পরীকন্যার নাম তাছলিমা মালিক 🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿 প্রথমের পর- শেষাংশ - |||||||||||||||||||||||||||||||||||| আচ্ছা তাছলিমা এখন কই মিশর নাকি এদেশে। তার সাথে কি আমার আর কখনো দেখা হবে না? এখন আমি দূর্বাঘাস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি। সাধারণ স্বাভাবিক খানাপিনাতেও চরম অরুচি এসে গেছে। ফলে আমার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে দিন দিন। চোয়াল বসে গেছে গর্তে দুটি চোখ,কালো কালিতে সয়লাব পুরা অবয়ব। সেদিন দুপুরে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখনি মাথায় নতুন আইডিয়াটা এলো। আচ্ছা কাঁচা কচি মুরগীর মাংসের সাথে গরম গরম রক্ত পান করলে কেমন হয়? লাল মুরগীটা মাত্র ডিম দেয়া শুরু করেছিলো। এখন আমি তাকে একহাতে চেপে ধরে গলায় মুখ রেখে রক্ত পান করছি। অন্য হাতে তার পালক চামড়া নিচ দিকে নামিয়ে নিলাম। কাঁচা মাংস এত সুস্বাদু আগে তো জানা ছিলো না! সে থেকে শুরু। পরবর্তীতে কবুতর, মোরগ, হাঁস এমনকি একবার একটা বড় ছাগিকে পর্যন্ত একই কায়দাতে সাবাড় করেছি। তবে পরিবেশ রক্ষার জন্য বরাবরই উচ্ছিষ্ট নাড়ী ভুড়ি মাটি চাপা দিয়েছি। ইদানিং বাড়ির কালো কুকুরটা যেটা দেখতে অনেকটা হাউন্ডের মত সে আমাকে দেখলেই চিৎকার চেচাঁমেচি শুরু করে। এর নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে যা আমাকে জানতেই হবে। তবে পাঠক, আপনাদেরকে একটা কথা না বলে পারছি না’ তা হচ্ছে- এখন আমাকে দেখলে সব অবলা গৃহপালিত প্রাণীগুলি নিরব হয়ে যায়। একদিনের ঘটনা বলছি। 🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴 চমৎকার এক বিকালে বাগানে হাঁটছিলাম। তখনি পাশের বাড়ির কালো বিড়ালটার সাথে আমার চোখাচোখি হলো। নিমেষে দেখলাম বিড়ালটার চেহারায় ভয়ের ছাপ ছড়িয়ে পড়ছে। আমি তো বিড়ালখেকো নই, তবে ওর এতো ভয় পাবার কারণ কি? এদিকে আবার কদিন ধরে চিন্তা করছি খাদ্য অভ্যাস বদলাবো। আচ্ছা অনেক কিছু তো খেলাম, এবার নরমাংসভোজী হলে কেমন হয়? কিন্তু কোথায় পাবো নরমাংস? বড় বাড়ি কবরস্থানে বিকালের দিকে এক যুবককে কবর দেয়া হয়েছে। শুনেছি রোড এক্সিডেন্ট তার মৃত্যুর কারণ। এবার আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। পাঁচ ব্যাটারির টর্চ, চাঁন্দা ব্যাটারি লোডেড। একটি বড় কোদাল, ষ্টিলের বেলচা, একজোড়া হ্যান্ড গ্লভস আরো কিছুকি লাগতে পারে? 🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴 কালো কুচকুচে রাত। সিকো ফাইভের কাটা রাত এগারটা ছুঁই ছুঁই,নি:শব্দে এগুচ্ছি। গন্তব্য বড়বাড়ী গোরস্থান। হাতে পিঠে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। মনে মনে প্রার্থনা করছি যেন পথে কারো সাথে দেখা না হয়। পিছনে প্রমাণ রেখে সামনে এগোবার মানুষ আমি অন্তত: নই। সুপ্রিয় পাঠক, আমার পোষাক সম্পর্কে জানতে ইচ্ছে হচ্ছে নিশ্চয়? এডিডাসের কালো টি-শার্ট,ওশান ব্লু কড পেন্ট আর পায়ে খাদেমের দূরন্ত হকি বুট। তবে বুটের তলায় জুতোর তলা সাইজের চেয়ে এক কিছুটা বড় ই এক টুকরো তক্তা লাগিয়ে নিয়েছি। যাতে আমার পদাঙ্ক সনাক্ত করা না যায়। নিকষ অন্ধকারেও নতুন ঘেরা সহজে দৃষ্টিতে এলো। তারের বন্ধন আলগা করে একদিকের বেড়াটা আলগা করে দিলাম। তারপর দ্রুত কোদাল আর বেলচা চালিয়ে নতুন মাটি আলগা করে লাশের উপরের বেড়া পর্যন্ত গিয়ে থমকে দাঁড়ালাম। মনে হচ্ছে নিচে কিছুই নেই। নাকি আমার দৃষ্টির বিভ্রাট! পাঁচ ব্যাটারির টর্চের আলোতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে মূর্দার গায়ে কোন কাপড় নেই। মাটির রংয়ের সাথে তার নি:প্রাণ শরীর মিশে আছে। তারমানে,কাফনের কাপড়টা চুরি হয়েছে। আর আমার আগে কেউ করবটাতে এসেছিলো। তাই তো বলি এতো সহজে আমি কিভাবে কবরের মাটি আলগা করতে পারলাম। যাক এখন বেশী ভাবাভাবির টাইম নাই। যা করার এক্ষুনি করতে হবে। দ্রুত বাশেঁর বেড়াটা খাড়া করে দিয়ে লাশ পিঠে নিয়ে উপরে উঠলাম। মৃত দেহটা এতো ভারী ঠেকছে কেন? পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গোরস্থানের একদিকে সরে আসি। ইতিমধ্যে লাশটাকে দক্ষিণমুখী করে শোয়ানো হয়েছে। পকেটের সেভেনওক্লক ব্লেড দিয়ে মাথার চারদিকে দাগ কেটে দিয়েছি। প্রথমে মগজ খেতে চাই। তারপর কলিজা। এরপর ? এরমধ্যে হাতের তালুতে কয়েকশ গ্রাম' হলুদ মগজ তুলে নিয়েছি। শুধু মুখে দেবার অপেক্ষা। আর তক্ষুনি ঘটলো অকল্পনীয় ঘটনাটা। প্রচন্ড জোরে কেউ যেন আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। হাত থেকে ছিটকে পড়েছে মগজ। অত:পর অচেনা কন্ঠ গমগমিয়ে উঠলো- ঃছি ছি একি করছো তুমি মানব সন্তান? তুমি যে দেখছি পিশাচ হয়ে গেছ। মানুষ হয়ে মানুষের মাংস ভক্ষণ! তোমায় আমি সাবধান করছি, এক্ষুনি উঠে দাঁড়াও। ঃ আমায় উপদেশ দিচ্ছো,তুমি আবার কে? ঃআমি জ্বীন সর্দার সরফরাজ মালিক। হাটখোলা মূড়ায় কয়েকশ বছর ধরে আছি। ঃ আমি তোমায় চিনতে পেরেছি হুজুর। ঃ তাহলে বলো তোমার এমন অধঃপতন হলো কিভাবে? দূর্বাঘাসের প্রতি আসক্ত থেকে শুরু করে তাছলিমা মালিক পর্যন্ত সব কাহিনী উপস্থাপন করতে সরফরাজ মালিক তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। ইতিমধ্যে তাছলিমা এসে তার পূর্ব পুরুষের সামনে নতজানু হয়ে দাঁড়িয়েছে। 🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴🌴 সরফরাজ মালিকঃএই তাছলিমা’ তুমি এই যুবকের এই দূরাবস্থা করেছো কেন? তুমি কি জান না আমাদের অন্তরগত ক্ষমতার অপপ্রয়োগের শাস্তি কি? তাছলিমা মালিকঃ সম্মানিত পূর্ব পুরুষ তবে শুনুনঃ এই যুবক অত্যন্ত দূর্বিনীত আমাকে ছুঁয়ে অপবিত্র করতে চায়,তাই তো রক্ষাকবচ প্রয়োগ করে তার মস্তিষ্কে বিকৃতি ঢুকিয়ে দিয়েছি। সরফরাজ মালিকঃআর ঐ যুবকের দূর্বাঘাসের প্রতি আসক্তি কি করে হলো? তখন কি তোমার সাথে সে পরিচিত ছিলো? তাছলিমা মালিকঃজ্বি না, আমি তার গায়ে মাখা সুগন্ধিতে মাতাল হয়ে তাকে আরো সুন্দর করে দেখার জন্য ঐ কু-বুদ্ধিটা দিয়েছিলাম। সরফরাজ মালিকঃতুমি সীমালংঘন করেছো, এখন এই যুবককে তন্ত্রমুক্ত করো। তারপর আল্লাহর কাছে মাফ চাও। পরমুহুর্তে দেখলাম আমার সামনে বা পিছনে কেউ নেই। এবং এই অন্ধকারেও কবরের নতুন বেড়া চকচক করছে। কোথায় ঐ হতভাগ্য যুবকের লাশ, তার কোন চিহৃমাত্র নেই! অতঃপর আমি পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছি। তবে পরীকন্যা তাছলিমাকে ভুলিনি,ভুলেছি তার স্বার্থপরতা আর রক্ষাকবচের কথা! সমাপ্ত।
Make sure you enter the(*)required information