চট্টগ্রাম ইপিজেড এ আমি কোরিয়ান মালিকানাধীন কোম্পানি কাংবুক কোম্পানি বিডি লিমিটেড এ প্রথম চাকরি শুরু করি ১৯৯২ সনে। এই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান জনাব বং ইয়ং লি ছিলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত উচ্চ পর্যায়ের সৈনিক। উনার সব নিয়ম কানুন ছিলো সেনাবাহিনীর আদলে।আমার একটা গুরুত্ব পূর্ণ কাজ ছিলো,সকালে কাজ শুরু করার আগে শ্রমিকদের উদ্দেশ্য উনার কোরিয়া এবং জাপানি ভাষার বক্তৃতা বাংলা ভাষায় শ্রমিকদের বলা। আমাদের কোম্পানির জি এম ছিলেন মিস কাং । উনি ইংরেজীতে চেয়ারম্যান এর বক্তৃতা বলতেন আর আমি সেখান থেকে বাংলায় অনুবাদ করে বলতাম।প্রতিদিন সকালে উনার একটা কমন বক্তৃতা থাকতো। এবং প্রতিটি কথা খুব ইতিবাচক এবং অনুপ্রেরণামূলক ছিলো। আমি যখন এই কোম্পানিতে যোগদান করি তখন উৎপাদন এবং রপ্তানি হতো চামড়ার হাত মৌজা। জাপান থেকে কাঁচা চামড়া আমদানি করে জাপানেই রপ্তানি হতো এই হাত মোজা ওয়ার্কিং গ্লোব । পরবর্তীতে এই কোম্পানি পোষাক শিল্প উৎপাদন ও রপ্তানি করা শুরু করে।বিশেষ করে জ্যাকেট উৎপাদন ও রপ্তানি করে আসছে আজ অবধি। চেয়ারম্যান মহোদয়ের বক্তৃতার কথা বলছিলাম। উনি বলতেন মানুষ চাইলে, মনোযোগী হলে সব কাজ করতে পারে। এই জন্য প্রয়োজন সদিচ্ছা আর একাগ্রতা । কোন কাজকে ঘৃণা না করে ,নিজের মতোন করে করতে হবে। তখন মহিলা শ্রমিকদের বেতন ছিলো মাসে সর্ব সাকুল্যে চার থেকে ছয়শত। দুপুরের খাবার এবং গাড়ি সুবিধা ছিলো। উনার একটা বক্তব্য ছিলো এরকম, ইউরোপ আমেরিকার লোক যদি চাঁদের দেশে যাওয়ার জন্য নিখুঁত ভাবে রকেট বানাতে পারে। কিংবা কোরিয়া জাপান নিখুঁত ভাবে গাড়ী তৈরি করতে পারে। তোমরা বাংগালিরা একটা স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সামান্য পোষাক কেন নিখুঁত ভাবে তৈরি করতে পারবেনা। তোমরা চেষ্টা করো দেখবা এই পোষাক খাত তোমাদের দেশকে অনেক মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা এনে দেবে। তোমরা যদি সফল হও , তোমাদের দেশ বিশ্বের এক নম্বর পোষাক রপ্তানি কারক দেশ হিসেবে এই পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।
চলবে----
Make sure you enter the(*)required information