আমার দাদাজান 'চুনতি শাহ সাহেব কেবলা' যখন এই দুনিয়া থেকে অদৃশ্য হলেন তখন আমার বয়স ৩-৪ বৎসর। উনার সাথে আমার সৃতি- উনি উনার রুমের মধ্যে নিচে বসে ভাত খাওয়ার সময়ের সামান্য দৃশ্য আমার মনে আছে। তা ছাড়া একটা দুইটা সৃতি হয়ত গভীর চিন্তা করলে বলতে পারব। কিন্তু উনার অগণিত আশেক/বক্ত দের সাথে আমার জীবনের ২০০৬ সাল পর্যন্ত, প্রায় ২৬-২৭ টি বৎসর আমি নিরবচ্ছিন্ন ভাবে কাটিয়েছি। হযরত হাফেজ হারুন (রহঃ) সাহেব তাদের মধ্যে অন্যতম। দাদাকে উনি " আঁর মৌ" বলে ডাকতেন। যদিও বয়সে বাবা বড় ছিল তবুও উনাকে 'হাফেজ সাহেব জেটা' বলে আমরা ডাকতাম। আমার বাবা- মা উনাকে নিজের ভাই হিসেবে জানতেন। আমাদের সুখে দুঃখের ভাগাভাগিতে আমার মা-বাবা উনাকে কাছে পেতেন। চুনতি শাহ মনজিল ও সিরত মাহফিলের যাবতীয় কর্মকাণ্ডে উনার অন্যতম ভুমিকা অকপটে স্বীকার করে নিতে হবে। যদিও বা ছোট্টবেলা থেকে উনার সামনেই আমার বেড়ে উঠা, কিন্তু যখন আমার বযস ২১-২২ বৎসর, সিরত মাহফিলের দাওয়াত ও চাঁদা সংগ্রহের উদ্দেশ্য বিবিধ কাজের সাথে আমার সম্পৃক্ততায়, উনাকে অতি কাছথেকে উনার একান্ত 'ব্যক্তি জীবন' জানার সুযোগ হয়েছিল। এত সল্প পরিসর সময় উনার সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। উনি নিজে নিজের কাছে সবচেয়ে সম্মান বোধ করতেন 'শাহ সাহেব কেবলা’র খাদেম হিসেবে পরিচয় দিতে । উনার জীবনের প্রথম দিকে, পরবর্তীতে চুনতির 'হেফজ খানা' য় কর্ম জীবন তথা শাহ সাহেব কেবলা’র জীবদ্দশায় উনার শহরমুখি উন্নত জীবন যাপনের চেষ্টা বিফলে যেতো না। উনি বলতেন শহরের জীবন যাপনের একটি মহো আমার ছিল এবং সুযোগ, যোগ্যতাও ছিল। একটি যায়গা নিয়ে ঘর করে বাচ্চাকাচ্ছা নিয়ে তাকার ইছাও ছিল। কিন্তু " আঁর মৌ" র চেহেরাটা দেখার সাথে আমার দুনিয়াদ্বারীকে অতি তুচ্ছ মনে হতো। উনি খুবই মিষ্টবাসি, তিকন্ বুদ্ধিসম্পণ, সাহসী, সত্যবাদী, নির্লিপ্ত ব্যক্তিত্ত্ব সম্পন্ন একজন আশেকে রাসূলের ওফাদার খাদেম ছিলেন। উনার জীবনের প্রধান মূখ্য বিষয় ছিলো চুনতি শাহ সাহেব কেবলা ও তার পরিবার তথা শাহ মনজিল এবং শাহ সাহেব কেবলা’র গড়ে যাওয়া সিরতুন্নবী (সঃ), মেহরাজুন্নবী (সঃ) মাহফিল সহ অনান্য যাবতীয় মাহফিল সমূহ সফল আনজামে সবসময় সচেষ্ট থাকা। উনার মৃত্যুর ৩-৪ মাস আগে সালটা ঠিক মনে নেই , যখন আমরা উনাকে জানালাম উনার শরীরের ভেতরের হার্ট পেসমেকারটা পূণরায় সংস্থাপন করা দরকার এবং কোনো খরচের চিন্তা করতে হবে না। উনি বললেন "আঁর মৌ আঁরলায় অপেক্ষা গরের " (আমার দাদা শাহ সাহেব কেবলা উনার জন্যে অপেক্ষা করছেন)। এত প্রশান্তি নিয়ে কিভাবে মানুষ মৃত্যুকে বেচে নিতে পারে?সুগন্ধি ব্যবসায় জড়িত থাকলে আলাদাভাবে নিজের শরীরে সুগন্ধি মাখানোর প্রয়োজন হয় না। শরীর থেকে আপনা আপনি সুগন্ধি ছড়াতে থাকে। আশেকে রাসূলের সাথে থাকলে ইসকে্ মুহাম্মদী আপনা আপনি হয়ে যায়। আর এই ইসকে মুহাম্মদীর সামনে দুনিয়া বড়োই নগন্য।প্রফ রিড়ারঃ ফারিয়া মরিয়াম
Make sure you enter the(*)required information