(পর্ব-১)
মনুকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে লিখতে বসলাম। সে জেগে থাকলে কিছুতেই লেখা হয় না। সে রেগে থাকলে কিছুতেই একা রয় না। যখন সে জেগে থাকে, সারাক্ষণ আমার সাথে লেগে থাকে, না হয় আমার উপর রেগে থাকে। তার রাগ ভাঙ্গাতে, তার জেদ কমাতে আমার পোহাতে হয়, ধৈর্যের চূড়ান্ত ধাপ পেরুতে হয়। কখনও কখনও পান থেকে চুন খসলেই এই ঘরের প্রতিটি কক্ষে বজ্র ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়, কখনও কখনও মোহন সুরে এই ঘরের প্রতিটি দেয়াল ইন্দ্রানী দোলায় দোল দোলে। টেবিলের কোনায় দৃশ্যমান অন্তরাল ঘড়ির কাঁটা নিরন্তর ঘুরে। তার প্রতিটি সেকেন্ডে, প্রতিটি মিনিটে ভিন্ন ভিন্ন কাব্য রচিত হয়। কোন কোন কাব্যের অন্ত্যমিল থাকে, কোন কোন কাব্য অমিল অন্ত নিয়ে গভীর উপলব্ধি কিংবা নিরস বাস্তবতায় রচনা হয়ে যায়। প্রতিটি গল্পের, প্রতিটির পর্বের ভিন্ন ভিন্ন রূপ, রস, ভাব। কিন্তু প্রতিটি কাব্যের একটাই মূল, প্রতিটি ছন্দের একটাই সুর, ’ভালোবাসি’। কেন ভালোবাসি?
তাকে ভালোবাসার সুনির্দিষ্ট কোন কারণ নেই। তাকে ভালো না বাসারও উপযুক্ত কোন কারণ নেই। সহজ কথায় ভালোবাসি, তাই ভালোবাসি। তাকে ভালোবাসতে আমার ভিটেমাটি বেচতে হয় নি। সাত সমুদ্র- তের নদী পার হয়ে তার কাছে যেতে হয় নি। তার ভালোবাসা পেতে, তার ছোঁয়া পেতে আমাকে তপস্যার পথ ধরতে হয় নি। দিবস রজনী মিথ্যার খোলসে বিজ্ঞাপনও দিতে হয় নি। শুধু বন্ধক দিয়েছি ভালোবাসা, উপহার দিয়েছি প্রেম, বিনিময়ে পেয়েছি তার ধ্যান, তার বিশ্বাস, বেঁচে থাকার প্রেরণা। তার রাগে অনুরাগ, শাপে অনুতাপ, ভর্ৎসনার প্রতিটি পরতে ভালোবাসার ছাপ। তবুও সন্দিগ্ধ মন প্রতিক্ষণ জপতে পারে, প্রশ্ন করতে পারে ’আসলেই কি তাকে ভালোবাসি’?
নিখাদ ভালোবাসায় কোন সংশয় থাকতে পারে না।
(চলবে)