Login Sign Up Subscription Forgot Password
Chunati.com
  • Home
  • Chunati Barta
  • Who's Where
  • Books
  • Writer's Column
  • History
Latest Update
  • বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও আইআইইউসি চট্টগ্রামের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আবু বকর রফিক আহমদ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
  • একজন নিয়াজ আহমদ খান
  • চুনতি সমিতি ঢাকার ২০২৫ সালের শিক্ষাবৃত্তির আবেদন আহ্বান
  • বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম জেলার নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন শাকিলা সোলতানা
  • বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও আইআইইউসি চট্টগ্রামের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আবু বকর রফিক আহমদ, চুনতি ফাতেমা বতুল মহিলা ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতি মনোনীত
  • এশিয়া উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিসের সান্নিধ্যে কিছুক্ষণ
  • ।। দাদা-দাদী বৃত্তান্ত ।।
  • ব্যবহারিক বিজ্ঞান উৎপত্তি ও বিকাশ
  • রমজানের বরকত
  • Siratunnabi (SM)
  • Blood Bank
  • Illustrious Person
  • Events & Happening
  • Gardens of Remembrance
  • Sher Khani
  • Send Your Profile
  • Photo Album
  • Video Channel


মোজাদ্দেদিয়া তরিকার খলিফা আলহাজ্ব মাওলানা আবেদ (পীর সাহেব, চুনতি)

যাহেদুর রহমান


আব্বা ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সাল গ্রামের বাড়ি চুনতি হতে এম্বুলেন্স যোগে চট্টগ্রাম শহরে হাসপাতালে নেয়ার পথিমধ্যে সাতকানিয়ায় সকাল ৮:৪২ মিনিট মহান আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)।

আমার/ আমাদের পিতা আলহাজ্ব ওবাইদুর রহমান (আবেদ) ১৯৪২ সালে পীরে আউলিয়ার পুণ্যভূমি চুনতি গ্রামের শুকুর আলী মুন্সেফ এর ভ্রাতা উকিল এনায়েত আলী পরিবারের চতুর্থ প্রজম্ম (পারবারিক সাজরা মোতাবেক প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর) মুহাম্মদ ফেরদাউস ও জাহেদা খাতুন এর ২য় সন্তান।
গৌরবান্বিত পরিবারের সন্তান হলেও  আমার দাদা ফেরদৌস কাজের সন্ধানে রেংগুন গিয়েছিলেন কিন্ত অজ্ঞাতকারণে দেশে ফিরে আসেন অল্প বয়সে মারা যান। ফলে সংসারে আর্থিক টালাপোড়েন ছিল।

আমার বাবা যার ডাক নাম ছিল আবেদ তিনি মাদ্রাসা শিক্ষায় এফ এম  ডিগ্রীর পাশাপাশি এস এস সি ও এইচ এস সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৫ সালে কাজেম আলী হাই স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক চুনতি দরদি আয়ুব খান এর বদান্যতায় খন্ডকালীন শিক্ষক ও অফিস সহকারী হিসেবে ১ম কর্মজীবন শুরু করেন। ছোটকালে জয়নগর দিয়ে যাতায়াতকালে প্রায়ই আমাকে স্মরণ করিয়ে দিতেন চুনতির যুবকদের চট্টগ্রাম শহরে পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানে আয়ুব খান এর অসামান্য অবদান এর কথা। এরই মধ্যে নাইট সিটি নাইট কলেজ হতে বি এ পাশ করেন। ১৯৬৭ সালে ডি পি আই অফিসে স্টেনোটাইপিষ্ট হিসেবে সরকারি চাকুরিতে অভিষেক হলেও খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্য পরিদর্শক এবং মার্কেন্টাইল কো অপারেটিভ ব্যাংকে নিয়োগের জন্য গ্রামে পুলিশ ভেরিফিকেশন গেলে আমার দাদা নাকি ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। দুটি ২য় শ্রেণীর সমমর্যাদার সরকারি চাকুরীর লোভনীয় পদ নিয়ে যখন দিধাগ্রস্থ ছিলেন তখন তৎকালীন ওয়াসার সিনিয়র কর্মকর্তা কবি ও গীতিকার ওমেদউল্লাহ খানের পরামর্শে তিনি যোগদালে বিরত থাকেন। ১৯৬৯ সালে কক্সবাজার সরকারি বালিকা  বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম শহরের নাসিরাবাদ সরকারি বালক বিদ্যালয়ে বদলী হন এবং সুজন হিসেবে একাগ্রে ৩১ বছর একই প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবন শেষ করে ২০০৩ সালে অবসর নেন।

১৯৬৯ সালে আধুনগর নিবাসী জয়নুল আবেদীন প্রকাশ জুনু মৌলভীর ১মা কন্যা ইফফত আরা বেগম বুলু অনিচ্ছা (আমার পিতার আর্থিক সীমাবদ্ধতা) স্বত্তেও উনার খালা ফরিদা বেগম প্রকাশ মুহিব্বুল্লাহর মা এর সার্বিক দ্বায়িত্ব নেয়ার প্রতিশ্রতিতে আমার পিতার সাথে বাহুবন্দী হন। নানা বাড়ীর পাশাপাশি চুনতির প্রভাবশালী মোস্তাছিম বিল্লাহ পরিবার বিগত ৫০ বছর আমাদের পরিবারকে আর্থিক ও মানবিক সাহায্যে ভরপুর রেখেছেন যা কখনোই প্রতিদান যোগ্য নয়। আমরা মুহিব্বুল্লাহ পরিবারের অনুদান চিরঝণী।

আমার সার্বিক উত্তরণে আব্বার অবদান অসামান্য। বাড়িতে প্রাক প্রস্ততি শেষে চুনতি হাকিমিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ বছর বয়সে ২য় শ্রেণীতে আমার হাতেখড়ি । ১৯৭৯ সালে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়াকালীন গ্রাম থেকে আব্বার হাত ধরে শহরে পাড়ি দিই কিছুদিন ক্লাস করি সিএন্ডবি কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় । ১৯৮০ ইং নাসিরাবাদ সরকারী বালক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণীতে ভর্তি হই এবং আব্বার সাথেই বিদ্যালয় ছাত্রাবাস এর বাসিন্দা হিসেবে ভালোমন্দ অনেক কিছুর সাথে প্রত্যক্ষ/ পরোক্ষ পরিচিতি লাভ করি। আমার পিতা সেই সময় থেকেই আমাকে নিজহাতে রান্নাবান্না করে পরম যত্নে মানুষ করার চেষ্টা করেছেন। প্রতিদিন ইংরেজি গ্রামার পড়া আর ট্রানস্লেশান করা অনেকটা বাধ্যতামূলক ছিল। যদিও অংকভীতি ছিল তারপরও বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম ৫ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হতাম। কিন্ত ৯ম - ১০ম শ্রেণীতে মুলধারা থেকে কিছুটা বিচ্যুত হই। এস এস সি পরীক্ষার ফর্ম পুরণ এর প্রাক্কালে একদিন খুব ভোরে আমতা আমতা করে আব্বাকে বললাম আমার বন্ধুদের সাথে রাংগুনিয়া বা হালিশহর বেগমজান স্কুল হতে এস এস সি পরীক্ষা দেবো যেখানে নকলের অবাধ সুযোগ আছে। পিতা-পুত্র একসাথে দীর্ঘক্ষণ কেদেছিলাম একজন স্বীকৃত ভালো ছাত্রের এমন পরিনতিতে। আব্বা অভয় দিলেন, সেদিন উনার দৃঢ় অবস্থানের কারণে আমার হতাশা কেটে গিয়েছিল এবং এস এস সি তে ৭০% মার্কস পেয়ে উত্তীর্ণ হই। ১৯৮৮ সালে কমার্স কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হওয়া বাংলাদেশের ১ম বি বি এ প্রোগ্রাম এ নিজের আসন নিশ্চিত করতে সক্ষম হই। ১৯৯২ সেশন পরীক্ষা অনুষ্ঠান ও ১৯৯৪ সালে ফলাফল প্রকাশ শেষে সি ই পি জেড ইয়াংওয়ান কর্পোরেশন এ চাকুরিতে যোগদান, ১৯৯৫ সালে ইস্পাহানী কলেজ এ প্রভাষক । এ ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালে আমার আব্বার কতিপয় শর্তসাপেক্ষ আমার বিবাহ শ্রাদ্ধ। দীর্ঘ ( ৯৯-৭৯) এই বিশ বছর বাবাকে খুব কাছে থেকে দেখেছি। প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম উনার প্রতিদিন কার কার্য্যসুচির।

বাবার একান্ত সান্নিধ্যে বিশ বছর
নিভতচারী, প্রচারবিমুখ, অতি সাধারণ পোশাক কিন্তু পরিপাটি ও কারো দয়া-দাক্ষিণ্য চাননি আমার পিতা।
প্রতিদিন পাচ ওয়াক্ত নামাজ ও অতিরিক্ত ইবাদত নামাজ ও মোরাকাবা (হাটু গেড়ে বসা অবস্থায় চোখ বন্ধ রেখে তাসবিহ পাঠ)
# ফজর নামাজ শেষে মোরাকাবা সূর্যোদয়ের পর নামাজ,
# সকালবেলা প্রাত ভ্রমণ ও নাস্তা শেষে বাসায় ফিরে নিজহাতে রান্নাবান্না ও গোসল শেষে নামাজ
# যোহরের নামাজ ও কোরান পাঠ শেষে মধ্যাহ্ন খাবার
# আসর নামায, স্বল্প মোরাকাবা এরপর বিবিধ পুস্তক পড়া ও রাতের ভাত রান্না
# মাগরিব নামায, দীর্ঘক্ষণ মোরাকাবা
# এশার নামায, স্বল্প মোরাকাবা অতপর রাতের খাবার শেষে দাত ব্রাশ, কিছুক্ষণ পায়চারি এবং রাত ৯:৩০- ১০:০০ টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়া
# রাত ৩/৪ টায় বিছানা ত্যাগ তাহাজ্জুদ পড়া ও ফজর আযান পূর্ব সময় পর্যন্ত মোরাকাবা।
আমি অবাক হতাম মোরাকাবা চলাকালীন পার্থিব জগত থেকে নিজেকে সম্পুর্ণ বিচ্ছিন্ন রাখতেন তবে মুখ ফসকে কয়েক সেকেন্ড হাসি দিতেন।
প্রতি বিষ্যুদবার যেন উনার সাপ্তাহিক ঈদ - সকল কাজকর্ম গুছিয়ে, সমস্ত বাধা ডিংগিয়ে চট্টগ্রাম শহর থেকে মাগরিব নামায এর আগেই যেন ত্বরিকত এর বৈঠক যোগদান ছিল উনার ধ্যান জ্ঞান। আরাকান (চট্টগ্রাম কক্সবাজার) সড়ক এর প্রায় সকল গাড়ীর চালক হেল্পার সাপ্তাহিক নিয়মিত যাত্রী হিসেবে যতটুকু না চিনতেন তার চেয়ে বেশী চিনতেন মাঝপথে পেটের পীড়ায় গাড়ি থামানোর অনুরোধ ও নেমে পড়া (প্রায়শই পুরো যাত্রায় ডাবল ভাড়া গুনতে হতো)।
যতদিন পুরোমাত্রায় সুস্থ ছিলেন স্কুলে ছাত্রদের দেয়ালিকা প্রকাশ, বার্ষিক ম্যাগাজিন, হামদ নাত শেখানো নিজের একান্ত দ্বায়িত্ব মনে করতেন।
জামাকাপড় নিজেই ধোয়া, প্রয়োজন বোধে নিজেই সুচিকাজ করতেন।
নিজের হাত ব্যাগে সর্বদা টুলবক্স রাখতেন যেখানে ছোট ছুরি, কাচি, চিমটা, আয়না, চিরুনি, সুই সুতো, বোতাম সহ নিত্যদিনের টুকিটাকি জিনিস থাকতো।
নিয়মিত রোজনামচা (ডাইরী) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনাবলী, দেনা-পাওনার হিসাব লিখে রাখতেন।
খাবার খেতেন পরিমিত, কখনো ধুমপান করতে দেখিনি, পান সুপারিও কদাচিত। দধি পছন্দ ছিল।
কথা বলতেন কম, শুনতেন বেশী । পছন্দের রং ছিলো হালকা গোলাপি বা ক্রীম হলুদ যদিও পাঞ্জাবি পরিধান করতেন সাদা।
তিনি কখনো উচ্চাভিলাসি কিংবা সম্পদের প্রতি লালায়িত ছিলেন না, তার সন্তানদের জন্য কোথাও তদবির বা দেনদরবার করেছেন কিনা দেখিনি। এমনকি নিজের স্বার্থ হাসিলে উচ্চপদস্থ কিংবা পয়সাওয়ালাদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কিনা দেখিনি।
নিজেকে পীর বলে প্রচার করেন নি এবং একেবারেই সাদামাটা সাধারণ মানুষের ন্যায় চলাফেরা করতেন । এমনকি সীরাত মাহফিল, চুনতি মাদ্রাসার সভায় প্যান্ডেলে সাধারণ মানুষের মাঝে মিশে বসতেন।

আমার পিতা সফল উনার সব সন্তানেরা আজ আত্ননির্ভরশীল। আমাদের গ্রামের বসত বাড়ি অট্টালিকা বিলাসীতা নয় বরং প্রয়োজন মেঠাতে বাদ্যবাধকতা। এখানে নেই কোনো অতিমাত্রার আসবাব বা আভিজাত্য। শুধুমাত্র মাথা গোজানোর ঠাই। আমাদের আর্থিক স্বচ্চলতা এসেছে, তবে প্রাচুর্য নেই।আমাদের অহংকারের সুযোগ নেই আছে শুধু পরিতপ্তি। চুনতি সমাজ আমাদেরকে আপন করেছে সজ্জন হিসেবে, দিয়েছে আকাশছোয়া সামাজিক মর্যাদা। আর এই কৃতিত্ব শতভাগই আমার / আমাদের আব্বার।

১৩ সেপ্টেম্বর সারারাত তোমার নিথর দেহ আমাদের দিকে অপলক সোনালী হাসি মুখে শুধুই দোলা দিচ্ছিল আর বারে বারে যেন বলছিল দাম্ভিকতার জন্য আমি আসিনি, এসেছিলাম তোমাদের সুসন্তান হিসেবে গড়ার জন্য, এসেছিলাম এনায়েত আলী পরিবারের পুনরুত্থান এর জন্য।
বাবা, এতোদিন বুঝতে পারিনি তুমি আসলে কি ছিলে, অনুধাবন করতে পারিনি তুমি কি চেয়েছিলে। পারিনি তোমায় পর্বততুল্য কিছু দিতে। আমরা অযোগ্য সন্তানদের ক্ষমা করো। সেদিনের তোমার নুরানী চাহনি, ডায়মন্ডের ন্যায় দাত আর মোহনীয় ললাট বলে দেয় মহান আল্লাহ তোমাকে তার প্রিয়তম বান্দাদের কাছে নিয়েছেন। বাবা, তুমি এতো মোহনীয় আর আদরের আগে বুঝিনি, থাকতাম দুরেদুরে। আজ ১৫ সেপ্টেম্বর বুকটা শুধুই শুন্যতায় হাহাকার করছে। চোখের পানি ফেলছি নিরবে একাকি। চেহারায় স্বাভাবিকতা রেখে মিশে আছি সাধারণের মাঝে। বাবা, কিভাবে বুঝাই "তোমায় আমি বড্ড ভালোবাসি"




Post Date : Jun 22, 2020
Share

Comments

Leave a Replay

Make sure you enter the(*)required information

Chunati.com~Posting Comments

Important Link

  • Chunati At a Glance
  • Forum
  • Priyo Chunati
  • Condolences
  • Career Corner

Important Link

  • Educational Institutions
  • Clubs
  • Chunati High School Ex-Students Association
  • Terms of Use
  • Terms of Use~Priyo Chunati

Other Links

  • Founder
  • Admin Panel Members
  • Volunteer Panel Members
  • Social Works
  • Feedback

Contact Center

 Contact No: +8801313412646, +8801819383870,+6590252498(S'pore)
 Email: chunati.com@gmail.com

Copyright © 2006 www.chunati.com .All rights reserved.