ফজলে এলাহি আরজু, আমার অন্তরের অতি কাছের জান্নাতবাসি মরহুম মইনুল ইসলাম হিরণ দাদার একমাত্র ছেলে। সম্পর্কে সে আমার ভাইপো ও ভাগিনা এক সাথে। সে-ও তার বাবার মতো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জীবন উন্নয়নের ভাবনায় দিন-রাত তার নিরলস পরিশ্রম, আমি তথা আমাদের সকল আত্মীয় স্বজনরা সহ লোহাগড়া বাসির এক আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিক সে এখন। যেহেতু আপামর সাধারণ মানুষের জীবন উন্নয়নের ভাবনায় তার কর্ম পরিচালনা, সেহেতু তার যেকোনো কর্ম অতি কাছের আপনজন সহ সর্বসাধারণের চোখ এড়িয়ে যায় না। তাঁর ছোট থেকে বৃহৎ সফলতা যেমন আনন্দ দেয় তেমনি তার জীবনের অস্বাভাবিক আচরণ আমাকে পিডা দেয়। পাবলিক ফিগার হওয়ার মধ্যে একটি মজার ব্যাপার আছে তাহলো বৃহত্তর সার্থে জীবন যাপনের আনন্দ। কিন্তু এর কষ্ট ও বৃহত্তর। সাধারন মানুষের সাহায্যের জন্য বৃহত্তর সার্থের মানসিকতার দরকার, কিন্তু এর স্থলে ক্ষুদ্রতর সার্থের দিকে মন চিন্তার মাধ্যমে সেই বৃহত্তর কষ্টের দেখা মিলে। 'ক্ষুদ্রতর সার্থ চিন্তা' পাগলা ঘোড়ার মত দেখলে মনে হবে অনেক আকর্ষণীয়, শক্তিশালী, দ্রুতগামী, প্রফুল্ল। হঠাৎ চেপে বসলেই হল, পেছনে ফেরার সুযোগ পাওয়া যায় না। যতক্ষণ না পগলা গোড়ার মর্জি না হয়। পৃথিবীতে খুব কম মানুষই আছে এই গোড়া থেকে নামতে পেরেছে। হিরণ দাদার সাথে আমার জীবনের পূর্ণ যৌবন বলতে যা বুঝায় ১৮-২৫ বৎসর বয়স সময়টি আমি উনার চেয়ারম্যান ইলেকশন, সিরত মাহফিলসহ নানা সামাজিক কর্ম কান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করেছি। উনি খুবই বুদ্ধিমান, শিক্ষকিত ও সাহসী ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। হিরণ দাদার সাথে আমার সঙ্গ বেশি দিনের না হলেও এতটুকু বুঝার সুযোগ হয়েছিল, একজন মন্ত্রী হওয়ার যত যোগ্যতা দরকার উনার মধ্যেই ছিলো। হিরণ দাদা বলতেন " মানুষের জন্য কাজ করলে সকলের উপকার একসাথে সম্ভব নয়। তাই কাজ করলে দুষমনও হবে স্বাভাবিক, আর কাজ না করলে দুষমনও হবে না।"উনার কাছাকাছি আশার সুযোগ যাদের হয়েছে, তারা নিশ্চয়ই অকপটে স্বীকার করবেন, উনার উপস্থিতি, ব্যক্তিগত বা সামাজিক কর্ম কান্ডে সমূহের মধ্যে সাহস যোগাতো। কারণ উনার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ছিল উনার কাছে যেকেউ সহযোগিতা চাইলে তিনি নিরদ্বিধায় এগিয়ে আসতেন। সহযোগিতার সময় রাতদিন, বন্ধু, দুশমন চিন্তা করতেন না।হিরণ দাদা আমার বাবা মায়ের খুবই স্নেহের পাত্র ছিলেন। মা উনাকে যেকোনো সমস্যায় কাছে পেতেন। আমার মায়ের মৃত্যুর সপ্তাহ খানিক আগে কেমোথেরাপির দূর্বিষহ কষ্টে মা যখন মানষিক ভারসাম্যহীন অবস্থা তখন বলতেন "হিরণকে দেখে আনতে! অনেক মানুষ এসেছে! জানালা গুলো খুলে দিতে!" দাদা আমার মায়ের মনোবলের অংশ ছিলো। দাদার উপস্থিতি মাকে সাহস যোগাতো।বৃহত্তর সার্থ চিন্তা জন্য দরকার মুক্তচিন্তার মানষিকতা। আর এটি খুবই কঠিন কাজ। ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র সার্থ পরিহার করলেই এ কাজ অনেকটা সহজ হবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
Make sure you enter the(*)required information