বাতাসে ভাষার গন্ধ ধমনীতে শুধু শব্দের তোড়... আমার ভাইয়ের শার্ট ঘামে ভিজে আছে মিছিলের ভীড়ে; রাজপথে থক থক রক্তের মতো বাংলা অক্ষর লুটোপুটি খায়... চাষ হবে...একদিন...মাটির গভীর থেকে... আমি মা’য়ের মুখচ্ছবি নিয়ে আকাশ বানাবো, যে আকাশে থোকা থোকা লন্ঠণের মতো ঝুলবে আমার অক্ষরগুলো- আমি বাবার হাত ধরে আকাশের নীচে মাত্রার মতো দিগন্তের রেখা দেবো তার ভেতর আমার বর্ণমালা দিয়ে সাজানো নদী-গাছ-চারুলতা-ফসলি ভুবন আমার বোনের শাড়ির পাড় আঁচলে কথামালার কাব্য লেখা আছে, জলতরঙ্গে স্রোতের বুকে পদ্মের মতো ফুটে থাকে মাত্রাকুঁড়ি-ছন্দপাঁপড়ি-বর্ণমালা ফুল দাঁড়িয়ে আছে দুয়ারে ফাল্গুনি- বুলি’র জন্ম দেয়ার প্রসব কাতরে কাঁপছে শব্দ-অক্ষরের অনুঘটকে ডিম্বের অস্থির উল্লম্ফন কাতর মিনতি-ব্যাকুল প্রণয় গর্ভের ফুল বিস্ফোরিত হয়ে ছড়াবে শহরে- গ্রামে-মফস্বলে-হাটে বাজারে অলিতে গলিতে ভিখিরির থালায়-রিক্সার প্যাডল’এ-মজুরের কোঁচায়- পতিতার কপালের লালটিপে-সেলাই দিদির হাতের কারুতে খোকা-খুকির বাঁশি-ঝুনি-হাসিতে... গলি-ঘুপচির অন্ধকারেও ছড়াবে বর্ণরেণু বাতাসে বাতাসে ক্লাব পাঁড়ার সামনে বারান্দায় আর পেছনের আঙ্গিনাতে ওঠতি বয়সের গোপন ধোঁয়ায়-কিশোরের নতুন দিনের জয়গানে আমের শাখায় এখন মূকুল-মূকুলী থরে থরে টিনের চালে গড়িয়ে পড়ে বর্ণমালার মতো- ক্যাম্পাস-ক্লাস্রুম-আর দিনবিকেলে বালিকা পাঠপিঠগুলির আড়ালে আবড়ালে উঁকিঝুকি আলাপন-কানাইয়ের বৃন্দাবন আর এসবের কথোপকথনে প্রথম হাত ধরায় যে কথা মুখে না এসে বুকের গভীরে প্রচন্ড হাতুড়ির ঘাত মারে-যে ঠোঁটের থরো থরো কাঁপুনিতে মুক্তো-ঘামের-বিচির মতো বর্ণমালা কাঁপে; নিঃশব্দ শব্দের কথায় এইসব; ছেলেটির বুকে আর মেয়েটির ঠোঁটে... যাচ্ছে উড়ে দালানের ভিড়ে ‘বুলি’র ডাক-হাঁক-চিৎকার গানের সুর তার খেলার ছড়া মন গড়া-কত বুড়ি হলিরে ‘বুলি’ তুই...! তার কার্ণিশ খোপের ঘুলঘুলিতে বাসা বেঁধে ডিম দিয়েছে চড়ুই বাবুই’ও তার গাছের তালপাতায় বেঁধেছে ঝুল বাসা সবে মিলে একসাথে অক্ষরে শব্দে গল্প গাঁথে- কথা মেলায়-স্বপ্ন বুনে-বান আনে-স্বাগতম মিছিল সাজায়; গদ্যে-গল্পে-নাটকে ও থিয়েটারে আড্ডা জমে বন্ধুর আহবানে আমাদের নগর জীবনে-গ্রামের পরিসরে স্বপ্ন আকাশনীলা হয়; উচ্ছাসে ভাসে রাস্তা-ফুটপাথে ভাঁজা ভুঁজির গন্ধ গরম তেলের মাঝে ঢালছে কি যেনো! ক্ক্ক্র্র্র্র্র্...শিশিশিনননন্ন্ন্!!! তারপর আছে এইয়্যইইই জিল্পি গারামমম্ম্ম্ম্... পাকোঁড়াআআআ... লইয়া যান ভাই টিক্কা-জালি- ভিত্রে সিট খালি... তেঁতুলের চাট...ইস্স্স্ জিভে জল আহ্হ্হ্ তারপর দেখি জলপাই সর্ষে ঝাল আমসত্বের চাদর বিছানো, চালতার চাঁদ মুখ হাসি লোভের ফাঁদে পড়ে ধর্য্যের গলায় ফাঁসি; এখানে নিরন্তর মুখের লালাতেও ঝরে বর্ণমালা বুকের ভিতর অস্থির উত্তেজনায়-প্রথম প্রণয় স্পর্শের কাঁপুনিতে সৃষ্টি হয় অনবদ্য সব বর্ণমালার শব্দ কথামালার অক্ষর- ‘’ভালবাসতে না দিলে ছিনিয়ে নিয়ে যাবো’’ এই কথা জেনেও প্রেয়সি ঘাড় নেড়ে প্রেমিক যুবা’কে অস্বিকৃতি জানায় শুধু একবার যেনো তাকে উদ্দাম ভালবাসতে ছিনিয়ে নিয়ে যায়... সেইতো প্রেমের অচিন্তপূরীতে সাজায় অক্ষরের বাঁসর শব্দের সঙ্গম বর্ণমালার বিছানায় ভাষার অস্তিত্ব নব্য প্রিয়ার চাহনিতে আর চুলের বাঁধনে বুকের কাঁপুনি আর তরুনের হাত পায়ের পেশিতে রাজপথ ভাঙ্গে শব্দ অক্ষরের তীব্র আঘাতে আমার একুশ; আমার ভাষা; আমার শব্দ... বাতাসে ভাষার গন্ধ ধমনীতে শব্দের তোড় একুশের দাবি নিয়ে এসেছি আবার... ------------------------------------------------ আদনান সাকিব ২০-২২ মাঘ ১৪১৮ ঢাকা
Make sure you enter the(*)required information