চুনতির আদি পুরুষদের (ফারুকী বংশের প্রাণপুরুষ) অন্যতম প্রধান ব্যক্তি হযরত ইব্রাহীম খন্দকারের প্রথম বসত ভিটা ছিলো ইটকুলা মুড়ায়। ইব্রাহিম খন্দকার ছিলেন মোগল বাদশাহদের গৃহশিক্ষক। চুনতি সিকদার পাড়ায় রাশেদুল হক টিপু জেঠাদের বাড়ির পেছনের পুকুর পাড়ে অন্তীম শয়নে শায়িত আছেন। কথিত আছে পুকুরটি তিন কোনা বিশিষ্ট, কারণ এই পুকুরটি খননকালের এক পর্যায়ে ইব্রাহিম খন্দকারের পা কেটে রক্ত বের হলে পুকুরটির খননকাজ অসমাপ্ত থেকে গিয়েছিলো। ইব্রাহিম খন্দকারের কবরের পাশে বহুবার মজ্জুব অবস্থায় মরহুম মাওলানা মহীউদ্দীন (ইউসুফ মৌলবী পাড়া) ধ্যানমগ্ন হয়েছিলেন। পরবর্তীতে এই ইটকুলা মুড়া চুনতির কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে পরিণত হয়। চুনতির অগণিত আউলিয়া,বুজুর্গরা এই ময়দানে ঈদের নামায আদায় করেছেন। এই ময়দানের একটু দক্ষিণে তরীকতের বাদশাহ খ্যাত হযরত আজমগড়ী হুজুরের প্রথম খলিফা মাওলানা ফজলুল হক রহ এর পবিত্র কবর মোবারক। মাওলানা ফজলুল হক রহ ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন উনার কবরের পাশে আরও ৫ জন খলিফার কবর হবে, বস্তবিকই তা হয়েছে, এখানে শুয়ে আছেন মাওলানা নজির আহমদ রহ, মাওলানা মুনির আহমদ রহ, তফজ্জলুর রহমান রহ, জিয়াউল হক রহ এবং সব শেষে মাওলানা হাবীব আহমদকে রহ এখানে শায়িত করা হয়। তার সামান্য দক্ষিণে শায়িত আছেন বিখ্যাত ন্যায় বিচারক হযরত শুকুর আলী মুন্সেফ রহ। এই ময়দানের একটু উত্তরপাশে শায়িত আছেন ছিদ্দীকী বংশের প্রাণপুরুষ পুরুষদের অন্যতম মাওলানা আব্দুর রহমান মিয়াজি রহ, যিনি বড় মাওলান আব্দুল হাকিম সিদ্দিকী রহ এবং নাসির উদ্দীন ডেপুটির রহ পিতা। মাওলানা আব্দুর রহমান মিয়াজির সামান্য উত্তরে শায়িত আছেন প্রখ্যাত মুফতি ইব্রাহিম রহ। উনার কিছু উত্তরে পানিফল গাছের নিচে শায়িত আছেন প্রখ্যাত দরবেশ হযরত আব্দুল্লাহ রহ। তাছাড়া চুনতির সাবেক খলিফা মাওলানা ওবাইদুল্লাহ রহ থেকে পাওয়া তথ্যমতে এই ময়দানে একসময় ধর্মীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিলো এবং এখানে আশেপাশে অসংখ্য শহীদদের কবর রয়েছে। বিশেষ করে তিনি তার পীর সাহেব মাওলানা হাবীব আহমদের বরাত দিয়ে বলেন, এই ময়দানের তেতুল গাছের আশেপাশে বড় মুজাহিদ -শহীদ বুজুর্গ লোকের কবর বিদ্যামান, কিন্ত কোনো চিহ্ন নাই। উনি আরও বলেন ইটকুলা মুড়ায় অনেক উচু একটা আমগাছ ছিলো যেটার আগায় উঠলে কুতুবদিয়া দেখা যেতো। এই মুড়ার নিচে পানির ছোটখাটো নদী ছিলো যেখানে সাম্পান আসতো, কাঠের জাহাজের ধংস্বাবশেষ এখানে পাওয়া গিয়েছিলো। এই ময়দানের সাথে চুনতির অসংখ্য ইতিহাস ঐতিহ্য জড়িত। তাই এই ময়দানে ঈদের নামাযের জামাতের বিষয়টা বাতিল করার ক্ষেত্রে চুনতিবাসির একটু ভেবে দেখার দরকার আছে মনে করি।
Make sure you enter the(*)required information