ওয়ান্টেড - >>>>>WANTED (DEAD or, ALIVE) একে ধরিয়ে দিন। ( জীবিত কিনবা মৃত) ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||| (পশ্চিমা কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে) [][][][][][][][][][] বনপুকুর, চুনতি। সূর্য তখন ঠিক মাথার উপরে। শেরিফ অফিসের সামনে প্রচুর লোক সমাগম হয়েছে। বিষয়টা কি? কালো ঘোড়াটার পেটে স্পারের হালকা খোঁচা দিতেই লাফিয়ে সামনে এগোল। বড় বড় তিন তিনটে রিওয়ার্ড পোষ্টার: ১. রাসলার লাকিকে ধরিয়ে দিন। জীবিত বা মৃত। নগদ পুরষ্কার ১ লক্ষ টাকা। পুরো পোষ্টার জুড়ে এক ভয়ংকর যুবকের ছবি। ২. আউট-ল রাসেলকে জীবিত বা মৃত ধরিয়ে দিলে নগদ পুরষ্কার ২ লক্ষ টাকা। অত:পর যথারীতি পোষ্টার জুড়ে শুকনো লিকলিকে এক যুবকের ছবি। কোমরে সিক্স গান' মুখেতে দুর্বিনীত হাসি। ৩. বাউন্টি হান্টার জেমসকে জীবিত বা মৃত ধরিয়ে দিলে নগদ পুরষ্কার ৩ লক্ষ টাকা। কিন্তু পোষ্টারে তার ছবি নেই। বর্ণনায় বলা হয়েছে- সে অত্যন্ত নাদুস নুদুস শরীরের অধিকারী। বয়স আনুমানিক ৩৫। গায়ের রং শ্যামলা। সারা মুখেতে বষন্তের দগদগে দাগ। অপরাধ- সে একজন নিরীহ অস্ত্রহীন লোককে পিছন থেকে গুলি করে হত্যা করেছে। পিছনে খসখস আওয়াজ হতেই পাঁই করে ঘুরে দাঁড়ালাম। ইতিমধ্যে অভ্যাস বশত: হাতে বেড়িয়ে এসেছে .৪৫ ক্যালিবারের অটোমেটিক পিস্তল। আমার সামনে স্বয়ং শেরিফ! ঃকে তুমি অপরিচিত যুবক, কি করছো এখানে, জানতে পারি নিশ্চয়ই? ঃ আমি একজন ভবঘুরে... ঃ দেখো মিস্টার ভবঘুরে, আমার এলাকায় আমি কোন গোলমাল চাই না। এক্ষুনি তুমি চুনতী ছাড়ছো, মনে রেখো লোহাগাড়া থেকে হারবাং পর্যন্ত এলাকাটা আমার। ঃ সরি শেরিফ, আজ আর তা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। আমাদের বিশ্রাম দরকার, নইলে অবলা প্রাণীটা শ্রেফ মারা যাবে, তুমি কি তা চাও? ঃ অনেক লম্বা পথ পাড়ি দিয়েছো মনে হচ্ছে? ঃ হ্যাঁ, মি: ল' পটিয়া চক্রশালা থেকে এসেছি।তবে তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো পিছনে কোন কালো ইতিহাস নাই, আইন ও আমায় খুঁজছে না। ঃকাজ খুঁজছো না কেন? ঃ আপাতত ভ্রমণের মধ্যে আছি। ঃ ঠিক আছে। তোমাকে আগামীকাল দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিচ্ছি এরমধ্যে তুমি চুনতী ছাড়ছো। তবে সাবধান, আশেপাশের কোন পাহাড়ে আত্নগোপন করার চেষ্টা করবে না। তাহলে কিন্তু তোমাকে সন্দেহজনক ব্যক্তি হিসাবে গ্রেফতার করা হবে। মনে রেখো, জজ সাহেব এখন বার্মা সফরে আছেন, ফিরতে বেশ কিছুদিন লাগতে পারে। ঃ শেরিফ’ তুমি আগে কি করতে মানে, আইনকর্তা নির্বাচিত হবার আগে? ঃ একজন শ্রেফ হোটেল জুয়াড়ী, তবে সৎ। ঃ কিন্তু জুয়াড়ীরা তো এতো কথা বলে না,নাকি তুমি উকিল ছিলে? ঃ তোমার ধারণা ভূল, আমি সবসময় ঝেড়ে কাশতে পছন্দ করি। ঃ ওকে ল-ম্যান’ এখন বলো, এখানকার ভালো সেলুন কোনটা? আমার গরম গরম কাবাব আর সিম দরকার সাথে ডবল ডিমের পোচ আর এক মগ কড়া তেতো কফি। ঃ তুমি কাউবয়’তে যেতে পারো। অল্প খরচে সব পেয়ে যাবে। বিধবা এলিসা সেলুনটা সুন্দরভাবেই চালাচ্ছে, তাকে তুমি আমার নাম বললে বিনা পয়সায় হোটেলের পিছনে খড়ের গাদায় নিশি যাপন করতে পারবে। ঃ থ্যাংকউ শেরিফ, তুমি লোকটা সত্যিই ভালো। ঃ আগন্তুক তোমাকেও ধন্যবাদ। ..................................................... কাউবয় সেলুনটা পুরোটা গাছের খুঁটি আর বড় বড় তক্তা দিয়ে তৈরি। তবে অন্য আর দশটা ওয়েষ্টার্ণ ধাঁচের সেলুনের সাথে কাউবয়ের পার্থক্য হচ্ছে- এখানকার খাওয়া দাওয়া,পরিবেশনায় এক নিপুণ শৈল্পিকতা কাজ করে। তাছাড়া, সেলুন মালিক এলিসা নিজেই একজন খুব ভালো রাধূঁনী এবং বিনয়ী ভদ্রমহিলা। ক’দিন আগে খোদ ইন্ডিয়ান মার্শাল এই সেলুনে অতিথি হয়েছিলেন। যাবার সময় এলিকে জড়িয়ে ধরে বার বার কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। মেহগণি কাঠের টেবিলগুলো ছড়ানো ছিটানো। একটাতে ওরা বেশ ক'জন- ধুমসে পোকার চলছে,পাশে দাঁড়ানো দর্শকদের বেশ উত্তেজিত মনে হচ্ছে। ব্যাপার কি? কোনার টেবিলে গোবেচারার মতো গিয়ে বসে কফির অর্ডার দিলাম।একজন কাউবয়কে দেখতে পাচ্ছি,আমার পাশের দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আরেকজন স্বল্প পোষাকের সেলুন গার্ল তাকে দেখে উল্লসিত হয়ে পাশে এসে কাঁধে হাত রাখলো। ডার্লিং, একটা ড্রিঙ্ক খাওয়াতে হবে কিন্তু। হঠাৎ করেই ফায়ারিংটা শুরু হলো। নরক ধেয়ে এলো যেন কাউবয় সেলুনে। .................................................... গানম্যান মোট তিনজন। একজন দরজা কাভার করে দাঁড়িয়েছে। অন্যজনের পিস্তল থেকে নীল ধোঁয়া বেরু্চ্ছে। আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলো যে কাউবয়টি সে এখন মাটিতে পড়ে আছে, বুকে তার লাল গোলাপ ফুঁটেছে। তৃতীয় গানম্যান বারকিপারকে উদ্দেশ্য করে বলছে- এলি,ডাবল ডায়মন্ডকে বলো- গয়ালমারার ঘাসের জমিগুলো যাতে উম্মুক্ত করে দেয়। নইলে ডায়মন্ডে রক্তের নদী বয়ে যাবে। ক্লিয়ার? পরমুহুর্তেই বন্দুকবাজের গুলিতে বারের উপর মুখ থুবড়ে পড়ল একটা বড় কুমড়োর মত ঝাড়বাতি। পিস্তলবাজ দেখছি এখন সরাসরি আমার টেবিলের দিকে এগিয়ে আসছে। ঃ এই মিষ্টার উঠে দাঁড়াও। দেখেতো মনে হচ্ছে নতুন চিড়িয়া, তা এদিকে কি করা হচ্ছে শুনি? ঃ তোমাকে কৈফিয়ত দিতে হবে নাকি? ঃ যদি বলি ঠিক তাই, কি করবে তুমি? ঃ দেখতে চাও? পিস্তলবাজের হাত দেখলাম মসৃণভাবে কোমরে নেমে যাচ্ছে, আর এক সেকেন্ড দেরি করলেই কপালে খারাবি আছে। একটু এগিয়ে গিয়ে ডান পায়ের সবুট লাথি হাঁকালাম তস্করের তলপেটে। হারামীর বাচ্চাটা পাঁচ হাত দূরে গিয়ে ছিটকে পড়তেই তাকে নিরস্ত্র করলাম। এতক্ষণ এ্যাকশনের দ্রুততায় দুবৃর্ত্ত দু’জন নীরব ছিলো। প্রথম বুলেটটা এলো দরজার কাছ থেকে। মাথার তালুতে গরম ছ্যাকা দিয়ে পাশের দেয়ালে গিয়ে বিদ্ধ হলো। প্রচন্ড যন্ত্রণা উপেক্ষা করে সবে দাঁড়িয়েছি তক্ষুনি ডানদিকের নড়াচড়াটা ধরা পড়লো। কিন্তু ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বামকাঁধে বুলেটের কামড় অনুভব করলাম। মাটিতে শোয়াবস্থাতেই পর পর দুটি বুলেট পাঠিয়ে দিলাম। প্রথম বুলেটটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও দ্বিতীয় বুলেটটা খুনির কপালে লাল টিপ একে দিলো। এরমধ্যে বারের পিছন থেকে হঠাৎ করে শটগান হাতে বেরিয়ে এলো স্বয়ং বারকিপার – এলি। ঃ এই তোমরা অস্ত্র ফেলে দাও। বুঝতে পারছো নিশ্চয়ই নইলে কি হবে? এতো কাছ থেকে শটগানের গুলি খেলে দু’টুকরো হওয়ার ইচ্ছে কারো নেই। দু’হাত মাথার উপরে তোলে বেরিয়ে এলো ওরা দু’জন। আর তক্ষুনি ডেপুটি শেরিফ রয় এসে তাদের হাতে হাতকড়া পড়ালো। এদিকে কখন যে, এলি আমাকে ব্যান্ডেজ করা শুরু করেছে আমি খেয়ালিই করিনি। : ঃ মনে হচ্ছে,জীবনের তোয়াক্কা তেমন একটা করো না। তারমানে কাউকে তুমি কথা দাওনি? ঃ দেখো ম্যাম, আমি একজন ভবঘুরে, কোন মেয়ের মাথা নষ্ট যে আমার গলায় মালা পড়াবে? ঃ এখানে হচ্ছেটা কি? শুনলাম, আমার কাউহ্যান্ড রেড খুন হয়েছে? একজন অপূর্ব সুন্দরী স্বর্ণকেশের অষ্টাদশী পুরো সেলুনে আলো ছড়িয়ে দিলো! জীবনে আমি বহু সুন্দরী মেয়ে দেখেছি কিন্তু এমনটি কখনো নয়। চলবে।
Make sure you enter the(*)required information