রেঞ্জার। রেঞ্জার হও আর যেই হও আমি কিছুতেই তোমাকে যেতে দেবো না। আমাকে জড়িয়ে ফুঁফিয়ে কেঁদে উঠলো লুনা। আর তখুনি জনতার মধ্য থেকে গভর্ণরের বজ্র কন্ঠ ভেসে এলো- : আমি আদেশ করছি হেনরি তুমি ডায়মন্ড কর্ত্রীকে জীবনসঙ্গী করে নাও। নইলে এক্ষুনি আমি তোমাকে মন ভাঙ্গার দায়ে’ অ্যারেস্ট করবো। সমবেত জনতার মুহুমুহু তালির মধ্যে হঠাৎ আবিষ্কার করলাম আমি লুনাকে বুকে নিয়ে খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। - শেষ -
চুনতির যারা নবীন- লেখালেখি নিয়ে যাদের ইচ্ছে আছে বহুদূর... তাদেরকে বলছি ভালোভাবে ‘‘ওয়ান্টেড (একে ধরিয়ে দিন) পশ্চিমা কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে'’’ পড়ুন। গঠন দেখুন। শুরু এবং শেষটা দেখুন, চর্বি-মেদ বর্জিত ঝরঝরে একটা উপস্থপনা। প্রাসঙ্গিকভাবেও আরো অনেককিছু লেখা যেত। তারপরেও লেখক প্রয়োজনটা ছাড়া নড়েননি। ক্লাইমেক্স এর সফলতা আছে। কিছু সাস্পেন্স আরো জোরালো হলেও বা দীর্ঘায়িত হলেও লেখককে দোষ দেয়া যেতোনা। বিশেষ করে সাস্পেন্স এক্সপ্লোর করার দৃশ্যগুলো। প্রোটাগনিস্ট এর আকর্ষন-গ্রহণযোগ্যাতা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। যদিও থার্ড পার্সন ন্যারাটর’এর অনেক গুন প্রোটাগনিস্ট’এর ভিতর ঢেলে দিয়েছেন- এবং জোরালো করেছেন গল্পের কাহিনীর আবেদন। রোমান্টিকতা! নাহ। এটা ভিন্ন ব্যাপার। যেটা পুরো গল্প জুড়েই পাঠককে নাড়া দিয়েছে! কিন্তু হেনরি আর লুনা’র মধ্যে পাঠক আরো বেশী প্রেমাপুর্ণ দৃশ্য দেখতে চেয়েছিলো। আমি আবারও প্রথম কথায় ফিরে যাই। লেখক গল্প-উপন্যাসের মৌলিক গঠনটা বুঝিয়েছেন। এটাকে নতুন লেখকেরা তাদের পাঠ্যের মধ্যে নিলে লেখালেখির বিষয়ে তাদের ধারনা-ভিত্তি অনেক মজবুত হবে, এটা শুধু আমার দৃঢ় বিশ্বাস না- আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। ### গুরুকবির লেখা নিয়ে সরাসরি কিছু লিখছি, এ অপরাধ মার্জনীয় নয় জানি। অনেককিছু লিখতে চেয়েও স্পর্ধার অভাবে পারিনি। আমি সমালোচক নয়। আলোচক হয়ার যোগ্যতা নেই। ভালোবাসতে পারি অবিরাম। সালাম... জয়তু গুরুকবি।
ধন্যবাদ কবি ভাই। প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি- দূর্বল গ্রন্থনার ওয়েষ্টার্ণ কাহিনীটি উপস্থাপনের জন্য। এক্ষেত্রে বলতে হয় আপনার মন্তব্যের শেষ লাইনে - ভালোবাসতে পারি অবিরাম। এবং তার ১০০% ই চুনতি ও তার মায়াময় বেষ্টনী আশপাশের সবুজ শ্যামল এলাকা। এই যাবত কাল চুনতিকে যতই দেখেছি ততই শুধু মুগ্ধ হয়েছি। পাহাড়ের কোল থেকে হরিণের সুক্ষ্ম পথ আদিম গুহা। বার বার আমায় মনে করিয়েছে আগেকার দিনের রাজা বাদশা'র কথা। চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে হাটখোলা মূড়ার উপর দিয়ে ছুটে যাচ্ছেন বাদশা সেকান্দর কিংবা হয়তো বন্য পশ্চিমের পথ এমনি রুক্ষ্ম কঠোর দূর্জেয়। মনের মধ্যে বার বার এসেছে ফোরামে এত বড় লেখাটা লেখা ঠিক হচ্চে না। তাই এক ধরনের অস্থিরতা আমায় তাড়িয়েছে। বাদ পড়েছে উপমা, প্রকৃতির বর্ণনা। পাশাপাশি আপনার অনবদ্য কবিতাগুলি পড়ে আমি আউলা হয়ে গিয়েছিলাম। বার বার কবিতাতে যাবো কখন, পারবো কি এমন অনুপম তাগিদের সুতীক্ষ্ম দংশনে দংশিত আমি ... ধন্য মাতা জননী যে পুত্রকে তুমি গর্ভে ধরেছো সে যে কবি' অন্য দৃষ্টি তার দোয়াত কলম কাগজ উপচিয়ে নামে আরবার আরদিন শুধু কারুকার্যময় কিছু বাক্য! অন্যদিকে, তখনকার বন্য পশ্চিমে প্রেমও ছিলো কাটখোট্টা। বহি:প্রকাশ অল্প। অথচ অন্তরে তাদের সুন্দরবনের মত। যা হোক, আমি ধন্য হয়েছি আপনি কষ্ট করে পুরো লেখাটা পড়ে মূল্যবান বক্তব্য দিয়েছেন। সুপ্রিয় পাঠক মনে করেন আপনার নাম হেনরি টমাস। আপনি ২৫ এর এক টগবগে যুবক। কোমরে আপনার সদাসর্বদা ডবল সিক্স গান। মাসট্যাং এর পেটের একদিকে বাধা হেনরি রাইফেল। আপনার গন্তব্য সজারু মারার ডাবল ডায়মন্ড র্যাঞ্জ। যেখানকার কর্ত্রী একজন অপুর্ব সুন্দরী অষ্টাদশী লুনা। ওখানে যেতে হলে রাতার খাল পেরিয়ে হাটখোলা মূড়া ডিঙ্গিয়ে ব্রাক্ষন পুকুর হয়ে যেতে হবে। পথে পড়বে খান দিঘী শুয়োর মারার মতন দূবোধ্য দূগর্ম এলাকা। আপনি অ্যামবুশের শিকার হতে পারেন, হতে পারেন বন্য হিংস্রপ্রাণীর মুখোমুখি। কিন্তু আপনাকে যেতেই হবে ওপারে যে আছে স্বর্গের অস্পরী। এবং হ্যাঁ একমাত্র চুনতিকে নিয়েই এই ধরনের নবীন স্বপ্ন দেখা যায়। কারণ সে যে প্রকৃতি অপরুপা কন্যা। সর্বশেষে, পাঠক আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং কথা দিচ্ছি ভবিষ্যতে আর কখনো এই ধরনের কর্ম করবো না। একটাতেই শখ মিটে গেছে ( অক্ষমতা বলতে পারেন)।
Mama .....ami ei golpota chapathey chai ebong chunatir prothiti teeen ager deeer porathey chai.....uporbou shristey....publisher hothey mon chai mama...thader kachey pou chatey chai jader internet excess nai.....apni razi thakley amar cheley sakib k jabou thio nirdesh governor suzat dibey mama (ekhtu vaavh nilam)...golpta porar prothjom din thekey prai chunatir trail golo shopney dekey chi....aaar vancouver eer majey thakey khujey chi...apnar rubel kinthou vancouver ee
ধন্যবাদ মামা। আবারো ধন্য হলাম আপনার মতো একজনের স্পর্শে। চাকচাক্যময় বিদেশের মাটিতেও আপনি ভুলেননি স্বদেশ, স্বগ্রাম - চুনতি। জানেন আমার জীবনে তিনটি শখের মধ্যে একটি শখ এ লেখাটির মাধ্যমে আমি পূরণ হয়েছে। বাকি দুইটি শখ হলো- ১) চুনতির কয়েকজন কৃতিমান পুরুষ এবং একজন মহীয়সী নারীকে নিয়ে লেখা। পুরুষ দুইজন হচ্ছেন- মরহুম মাওলানা আবু তাহের ও সংঘত কারণে অপর নামটি এখন বলছি না। আর মহীয়সী নারীটি হলেন- চুনতির শাহ সাহেবের পুত্র বধূ মরহুম শাহজাদা জামালের স্ত্রী মরহুমা লুলু আপা। যাবতীয় তথ্য উপাত্ত নৈবাধ্য ইতিমধ্যে প্রায় জোগাড় করেও ফেলেছি। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ২) একটি ল্যান্ড রোভার জিপ এবং একটি বাংলো বাড়ির মালিক হওয়া। বাড়িটি হবে চুনতির ব্রাক্ষণ পুকুরের পশ্চিম দিকে। জানি না কোনদিন এই স্বপ্ন আমার পূরণ হয় কিনা। বই প্রকাশের কথা বলছেন' এই জন্য আপনাকে আলাদাভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে ঐক্ষেত্রে লেখাটি পুন:রায় লেখতে হবে বৈকি। ধন্যবাদ।
Mama apni likah shuru korey den.....ami sakib k njabothio dik nirdeshona diey dibou.....inshallah boi ta berobey shigroi......ish ami jodi chunati thak thaam thaholey prothiti gorey gorey giey diey ashthaaam...kolpona korthey shikai ei rok golpo....bunglo oo hobey ...ghari ooo hobey
ধন্যবাদ মামা। আপনার কাছেও আমার অনেক ঋণ। আমি অতি তুচ্ছ একজন মানুষ। তবুও আপনি আমার প্রায় লেখা পড়েন' উৎসাহ দেন এরচেয়ে বড়ো আর কি হতে পারে? ধন্যবাদ।
Again for Saiful Bhai...