গুলশান হামলার পর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জঙ্গিগোষ্ঠীর অবস্থানের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে। নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না আসলে জঙ্গিরা ঠিক কোথায় আছে। হয়ত সারাদেশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।দেশের সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িতদের অধিকাংশই কোন না কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র বা সাবেক ছাত্র। অর্থাৎ শিক্ষিত সমাজের একটি অংশই এতে জড়িত।এর কারণটা কী?হয়ত, নৈতিক শিক্ষার অভাবঅথবা, শিক্ষার মানের অধোঃগতিঅথবা, ধর্মীয় উগ্রতাঅথবা, সামাজিক দায়বদ্ধতার ত্রুটিঅথবা, পারিবারিক বন্ধনে শিথিলতাঅথবা, শাসনতান্ত্রিক অবিচারঅথবা, অন্যান্য কোন কারণকারণ যেটাই হোক না কেন, আমরা চুনতিবাসীরা কি সারাদেশ থেকে ব্যতিক্রম? আমরা কি নিশ্চিত করে বলতে পারব যে, আমাদের এলাকায় জঙ্গির অবস্থান নেই?আমার প্রশ্নটা শুনে চুনতিবাসীরা মনোক্ষুন্ন হতে পারেন বা বিব্রত হতে পারেন। ভুল বুঝার কোন কারণ নেই। জঙ্গির অবস্থান বলতে আমি জঙ্গির জন্মস্থান বুঝাচ্ছি না। এবং চুনতির কেউ জঙ্গি সংগঠনে জড়িত বুঝাচ্ছি না।আপনারা নিশ্চয় জানেন, আমাদের এলাকাটা শিক্ষা- দীক্ষার প্রাণকেন্দ্র। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন মন-মানসিকতার লোক শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যে এখানে অবস্থান করেন। তাদের কিছু অংশ হাউজ টিউটর হিসেবে আমাদের সন্তানদের পড়াশুনায় সাহায্য করছেন।আমার বক্তব্যের মূল পয়েন্টটা হল, অভিভাবক হিসাবে আমরা আমাদের সন্তানদের সার্বিক খোঁজ খবর রাখছি কি? গোপনে আমাদের সন্তানরা কোন বিপথগামীদের দ্বারা মোটিভেটেড হচ্ছে না তো?ছাত্রদের উপর হাউজ টিউটর/ লজিং টীচার এর প্রভাব থাকেই। দেশের একটা বিশেষ সংগঠনের সাথে আমাদের সন্তানদের সংযুক্তিতে এদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।আপনারা হয়ত কেউ কেউ ভাবছেন আমার দুশ্চিন্তা অমূলক। কারণ, চুনতিবাসীর শান্তিপ্রিয়তার খ্যাতি দীর্ঘকালের।মনে রাখবেনঃ১) জঙিরা অভয়াশ্রম হিসেবে শান্তপ্রিয় অঞ্চলকে বেছে নেয় নিজেদের নিরাপত্তা ও শক্তিবৃদ্ধির জন্য।২) বছর কয়েক আগে দেশব্যাপী জ্বালাও-পুড়াও কর্মসূচীর কিছু কিছু ঘটনা আমাদের এলাকার আশেপাশে ঘটেছিল। আইন শৃংখলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এসব কর্মকান্ডে জড়িতদের অধিকাংশই এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বহিরাগত ছাত্র।দয়া করে, অভিভাবকগন সচেতন হোন। সন্তানের সার্বিক খোঁজ-খবর নিন। আপনার আশেপাশে অবস্থানকারী ব্যক্তির গতিবিধি আমলে নিন। এলাকার ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রাখার জন্য সকলের সচেতনতা জরুরি। একজনও যদি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত বলে সন্দেহ হয়, সে বহিরাগত হলেও এবং প্রকৃতপক্ষে জঙ্গি বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত না হলেও এলাকার সুনাম ক্ষুণ্ন হয়। কারণ, বর্তমান সসময়ে জঙ্গি একটা জীবন্ত এবং স্পর্শকাতর বিষয়। কেবল সন্দেহের ভিত্তিতেও সামান্য একটা ঘটনাকে রসিয়ে রটিয়ে দেয়ার লোকের অভাব নেই।আসুন আমরা প্রত্যেকে নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হই। আমাদের পরিবার-সমাজকে সচেতন করি। বিপথগামীতা থেকে আমাদের সমাজ ও পরিবারকে রক্ষা করি। সুন্দর ও সৌহার্দ্যেরপূর্ণ এবং দেশপ্রেমের আদর্শে উজ্জ্বীবিত সম্প্রদায় হিসেবে আমাদের এলাকার ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ন রাখি।
Make sure you enter the(*)required information