আসল হ্যাকার
লেখক: ছাইফুল হুদা ছিদ্দিকী
আকমল সাহেব একটা বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন, সহজ সরল জীবন যাপন করেন, মানুষ কে সহজে বিশ্বাস করেন কারো অনুরোধে না করেন না।গ্রাম থেকে রুগী আসলে যথাসাধ্য সহযোগীতা করেন।এই জীবনে অনেকের কাছে ঠকেছেন, এবারে ভিন্ন রকম এক বিপদের সম্মুখীন হলেন, উনার পাশের বাসায় নতুন এসেছে এক পরিবার , ঐ পরিবারের মেঝো ছেলের কয়েকদিন হলো পরিচয় হয়েছে । আলাপ পরিচয়ে ঘনিষ্ট হয়ে উনাকে ফেসবুকে একটা একাউন্ট খুলে দিলেন । খুব ভালোই চলছিল ফেসবুকে অনেক পুরাতন বন্ধু বান্ধব এর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে নানান ছবি, কথা আর লাইক ও মন্তব্য সব মিলিয়ে আকমল সাহেব ফেসবুকে বেশি বেশি সময় কাটাতে লেগে গেলেন, ইতিমধ্যে পাশের বাড়ির আলীম সাহেব ওর পরিচিত একজনকে উনাদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছেন, কিন্তু তেমন বেশী টাকা পয়সা আনেনি , আকমল সাহেব নিজের পকেটের টাকা খরচ করে ঐ লোকের চিকিৎসা ও যাবতীয় সেবা প্রদান করেন।লোকটি যাওয়ার সময় বলে গেলেন আমি বাড়ীতে গিয়ে আপনার টাকা পাঠিয়ে দেবো। দুদিন পরে উনি আকমল সাহেবের পাওনা সব টাকা পাঠিয়ে দিলেন বিকাশের মাধ্যমে। টাকা পেয়ে আকমল সাহেব খুব খুশী পাশের বাসার ছেলেটাকে বললো দুনিয়াতে এখনো ভালো মানুষ আছে। ছেলেটি আকমল সাহেবকে বললো চাচা আমার কিছু টাকার দরকার যদি হাওলাত দেন আপনাকে দুএকদিনের মাঝে ফেরৎ দিতে পারবো।আকমল সাহেেব এই মাত্র পাওয়া টাকা থেকে উনাকে পাচঁ হাজার টাকা হাওলাত হিসেবে দিয়ে দিলো , তারপর ঘটনার শুরু দু দিন পরে ছেলেটি আকমল সাহেবকে একটা ফেসবুকে মেসেজ দিলো চাচা আপনি কদমতলীতে অমুকের কাছে গিয়ে চাইলে আপনাকে দশ হাজার টাকা দেবে ঐখান থেকে আপনার পাওনা পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে বাকিটা আমাকে রাত্রে বাসায় দিয়েন, আকমল সাহেবের পারিবারিক কাজে জরুরি টাকা দরকার ছিল, উনি তাড়াতাড়ি কদমতলীর সেই ঠিকানা অনুযায়ী লোকটির কাছে গিয়ে বললো আমাকে একজন পাঠিয়েছে আপনার কাছ থেকে দশ হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলেছেন, কিছু বুঝে উঠার আগে পাশে থাকা দুজন পুলিশ আকমল সাহেবকে ধরে বললো,থানায় চলেন আপনাকে দশ হাজার টাকা দেয়া হবে, আকমল সাহেব উনাদের কে বলতে চাইলো কেন থানায় যাবো, আমাকে অমুকে পাঠিয়েছে আমার পাওনা টাকা নেওয়ার জন্য, পুলিশ অফিসার বললো কতদিন ধরে এই ফাঁকিবাজি ব্যবসা করছেন আপনাকে থানায় যেতেই হবে, যেতে যেতে আকমল সাহেব বললেন আমি কোন ফাঁকিবাজি ব্যবসা করিনা , আমি অমুক হাসপাতলের হিসাব বিভাগে চাকরি করি. পুলিশ অফিসার ধমক দিয়ে বললেন আর মিথ্যা কথা বলবেন না , আপনি যার কাছে টাকা নিতে এসেছেন উনার বন্ধুর ফেসবুক একাউন্ট কে বা করা হ্যাক করেছে, সকাল থেকে ওর সব ফেইসবুক ফ্রেইন্ড এর কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে এই খবর নিয়ে উনার বন্ধু থানায় জিডি করেছেন এবং আমাদের খবর দিয়েছেন এই দোকানে একজন আসছেন হ্যাকারের দাবী অনুযায়ী টাকা নিতে তাই আমরা ওৎ পেতে ছিলাম ওকে ধরার জন্য। আকমল সাহেব রাগে দুঃখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন, এবং পুলিশ অফিসার কে পুরো ঘটনা বিস্তারিত বললেন, ঠিক আছে থানায় যাওয়ার আগে চলুন আমার বাড়িতে আমি আপনাদের আসল হ্যাকারকে ধরিয়ে দেবো।
Make sure you enter the(*)required information