চুনতি গ্রামের সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে হাজারো লাইন হয়ত লিখা হবে, কলমের কারাগারে আবদ্ধ হবে কত শত কবির কবিতা তবুও এই গ্রামের কীর্তিগাথা লেখা শেষ হবেনা। এক কথায় অতি সংক্ষেপে বলতে হয় চুনতি একটি ব্রান্ড। পুরো বিশ্বে কোন আদর্শ গ্রামের মডেল খুঁজতে হলে চুনতির উপমাই মনে হয় সর্বাগ্রে আসবে। আলোকিত চুনতির কিছু মানুষের হাত ধরে প্রিয় গ্রাম এগিয়ে যাচ্ছে দূর্বার গতিতে। আমার লেখার শিরোনাম একটু ব্যতিক্রম। হয়ত চিন্তাটাও। ০৫ মে ২০২২ খ্রি. চুনতিবাসীর জীবনে এক ঐতিহাসিক দিন, চুনতিবাসী এমন কিছুর সাক্ষী হল যা হয়ত কেউ আগে এত গুছিয়ে ভাবতে পারেনি বা করার পরিকল্পনা করতে পারেনি। চুনতির নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে খান পরিবারের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ "চুনতি লাইট হাউজ " লাইট হাউজ শব্দের বিশালতা ও ব্যাপকতা যথাযথভাবে অনুধাবনের জন্য আমাদের গভীরভাবে ভাবতে হবে। বাতিঘর বা লাইটহাউজ আমাদের ভিতরকার অজ্ঞতা দূর করে দেশ ও সমাজকে আলোকিত করবে৷ জ্ঞানই শক্তি এটা যেমন সত্য, তেমনি জ্ঞানই আলো এটাও চিরন্তন সত্য। অজানা বিষয়গুলো অন্ধকার ভেবে জানা বা জ্ঞানকে আলো ভেবে আমরা একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে লাইটহাউজের মর্মার্থ সহজেই উপলব্ধি করতে পারব। চুনতি লাইট হাউজ হবে নলেজ সেন্টার বা জ্ঞানের এমন এক কেন্দ্র যেখানে এসে মানুষ অজানাকে জানবে, অদেখাকে দেখবে, নিজের ভিতরকার অজ্ঞতাকে দূরীভত করে পুরো গ্রাম, সমাজ ও দেশকে আলোকিত করবে। জ্ঞানের যেমন কোন সীমারেখা নেই, ঠিক তেমনি চুনতি লাইট হাউজ নামের এই ডিজিটাল লাইব্রেরিতে পুরো বিশ্বের মানুষ অসীম জ্ঞানের সাগরে ডুব দিতে পারবে নিমিষেই। মানুষের জন্য কল্যাণকর যত ধরনের জ্ঞানের উৎস আছে সবগুলোর সম্মিলন ঘটাবে চুনতি লাইট হাউজ। চুনতি লাইট হাউজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ও পরিকল্পনা যাদের হাত ধরে এসেছে মূলত উনাদের পরিবারটাই চুনতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ লাইটহাউজ। খান মন্জিলের সর্বজন শ্রদ্ধেয় মরহুম ইসলাম খাঁন, মরহুম মুসলিম খাঁন কত বড় মাপের আলোকিত মানুষ ছিলেন সেটা উনার রেখে যাওয়া প্রজম্মের দিকে তাকালে সহজে অনুধাবন করতে পারি। খান পরিবারের কর্তারা নিজেরা আলোকিত মানুষ ছিলেন, হৃদয়ের বিশালতা ও উদারতা দিয়ে সন্তানদের এমনভাবে মানুষ করলেন যারা হয়ে উঠল চুনতির হিরার টুকরো। আমি বিস্মিত ও অভিভূত হয়ে দেখি এই পরিবারের সদস্যদের নীরবে আলো বিলানোর কর্মযজ্ঞ। খান মন্জিল চুনতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ লাইটহাউজ যার আলোয় আলোকিত হয়েছে আজকের পুরো চুনতি। চুনতি অসহায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনে আশার আলো ও নতুন দিনের স্বপ্ন দেখিয়েছে খান ফাউন্ডেশনের গৃহীত জনকল্যাণকর নানা পদক্ষেপ। উনারা যতটা বিত্তশালী তার চেয়ে বেশী চিত্তশালী। উনাদের প্রতিটি কথা, চিন্তা চেতনা আমাদের চুনতিবাসীদের একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাসেজ বা বার্তা দেয়, দেখ চুনতিবাসী আমরা নিজেদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে প্রিয় গ্রামের জন্য নিঃস্বার্থভাবে করে যাচ্ছি। তোমরাও যারা বিত্তশালী চাইলে এই গ্রামের কল্যাণে কাজ করতে পার। উনাদের প্রিয় চুনতির প্রতি নিখাদ দরদ ও ভালবাসা আমাদের চুনতিপ্রেমকে উজ্জীবিত করে, আমরা আন্দোলিত হই। খান পরিবারের শ্রদ্ধাভাজন আসাদ খান স্যার, মাসুদ খান স্যার, সুরাইয়া জান্নাত ম্যাম, সাজ্জাত খান উনারা কত বড় ও উদার মনের অধিকারী তা আমরা চুনতি লাইট হাউজ প্রতিষ্ঠার মহতী উদ্যোগের দিকে তাকালে সহজেই বুঝতে পারি। স্বার্থপরতার এই সমাজে কারো ১ টাকা থাকলে কিভাবে ২ টাকা করবে, ১০০ টাকা থাকলে ২০০ টাকা করবে সেই চিন্তা করে, কিন্তু এই মহৎপ্রাণ মানুষগুলো নিজেদের সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে স্বার্থপরতার অনেক উর্ধ্বে উঠে কোটি টাকা খরচ করে প্রতিষ্ঠা করলেন "চুনতি লাইট হাউজ " একজন মহীয়সী নারীর মস্তিষ্কপ্রসূত চিন্তা, সূদুরপ্রসারী পরিকল্পনার ফসল আজকের " চুনতি লাইটহাউজ " তিনি আর কেউ নন আকাশের মত বিশাল মনের অধিকারী প্রিয় Suraiya Zannath ম্যাম। যিনি নিজের সবটুকু বিলিয়ে দিয়ে আর্ত মানবতার সেবায় নিয়োজিত থাকেন তারপরও আক্ষেপ করে বলেন "আমার যদি আরো থাকত আমি যদি আরো বেশী অসহায় মানুষের সেবা করতে পারতাম" উনার মুখ নিঃসৃত এই কথাগুলো আর আমাদের সামনে প্রতিনিয়ত করে যাওয়া কাজগুলো প্রমাণ করে উনি কত বিশাল হৃদয়ের মানবদরদী মহীয়সী নারী। একজন আলোকিত মানুষের চিন্তার গভীরতা ও নিঃস্বার্থ মনোভাবের উপর ভিত্তি করে চুনতি লাইট হাউজের বীজ বপন হল। এটি পরিপূর্ণ গাছে পরিণত হবে ইনশা আল্লাহ, তবে এটার পরিচর্যার ভার আমরা চুনতিবাসী সবার। খান পরিবারের পরবর্তী উত্তরাধিকার যারা উনারাও সবাই আলোকিত মানুষ। তাই আমরা চুনতিবাসী আশাবাদী চুনতি লাইট হাউজ শুধু চুনতি নয়, পুরো দেশ ও বিশ্বকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করবে ইনশা আল্লাহ। চুনতি লাইট হাউজ ফুলের কলির মত, অচিরেই ফুল হয়ে ফুটবে, মনমাতানো সৌরভে বিমোহিত করবে প্রিয় চুনতির সবাইকে। চুনতি লাইট হাউজের সর্বাঙ্গীন সফলতা কামনা করছি।বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে সংযুক্ত থাকুন www.chunatilighthouse.com এলেখকঃ মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান তুষার সেকশন অফিসার, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়,ঢাকা
Make sure you enter the(*)required information