মনে পড়ছে শ্রদ্ধেয় আমির আলী স্যারকে। গ্রামের প্রতিটি ঘরের বাতি নেভানো ।বাইরে জোনাকী পোকার আলোতে পুরো এলাকা চিক চিক করছে । পশু পাখি মানুষ সব প্রানী গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন । পাড়ার কুকুরটিও দু চারটে ডাক দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে । তেতুল রংয়ের কালো কুচকুচে তিন পায়া টেবিলে রাখা ঘড়িটির সোনালী রংয়ের ডায়াল সময়ের কাটা আর সময়ের ঘরে লেখা ১ থেকে ১২ লেখা গুলো অংকগুলো বিশেষ রংয়ের কারণে অন্ধকারেও সহজে দেখা যাচ্ছে সময় দেখলাম রাত ১০টা ১৫ মিনিট । এমনি সময় আমাদের ঘরের দরজায় হালকা টুকটুক শব্দ হলো আর কে যেন ডাকছে ছাইফুল ও ছাইফুল তোমরাকি ঘুমিয়ে পড়েছো ? হঠাৎ সামনের বড়ো দরজায় টুকটুক আওয়াজ শুনে আমার মা এবং ভাইবোনেরা সবাই হতচকিত । আমি পরিস্কার শুনলাম এবং বুঝতে দেরী হলোনা এটা আমাদের রসায়ন বিষয়ের শ্রদ্ধেয় আমির আলী স্যার এর ডাক এবং ভয় পেলাম এতো রাতে স্যার আমাদের ঘরের দরজায় । আমি সাথে সাথে জবাব দিলাম জী স্যার আসছি । আম্মু ঘুম থেকে উঠে দিয়াশলাই জ্বালিয়ে কেরোসিনের চেরাগ বাতি জ্বালালো এবং আমার হাতে দিলো । বললো আগে দরজা খুলে তোমার স্যারকে ড্রইং রুমে বসতে দাও । এরিমধ্যে আমাদের ঘরের সবাই ঘুম থেকে উঠে এলো । হ্যারিকেন জ্বালানো হলো । স্যারকে দরজা খোলে ভিতরে আসতে বলার সাথে বললো " আমার হঠাৎ মনে হয়েছে আজ ক্লাসে যে বিষয়টি পড়ানো হয়েছে তুমি সেটা ভালো করে বুঝতে পারোনি তাই তোমাকে ঐ পড়াটা আবার একটু শিখিয়ে দিতে আসলাম ।শিক্ষার আলোয় আলোকিত হলেও তখনো আমাদের পুরো গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়নি । এবং আমরা রাত দশটার কিংবা তারও আগে সবাই ঘুমিয়ে যেতাম কারণ সকালে সূর্য উঠার আগে জেগে উঠতে হবে । রসায়ন বিদ্যা বইটি খুজে এনে স্যার এর সামনে বসে পড়লাম ।ঐ দিনের ক্লাসের পাঠ্য বিষয়টি এই গভীর রাতে স্যার আমাকে আবার বুঝিয়ে পড়িয়ে ভালো করে শিখিয়ে দিলো । শুধু বিশেষ একদিন নয় প্রতিদিনই হোক শিক্ষক দিবস ।
Make sure you enter the(*)required information