নারী জাগরণের অগ্রদুত দাদী বেগম সুফিয়া কামালকে নিয়ে কিছু লিখার অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন ছিল।হঠাৎ করে বিশিষ্ট সাংবাদিক ডেইজী মওদুদের অনুরোধ এটা উসকিয়ে দিল। তাই কাচা হাতের কিছু লিখার ক্ষুদ্র প্রয়াস।বলাবাহুল্য দাদীর প্রথম বিয়ে হয়েছিল জনাব সৈয়দ নেহালের সাথে( ১৯২২--১৯৩২)।প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর আমার দাদা কামাল উদ্দিন খাঁনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কামাল দাদা আমার দুই দিক থেকে আত্মীয়। আমার আব্বার চাচা এবং আমার নানির আপন খালাতে ভাই। চুনতি ডেপুটি বাড়ীর সম্ভ্রান্ত পরিবারের পুত্রবধু দাদার সান্নিধ্যে এসে উনার সাহিত্য চর্চায় কোন ছেদ পড়েনি। চুনতি আসলে নানির আত্মীয় তাঁর বাড়ীতেই উঠতেন। আমার নানা ধনাড্য ব্যক্তি ছিলেন এবং সাবেক পাকিস্তান আমলে ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সমাজিক কর্মকান্ডে সুফিয়া কামালের ভুমিকা ছিল অতুলনীয়। দাদি চুনতিতে মহিলা সমিতি গঠন করে সেলাই মেশিন দেওয়া এবং ঘরে ঘরে বেগম পত্রিকা দিয়ে শিক্ষার আলো ছাড়িয়েছেন।ধানমন্ডিতে একসময় আমার জ্যাঠা আব্বা উনার প্রতিবেশী ছিলেন। আমার আব্বা এবং জ্যাঠা কবিতা লিখে উনার কাছে নিয়ে যেতেন। আমার আব্বা নিজে গান লিখে নিজেই সুর দিতেন। উনি কৌতুক করে বলতেন তোরা আমার চেয়ে অনেক বড় কবি হবি।এখন যে সীরাত মাঠ আছে এটা একসময় লিচু- আম গাছ দিয়ে ঘেরা বিরাট অরণ্য ছিল। দাদি শুকনো লিচু- আম পাতার স্তুপ দেখে অভিভুত হয়ে বললেন, তোমরা সব পাতা কুড়াও, চুলা করো পায়েশ রান্না করো। দাদি অসম্ভব ধার্মিক ছিলেন এবং তা পালন করতেন নীরবে নিভৃতে। শ্বাসকষ্টের ঔষধ হিসাবে সবাইকে দারচিনি দিতেন। সর্বশেষ যখন চুনতি আসেন তখন ছেলে এবং ছেলের বউসহ পুরো পরিবার সাথে ছিল। আমরা বড়- ছোট সবাই তাঁর পিছনে পিছনে ঘুরেছি এবং ছবি তুলেছি। আমরা ছোটদের অনেক অনুরোধের পর কাঁপা কাঁপা হাতে দুইটা কবিতাও লিখে দিয়েছিলেন।আল্লাহ আমাদের দাদীকে জান্নাত দান করুক
Make sure you enter the(*)required information