প্রাপকঃ জান্নাতবাসী মরহুম বশির আহমদ ( প্রকাশ নাঙ্গল বশির)আমার প্রিয় 'বশির হাক্কু' কেমন আছেন? আমার বিশ্বাস আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী থেকে আপনি বাদ পড়েননি। কারণ আপনি আল্লাহর সর্বোচ্চ সৃষ্টি মানবকূলের মধ্যে যারা হত দরিদ্র তাদের সেবায় এবং অলিকুল সম্রাট হযরত শাহ হাফেজ আহমদ (রাহঃ) প্রকাশ শাহ সাহেব কেবলা এর প্রবর্তিত আল্লাহর পেয়ারা হাবিব তাজেদারে মদিনা মুহাম্মদ মুস্তাফা (সঃ) এর ১৯ দিন ব্যাপী সিরাত মাহফিলে আগতদের মেহমান নেওয়াজীতে আপনার স্বল্প পরিসর জীবনের সময়টুকু এই দুনিয়ায় কাটিয়েছেন। আমার কোন সন্দেহ নাই আপনার প্রচেষ্টা বৃথা যায়নি। পর সংবাদ এই যে, আপনার জন্মস্থান চুনতির মানুষ এখন অনেক স্বয়ং সম্পূর্ণ, স্বাবলম্বী। তবুও আমরা আপনাকে ভুলি নাই। আমি যখন অনেক ছোট্ট ছিলাম সবেমাত্র স্কুলের জীবন শেষ করে কলেজে পড়ি, তখন আপনার কর্ম তৎপরতায় মুখরিত হতো চুনতির প্রতিটি সামাজিক আচার অনুষ্ঠান। নবাগত বাচ্চার আকিকা থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান, বিয়ের সাতদিনের ফিরাফিরি থেকে মৃত্যুর পরবর্তী চারদিনের মেজবান, সব খানেই আপনার প্রয়োজনীতা অবশ্যম্ভাবী হয়ে থাকতোই। তখন চুনতির মানুষের আচার অনুষ্ঠানের ইচ্ছে আকাংখা থাকলেও আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিলো না। হয়তো গুটিকয়েক জনের ছিলো। ধনী গরীব পার্থক্য না করে আপনি সকল অনুষ্ঠানের সম্পৃক্ততায় এগিয়ে আসতেন। আপনি নিজেও আর্থিক অনটনের মধ্যে থাকলেও হত দরিদ্র মানুষের জন্য আপনার স্বচ্ছল বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে পিছু হটতেন না। আপনি বলতেন মনে যদি ভালো কাজ করার মনোবল থাকে সাহায্য চাইতে লজ্জা কিসের।আপনার মনে আছে, যখন চুনতির শাহ সাহেব কেবলা’র একনিষ্ঠ ভক্ত মরহুম ইউসুফ মিয়া চৌধুরী এর মাহফিলের যাবতীয় খরচের ওয়াদা থেকে উনার ছেলে জনাব শাহ মুরাদ সাহেব হঠাৎ সরে গিয়ে, আংশিক খরচের আনজাম দিতে সম্মত হল, তখনখার সময় মাহফিলে সাথে সম্পৃক্ত সকলকে নতুনভাবে ভাবিয়ে তুললো। কিভাবে এতো বিশাল খরচের আনজাম দিবে। সম্পৃক্ত অন্যান্যদের মতো আপনিও কিন্তু মনোবল হারা হননি। আপনি, রুমি ভাই, মুছি ভাই, নছিম ভাই সহ আমাদেরকে নিয়ে নতুন চাঁদা দাতা সৃষ্টি কল্পে নেমে পড়লেন। মাহফিলের তবররুক চুনতি থেকে রান্না করা বড় ডেকচি গাড়িতে করে চট্টগ্রাম শহরে এনে নতুন পুরাতন সকল চাঁদা দাতাদের ঘরে ঘরে বিলি করেছিলেন। সেই ছোট্ট গাড়িতে আপনার সাথে আমিও ছিলাম। তবররুকের গরম, গন্ধ, নন এসি গাড়ি ও বাহিরের সূর্যের তাপে এক দূর্বিষহ ঘ্রাণ। আমি যখন খুব গভীরভাবে নিশ্বাস নিই তা এখনো উপলব্ধি করি। সিগারেটটা বড্ড বেশিই পান করতেন, তাই বলে পুরো এক কার্টন উইলসন! দুই চার বৎসর না যেতেই আপনার হার্টের সমস্যা। শরীরের কথা একবারও চিন্তা না করে মাহফিলের কাজে নিজেকে পুরোপুরি নিঃশেষ করে এ দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। আপনার রেখে যাওয়া ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চা অনেক কষ্টে মানুষ হয়েছে। আরফাত ও আওলাদ আপনার মতো সামাজিক ও সিরাত মাহফিলের কাজে নিজেকে পুরোপুরি সম্পৃক্ত রেখেছে। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন চুনতি ও আশেপাশের আপামর জনসাধারণ এখন অনেক সংঘটিত। আর্ত মানবতার সেবায় ও সিরাত মাহফিলের জন্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এমনকি বিদেশে অবস্থানরত সহ সকলের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন। আপনার মতো আমরাও চুনতির শাহ সাহেব কেবলা (রাহঃ)'র বলে যাওয়া কথার উপর পূর্ণ বিশ্বাস করি। উনি বলতেন আল্লাহর হাবিব (সঃ) এর মাহফিলের কাজে যারাই সম্পৃক্ত থাকবেন তাদের জন্য উনি কোমরবন্ধ করে রসুলল্লাহ (সঃ)’র কাছে সুপারিশ করবেন। আপনি চুনতি সমাজের কঠিনতম আর্থিক অনটনের সময়ে এবং হযরত মরহুম হাফেজ আহমদ (রাহঃ) মুজাদ্দিদে বাণীয়ে সিরাতুন্নবী (সঃ) মাহফিলের কাজে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের অন্যতম ছিলেন। চুনতির ইতিহাসে আপনার নাম যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবে। প্রেরকঃ আপনার আদরের ভাতিজা ইমরাদ।প্রফ রিড়ারঃ ফারিয়া মরিয়াম
Wonderful Person
Make sure you enter the(*)required information