ওয়ান্টেড - >>>>>WANTED (DEAD or, ALIVE)৷ ৪র্থ পর্ব। একে ধরিয়ে দিন। ( জীবিত কিনবা মৃত) |||||||||||||||||||||||||| (পশ্চিমা কাহিনীর ধরনে) |||||||||||||||||||||||||||||| তেষ্টায় বুকটা ফেটে যাচ্ছে, পুরো শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা,নড়াচড়ার সামর্থ্য পর্যন্ত নেই। কি যে করি? এই মিষ্টার অন্ধকারে শুয়ে আছো কেন,তুমি কি আহত? প্রশ্নকারীর কন্ঠ শুনে বুঝতে পারলাম তিনি একজন বয়ষ্ক ভদ্রলোক। তারপর তিনি ঘোড়া থেকে নেমে এসে অবলীলায় আমাকে তার ঘোড়াটায় কোনাকুনি করে তুলে নিলেন। অল্প কিছুদূর যাবার পর বুঝতে পারলাম কাছেই পরোপকারী লোকটা তাঁর ক্যাম্প করেছেন। ঃ দেখি একটু কষ্ট করে উঠে বসার চেষ্টা করো। কচি মুরগীর মাংসের স্যুপ করেছি। ঃ থ্যাক ইউ জেন্টেলম্যান। আগে আমি একটু পানি পান করবো। ঃ না, খালি পেটে পানি খেলে তোমার বমি হবে। তাছাড়া আমি এখনো তোমার জখম চেক করিনি। এতো সুস্বাদু স্যুপ আমি জীবনেও খাইনি। আচ্ছা মুখের ভিতর লবনাক্ত ভাব এতো প্রবল হচ্ছে কেন? পরদিন ভোরে ঘুম ভাঙ্গতেই দেখলাম এক চমৎকার প্রকৃতির কোলে শুয়ে আছি। ছোট ছোট সব পাহাড়, গর্বিত মায়ের মতো সন্তান বুকে দাঁড়িয়ে আছে ফলবতী সববৃক্ষ,সোনালী ধানি জমি ! আহা! আমি যদি কবি হতাম। এবার দিনের আলোতে উপকারী লোকটাকে দেখলাম। একজন মধ্যবয়সী বেটে খাটো স্বাস্থ্যবান সুবেশী ভদ্রলোক। মুখের ডানদিকে একটা কালো কাটা দাগে তাকে আরো বেশি পরিনত লাগছে। ঃ এই মিষ্টার ঘুম তাহলে ভেঙ্গেছে, রাইড করতে পারবে? ওহ সরি, তুমি তো আবার ঘোড়া হারিয়েছো। আচ্ছা বলোতো গত রাতের ঘটনাটা কি? ওরা কারা ছিলো? সন্ধ্যা রাতের পুরো ঘটনাটা খুলে বললাম। ঃ ঠিক আছে চলো, ঐ জায়গায় গিয়ে দেখি কোন ক্লু পাই কিনা। ঃ তুমি ? ঃ আমি পার্কার। পুটিবিলার টমি জেনারেল ষ্টোরের মালিক। ঃ তুমি? ঃ আমি শ্রেফ একজন ভবঘূরে। যা ভেবেছিলাম রাসলাররা কোন ক্লুই রাখেনি। এমনকি তারা ঘোড়ার খুরের চিহৃ মুছে ফেলার জন্য গানি ব্যাগ পর্যন্ত ব্যবহার করেছে। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার রাসলাররা স্থানীয় এবং এ কাজে কাউহ্যান্ডের মতো দক্ষ। তার মানে তারা কোন আউটফিটের পাঞ্চার। পার্কার চলে যেতে আমিও যাত্রা প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রথমে কয়লার আগুন নিভিয়ে পরে চুলাটা ভেঙ্গে দিলাম। গন্তব্য হাটখোলা মূড়া- নেলসনের আস্তাবল। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে- হাটখোলা মূড়া যেতে হলে রাতার খাল ধরে যেতে হবে যেখানে বর্তমানে একবুক সমান পানি। বাধ্য হয়ে কুমুদিয়াডুরি থেকে সাঁতরিয়ে করইল্লাকাটার মুখ পর্যন্ত এলাম। এবার দূগর্ম পাহাড়ী পথ পায়ে হেঁটে পেরুতে হবে। সবে রাতার খাল থেকে করইল্লা কাটার মুখে এসে দাঁড়িয়েছি তখনি মনে হলো করবস্থানের ওপার থেকে রাইফেলের নলের ঝিলিক দেখলাম। তারপরের মুহুর্তে রাইফেলের গর্জন শুনতেই বামদিকে ড্রাইভ দিয়ে পড়েছি। বুলেটটা একটু আগে যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম সেখানে এসে কদম গাছটার বুক বিদীর্ণ করে দিলো। ক্রল করে সামনের দিকে এগুতে থাকলাম। খাঁড়া পাহাড়,ছোট ছোট সব চৌকা পাথর তার উপরে চোখের পাতায় একটা বদ মশা আটকা পড়েছে। অবশেষে, বহু কষ্টে কবরস্থানের পিছনে চলে এলাম। এখন আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি,খুনী ব্যাটা কবরস্থানের পাশে পশ্চিমমুখী হয়ে শুয়ে রাইফেল সাইটে চোখ রেখে আমাকে খুঁজছে। হারামীর বাচ্চাটা এখনো বুঝতে পারেনি আমি তার ঠিক পিছনে চলে এসেছি। ঃ এই মিষ্টার এক্ষুনি অস্ত্র ফেলে উঠে দাঁড়াও, আমার পিস্তল তোমায় কাভার করে আছে। মুহুর্তের মধ্যে আততায়ী ঐ অবস্থা থেকে ডানদিকে ফিরেই ট্রিগার টেনে দিলো। তারমানে ব্যাটা নিশ্চিন্ত ছিলো আমি সম্পূর্ণ নিরস্ত্র। তাই আমার থ্রোয়িং নাইফটা যখন তার গলায় এসে বিঁধলো তখনো সে অপার বিষ্ময় নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো আর ঐ অবস্থাতেই নীচু লোকটা মারা গেল। নেলসনের আস্তাবলে সব উন্নতজাতের ঘোড়া। বিশেষ করে মাসট্যাং ঘোড়া দেখে বিষ্মিত হলাম। আমেরিকার বন্য এ ঘোড়া এদেশে কিভাবে আসে? নিশ্চয়ই চোরা পথে কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব! মাসট্যাং সম্পর্কে বহু গল্প শুনেছি, উত্তর আমেরিকাতেই নাকি মাসট্যাং এর সংখ্যা ০২ (দুই) মিলিয়নের উপরে। Wyoming, Oregon এবং Montana তে এই ঘোড়ার কদর ও ব্যবহার বেশি। বন্য শক্তিশালী ও দ্রুত গতির হওয়ার কারণে পশ্চিম আমেরিকাতে প্রায় সব আউটল’ই এই ঘোড়া ব্যবহার করে। যাক, অবশেষে অনেক দরাদরি করে ১৬ হাজার টাকায় কালো একটা মাসট্যাং কিনলাম। নেলসন লোকটা বড্ড হিসাবী এবং অবস্থা বুঝে দাম হাকাতে পটু লোক। আমার গন্তব্য সজারু মারার ডাবল ডায়মন্ড র্যাঞ্চ যেখানে আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে স্বয়ং মিস লুনা। আমরা একত্রে লাঞ্চ করবো। অথচ ভাবলাম একটা,হলো তার বিপরীত! ঃ ম্যাডাম তো গতরাতে তিনগরইগ্গা পাড়াতে গেছে, এখনো ফেরেননি। ঃ কেন গেছে তুমি কি কিছু জানো? এবার আকাশ থেকে পড়লো গেটরক্ষী। ঃ কি ব্যাপার ম্যান গতরাতে কোথায় ছিলে, তুমি কি জানো না জেড র্যঞ্চে আগুন লেগে মারা গেছে ছয়জন কাউবয় সাথে তাদের ফোরম্যান। ঃ সরি গতকাল রাতে আমি এই এলাকার বাহিরে ছিলেম। কাউবয়তে ক’দিন আগে জেড র্যাঞ্চের এলিচার কথা শুনেছি। তার বাবা নাকি দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র ইতিহাসবিদ ছিলেন এবং একজন সফল বাথান মালিক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনিই একমাত্র র্যাঞ্চার যিনি তিনগরইগ্গা পাড়া থেকে ক্যাটেল ড্রাইভ করে দোহাজারী রেললাইন পর্যন্ত নিয়েছিলেন, এরপর রেলে করে চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়তলী গরু বাজারে। ঐ বছর ঐগুলিই ছিলো বাজারের সেরা পশু। চলবে
Make sure you enter the(*)required information