১৯৮৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম “সাবলর্টাণ স্টাডিস সম্মেলনে’র পর থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতি,রাজনৈতিক ইতিহাস,ঐতিহ্য, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও বিকাশমান প্রতিটি ধারাকে নতুন আঙ্গিকে ব্যাখ্যা ও বিশেষণের প্রবণতা ল্য করা যাচ্ছে। দণি এশিয়া থেকে শুর“ করে লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা সর্বত্রই ইতিহাস ও সমাজতত্তে¡র আলোচনায় সাবর্ল্টান স্টাডিস বা নিম্নবর্গের ইতিহাস এখন পরিচিত নাম। বলাই বাহুল্য,লালন ফকির/শাহের লোকজ গানের মর্মাথ অনুসন্ধানে আমি নিম্নবর্গের ইতিহাস পড়েই অনুপ্রাণিত হয়েছি। উপরন্তু, আমার এ বিশেষণ অনেকখানিই সমাজতাত্তি¡ক-রাজিৈনতিক-সাহিত্যিক দৃষ্টিভঙ্গিজাত।“লালনের গানে মানবতার জয়গান” তথা “মানব ধর্মের ¯^রূপ”- সন্ধানে আমি শ্রেণীগত মনোবিশেষণের মাধ্যমে বিষয়টি উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। নিম্নবর্গ, মধ্যবিত্ত, উঠতি বুর্জোয়া এবং বুর্জোয়া শ্রেণীর কাছে লালনের গান তাদের ধর্মীয় চেতনায় কতটা প্রভাব রেখেছে তা সংপ্তি আকারে আলোকপাত করব।“ললনের ধর্ম এবং ধর্মে লালন” -এ দুয়ের দ্বন্ধের নিরসনের লইে মূলত আমার এসকল কথামালা।লালন ফকিরকে যদি গ্রামীণ সমাজের নিম্নবর্গের রিপ্রেজেনটেটিভ/প্রতিবি¤^ হিসাবে ধরে নিই তাহলে প্রথমেই যে বিষয়টি আসে তা হল গ্রামীণ সমাজের শক্তি কাঠামো ও গ্রাম্য জীবনব্যবস্থার মধ্যকার দ্বন্ধ।বলাই বাহুল্য, কায়স্থের ঘরে জন্ম নেয়া লালন কৈলীণ্য প্রথার শিকার। ঘটনাচক্রে মুসলমানের হাতে অন্ন গ্রহণের দায়ে অভিযুক্ত লালন সমাজপতির কাছে পরাজিত হননি বটে, কিন্তু তাঁর মায়ের মাতৃস্নেহ সেই সমাজকাঠামোর শক্তিশৃক্সখল ভাঙতে পারেনি। অবশ্য একজন গ্রামীণ বিপতিœকের পে সেটা সামান্যই সম্ভব।অর্থাৎ, প্রথম জীবনেই লালন সমাজচ্যুত হন। লালনের এই পরিণতির েেত্র সর্ম্পক ও সামাজিক শক্তিকাঠামোর দ্বন্ধের উৎস/উৎপত্তি নিঃসন্দেহে ধর্ম তথা ধর্মীয় অপশাসন।- “ললনের ধর্ম এবং ধর্মে লালন” আলোচনায় উপরোক্ত মৌলিক বিষয়টি আলোকপাত আবশ্যম্ভাবি বলে বোধ করেছি।এইণেই লালনের কন্ঠে উচ্চারিত হয়েছে:-“জাত গেল জাত গেল বলে/ এ কি আজব কারখানাসত্য কথায় কেউ রাজি নয়/ সবই দেখি তা না না না।”... ... ...“কারখানা” শব্দটি মূলত সমাজব্যবস্থাকেই ইঙ্গিত করছে, আর “সত্য” শব্দটি হল লালনের আতœবিশ্বাস, চেতনা ও মূল্যবোধ। অন্য দশ জনের মত লালনও এই সামাজিক প্রথা মেনে নিতে পারতেন, কিন্তু তিনি নিজের বিশ্বাসকে “সত্য” শব্দ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এেেত্র লালনের কন্ঠ¯^র সমাজপতিদের বিরোদ্ধে যথেষ্ট দৃঢ়।পাশ্চাত্যের অনুকরণে আমাদের সমাজে বুর্জোয়া ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এ ভূখন্ডের সকল সামাজিক ও রাজনৈতিক বিপবের চালিকাশক্তি ছিল নিম্নবর্গ।পাশ্চাত্য সমজ এখন প্রায়ই ধর্মের নতুন নতুন অর্থ উৎপাদন করছে। অন্য দিকে আমাদের সমাজে মানুষ বাহ্যত বুর্জোয়া রূপ ধারন করলেও চিš—াচেতনায় তারা সামš—। এর অন্যতম কারণ হতে পারে ঔপনিবেশিকতা। আমাদের বাহ্যরূপ ও আভ্যš—রীন চিš—ার দ্বন্ধ- আমাদের মন¯—াত্তি¡ক পরিচয় অনুসান্ধানের মূল প্রতিবন্ধকতা।এ প্রতিবন্ধকতার কারণে আমরা আজও লালনের ধর্মীয় পরিচয়/জাত নিয়ে নির্লজ্জ তর্কে-বিতর্কে মেতে উঠি, লালনকে চিনতে পারিনা। অথচ, লালন ফকির এই প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করেছেন বহুআগেই।তাই, জাতিভেদ প্রথার বিরোদ্ধে লালনের তীব্র ােভ ও বলীয়ান ঘোষণা:-লালন বলে হাতে পেলে/ জাত পোড়াতাম আগুন দিয়ে।।রাজনৈতিক-সমাজতাত্তি¡ক দিক থেকেও লালন গুর“ত্বপূর্ণ। এই ভূখন্ডে “না¯ি—কতা” ও “ধর্মনিরপেতা” ঐতিহাসিক কারণে বিশেষ অর্থ বহন করে। না¯ি—কতার শ্রেণীগত দিকটি যদি অনুধাবনের চেষ্টা করি তবে নিঃসন্দেহে ভারতীয় ভূখন্ডে নিম্নবর্গের মধ্যে না¯ি—ক খুঁেজ পাওয়া দুর“হ ব্যাপার।এেেত্র বলা চলে, পশ্চিমা ইহজাগতিক চিš—া আমাদের উপমহাদেশের শিতি মধ্যবিত্ত ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণীকে যতটা প্রভাবিত করেছিল, নিম্নবর্গে সেই ঢেউ ল্য করা যায় নি। ফলে, নিম্নবর্গের যে কয়জন ব্যক্তির মধ্যে ইহজাগতিক চিš—া চেতনা প্রকাশিত হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই বিশেষ কারণে সমসাজের অনান্য শ্রেণীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। যেমন, লালন ফকির ছাড়াও বরিশালের আরজ আলী মাতুব্বরের কথা আমরা বলতে পারি। শুধু তাই নয়, শিতি বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর ইহজাগতিক চিš—ার বিকাশ যে পথে বিকশিত হয়, নিম্নবর্গের এই চিš—ানায়কদের সে পথ ছিল তারচেয়ে অনেক বেশি কন্টার্কীণ ও কঠিন। অর্থাৎ, নিম্নবর্গে ইহজাগতিক চিš—া বিকাশের পথ অনান্য শ্রেণীর চেয়ে অনেক বেশি দ্বান্ধিক, ধর্মীয় মৌলবাদ দ্বারা শৃক্সখলিত।এসব কারণে, সমাজে বারেবারে প্রশ্ন উঠেছে, ..... ... ...“ লোকে বলে লালন ফকির কোন জাতের ছেলে...?মোলাতন্ত্র লালনের নিম্নোক্ত গানের কলি টেনে নির্লজ্জভাবে লালনের ধর্ম-মানবতাকে সংকীর্ণ ধর্মীয় গন্ডিতে আবদ্ধ করতে চায়:...আমি ডুব দিয়া রূপ দেখিলাম নদীতে-/ আদম মোহাম্মদ তিনজনা এক নুরেতে নূরেতে।...শব্দ হইল ‘কুন’ জানো তার বিবরণ/ নিঃশব্দ ছিল সে সিন্ধু আদিতে আদিতে।।অন্যদিকে অনান্য ধর্মীয় মৌলবাদীরাও পিছিয়ে নেই লালনকে নিজেদের ধর্মের সনাতন অনুসারী হিসাবে প্রতিষ্ঠার প্রাণপণ চেষ্টায়।... গোপীপ্রেম জানে কারা/ শুদ্ধরসের ভ্রমর যারাগোপীর পাপপুণ্যের জ্ঞান থাকে না/ কৃষ্ণ -দরশনে।।উপরোক্ত গানের কথামালায় বৈষ্ণম ধর্মের ছাপ পাওয়া যায়। অর্থাৎ লালন প্রচলিত অনেকগুলো ধর্ম সম্পর্কে অবগত ছিলেন। এর অর্থ এই নয় যে, তিনি ঐ সম¯— ধর্মের অনুসারী ছিলেন। বরং বলা চলে, প্রচলিত ধর্ম চর্চায় লালন রীতিমত ভীতশ্রদ্ধ ছিলেন।- সবাই বলে লালন ফকির হিন্দু কি যবনলালন বলে আমার আমি জানি না সন্ধান।...জাতি-ধর্ম-স¤প্রদায় এবং জাতিচিহ্ন বিষয়ে লালনের প্রশ্ন তাই অতি তীè।- কেউ মালা কেউ তসবি গলায়/ তাইতো যে জাত ভিন্ন বলাই-যাওয়া কিংবা আসার বেলায়/ জাতের চিহ্ন রয় কার রে।।নিজের পরিচয় আড়াল রাখলেও লালন ফকির তাঁর গানে ‘প্রচলিত’ ধর্ম চর্চায় তাঁর অবিশ্বাসের কথা বলে গেছেন নি:দ্বিধায়। [প্রচলিত শব্দটি তৎকালীর সমাজে বিদ্যমান অনেকগুলো ধর্মের অনুশাসন ও পাশাপাশি অবস্থান অর্থে ব্যবহারের প্রয়োজনিয়তা বোধ করছি।] যেমন তাঁর একটা বিখ্যাত গান:-সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারেলালন বলে জাতের কি রূপ দেখলাম না তা নজরে।-প্রসঙ্গত উলেখ করা প্রয়োজন; কাঙাল হরিণাথ, মীর মোশাররফ, জলধর সেন, অয়কুমার মৈত্রেয়,সর্বোপরি রবীন্দ্রনাথও লালন ফকির সর্ম্পকে অবগত ছিলেন। কিন্তু, প্রত্যেকেই লালনের জাতপরিচয়, বংশধারা বা ধর্ম সর্ম্পকে সন্দিহান ছিলেন।এতসব স্পষ্ট ও নির্ভিক ঘোষণার পর নিশ্চয় আর সন্দেহের অবকাশ থাকে না যে, লালন নির্দিষ্ট ধর্মীয় গন্ডিতে আবদ্ধ ছিলেন না। অর্থাৎ, প্রচলিত ধর্মের রাজ্যে লালনের আতœমুক্তির পথ বিকশিত হয়নি।দার্শনিক কার্ল মার্কস প্রশ্ন তুলেছিলেন,- কেন প্রাচ্যের ইতিহাস ধর্মের ইতিহাস আকারে হাজির হয়? প্রশ্নটির উত্তর আমার জানা নেই।কিন্তু প্রাচীন বাংলার প্রতিটি জনপদের লোকায়ত জ্ঞানচর্চার ধারা, শক্তি ও উৎসমূল যদি আমরা দেবীপ্রসাদের ‘লোকায়ত দর্শন’ পড়ে অনুধাবনের চেষ্টা করি, তাহলে হয়ত এ বিভ্রাšি— থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বিভ্রাšি—টা ঠিক এই জায়গায় যে, লালনের গানে দেহতত্তে¡র বিশেষণ- দর্শনের ইতিহাসের বস্তুবাদ ও ভাববাদের মধ্যেই এক ধরনের দ্বান্ধিকতার সৃষ্টি করেছে। লোকায়ত এ জ্ঞান আদৌ ভাববাদী না কি বস্তুবাদী এ প্রশ্নটিও উঠে আসে সঙ্গত কারণে।লোক সমাজের সাধারণ মানুষেরা যখনই লালনের গানে তাদের জীবনের নিত্যদিনের অভিজ্ঞতাকে আবিষ্কার করে, তখন তারা এসব গানের সাথে একাতœবোধ করে, লালনের গানে নিজেকে খুজেঁ পায়, নতুনরূপে আবিষ্কার করে। অর্থাৎ, লালনের গানের জনপ্রিয়তার পেঁছনে শ্রেণীচেতনা ও শ্রেণী-একাতœবোধ ও জড়িত।রবীন্দ্রনাথের সাথে লালনের দেখা হয়েছিল কি না তা নিয়ে বেশ বির্তক থাকলেও একথা জানা যায় যে, রবীন্দ্রনাথ লালনের গান সর্ম্পকে অবগত ছিলেন।জানা যায়, রবীন্দ্রনাথ এসব গানের দার্শনিকতায় মুগ্ধ হয়ে জমিদারী স্টেটের কর্মচারীদের দিয়ে দুটো খাতা শাšি— নিকেতনের জন্য কপি করিয়ে এনেছিলেন।সুধীর চক্রবর্তী বলছেন, ‘রবীন্দ্রনাথ লালনের জীবনের চেয়ে লালনের গানের মর্মকে বুঝতে চেয়েছেন বেশি।’ এেেত্র বলা যায়, রবীন্দ্রনাথ নিজে নিম্নবর্গের আতœজ না হলেও, রবীন্দ্রনাথ ও লালনের দার্শনিক চেতনা মূলত একইশ্রেণীভূক্ত (দার্শনিক সাদৃশ্য)। উপরন্তু, লালন ফকির সর্ম্পকে বাংলার শিতি সমাজে প্রথম উৎস্হা জাগিয়ে তোলেন রবীন্দ্রনাথই।লালনের গানের আধ্যাতিকতা, মরমী চেতনা রবীন্দ্রনাথকেও স্পর্শ করেছে, রবীন্দ্রনাথের বহু গানে এর ছাপ পাওয়া যায়। যেমন: ... আমার এ দেহখানি তোলে ধর... (দেহতত্তে¡র প্রকাশ) ।লালনের মৃত্যর পর ১০০০০এরও বেশি শীর্ষ দীর্ঘদিন গুর“র গানকে কন্ঠে ধরে রেখেছেন। কিন্তু এমনও সময় গেছে, যখন লালনের কবরটি সংস্কার করার জন্য অর্থের অভাবে ‘লালন শাহ আখড়া কমিঠি’ গঠন করতে হয়েছিল, লালন ছিল নির্জন ও উপেতি।নাটকীয়ভাবে সবকিছু পালটে গেল ১৯৬৩ সালে। এরই মধ্যে দেশ বিভাগ এবং ধর্মীয় রাজনীতির সূত্রে ভারত-পাকি¯—ান রাষ্ট্রের জন্ম। লোকসংগীত সংগ্রাহক মুহাম্মদ মনসুরউদ্দীনের প্র¯—াবে পাকি¯—ান সরকারের আর্থিক সহায়তায় গড়ে ওঠে ‘লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্র’। ঘটনা এখানেই শেষ নয়। যে লালন ফকির আমৃত্যু জাত প্রথার বিরোদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, পাকি¯—ান সরকার তাঁেকই জাতে তোললেন বৈ কি!দিলির মুসলিমসাধক নাজিমুদ্দিন আওলিয়ার মাজারের অনুকরণে বিশাল অর্থ ব্যয় করে তারা তৈরি করলেন লালনের সুরম্য সমাধিসৌধ। এরই মধ্যে রটে গেল লালন মুসলমান সাধক, তাঁর গান ইসলামি চেতনাসম্পন্ন, তিনি বাংলা ইসলামি গজলের গুর“ ইত্যাদি, ইত্যাদি।অনেকে আগবাড়িয়ে নতুনরূপে লালনের জীবনীও লিখে ফেললেন। যে ব্যক্তি জাতি-বর্ণ-প্রথার উর্ধ্বে মানবতার জয়গান গাইতেন, তাঁকেই সেই একই শৃক্সখলে বন্দী করা হল।অথচ সহজেই বোঝা যায়, লালনের এই সমাধিসৌধ নির্মাণের প্রচেষ্টাও একটা ধর্মীয় রাজনীতির প্রতিযোগিতা ছাড়া আর কিছু ছিল না।তাহলে, লালনের ধর্ম কি ? – এ প্রশ্নের উত্তর একটিই, মানবতা। লালনের দর্শন- মানুষতত্ত¡। পাঁচশ বছর আগে গ্রাম্য কবি চন্ডিদাসের মুখে যে অমর- অয় বাণী উচ্চারিত হয়েছিল,... ‘ সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’..., ঠিক একই বাণী আমরা শুনতে পায় লালনের কন্ঠে...... মানুষ হয়ে মানুষ চেনো/ মানুষ হয়ে মানুষ মানোমানুষ রতনধন/ করে সেই মানুষের অšে^ষণ।মানব ধর্মের অনুসারী লালনও পূজা করেছেন, মানুষের পূজা। হিন্দু-মুসলমান-মৌলবাদী শক্তির বিরোদ্ধে অবশেষে তিনি একসময় নির্ভয় ঘোষণা দিলেন: ... একবার জগন্নাথে দেখরে যেয়ে/ জাত কেমন রাখো বাঁচিয়েচন্ডালে আনিলে অন্ন ব্রা²ণে তাই খায় চেয়ে।।- এ ঘোষণার মাধ্যমে আসলে লালন ব্রা²ণেরই জাত মেরেছেন!...কাশী কিংবা মক্কায় যাও রে মন/ দেখতে পাবে মানুষের বদন।ধ্যানধারনা ভজন পূজন/ মানুষ সর্ব ঠাই।।মানুষের মাঝেই প্রকৃত দেবতার অ¯ি—ত্ব। সুধীর চক্রবর্তী বলছেন, ... এ ভূখন্ডের মানুষ নিজের অজাšে—ই রাম-রহিম, কৃষ্ণ-করিম এক বলে ভেবে নিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত শাসকরা হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা ধর্মগুলোতে বাহ্যত পরিবর্তন আনলেও মানুষের চেতনায় যে খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারেনি তার প্রমাণ, এ ভূখন্ডের প্রাচীন কবি ও শিল্পীদের বর্ণনায় এমন মানুষের কথা উঠে এসেছে, যার অর্ধেক মুহম্মদ-অর্ধেক কৃষ্ণ।লালন তাই ধর্মীয় মৌলবাদীদের প্রতি প্রশ্ন ছোড়ে দিয়েছেন,... দেবদেবতার বাসনা যে/ মানুষ জন্মের লাগিয়া...... মানুষতত্ত¡ যার সত্য হয় মনেসে কি অন্য তত্ত¡ মানে?.. ... ... ... ... ...-প্রকৃতই, এ প্রশ্নের মাধ্যেই লালন সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, আর কোন দ্বিধা, সংশয় থাকার কথা নয়।আশা করি, আমার রস-কষহীন কথামালা সামান্য হলেও পাঠক চিত্তকে লালন অনুধাবনে অনুপ্রাণিত করবে।উৎসর্গ-- আমার দুর্দিনের বন্ধু, কবি ধ্র“ব আলিম।যার মতে, আমি দালাল বুদ্ধিজীবী হওয়ার প্রতিযোগিতায় নিয়োজিত।- মাজেদুল নয়ন, যিনি আমাকে লেখাখানি লিখতে অনুপ্রাণিত করেছেন।
Make sure you enter the(*)required information